সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য হাসান আলী ওরফে হাসান মেম্বারের বিরুদ্ধে মাদকাসক্ত হয়ে প্রকাশ্যে সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে মসজিদের এক ইমামকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চাঁরাগাঁও সীমান্ত সড়কের উপর নিজ বাড়ির অদূরে হাসান মেম্বার মসজিদের ইমামকে পেটান।
হাসান উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
শারীরিকভাবে মারধরের শিকার হয়েছেন উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাঁশতলা দারুল হেদায়েত হাফিজুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম এবং মসজিদের ইমাম মাওলানা ওমর ফারুক।
এ ঘটনার আগে একই দিন একটি সালিশ বৈঠকে মাদকাসক্ত হয়ে প্রবেশ ও কথা বলা অবস্থায় ওই ইউপি সদস্যের একটি ভিডিওচিত্র ভাইরাল করেন স্থানীয়রা।
এরপর মসজিদের ইমামকে পেটানোর ঘটনায় বিচার ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী, সাধারণ লোকজন প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করেন।
মারধরের শিকার মসজিদের ইমাম জানান, উপজেলার সীমান্ত এলাকায় কথিত একটি মাজারে করোনাকালীন গান-বাজনার আয়োজন বন্ধে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আমির উদ্দিনের সভাপতিত্বে জঙ্গলবাড়ি মোড়ে সালিশ বৈঠক বসে।
মাদকাসক্ত হয়ে হাসান মেম্বার সালিশে আলোচনা চলাকালীন প্রবেশ করে বেসামাল কথাবার্তা বললে সালিশে থাকা লোকজন তাকে সালিশ বৈঠক থেকে বের করে দেন।
এদিকে সালিশ বৈঠকে থাকা মসজিদের ইমাম মাওলানা ওমর ফারুক ভগ্নিপতিতে সঙ্গে নিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান ও নিজ বাড়ি বাঁশতলায় ফেরার পথে সড়কে মোটরসাইকেল থামান হাসান মেম্বার।
মাওলানা ওমর ফারুক বলেন, মাদকাসক্ত অবস্থায় প্রকাশ্যে সড়কের উপর আমাকে হাসান মেম্বার কিলঘুষি মারতে থাকেন। প্রতিরোধে এগিয়ে আসায় আমার ভগ্নিপতি জালালকেও মারধর করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিলে কিংবা এ ব্যাপারে থানায় মামলা করতে গেলে হেফাজত নেতা বানিয়ে উল্টো আমাকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন ইউপি সদস্যের লোকজন।
উপজেলার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির উদ্দিন জানান, এ ধরনের ঘটনায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এবং একজন অরাজনৈতিক নিরীহ ইমামকে মাদকাসক্ত হয়ে মারধর করায় এলাকার লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সেলিম ইকবাল ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ প্রচার সম্পাদক আইনাল হক বলেন, এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার পর মাদকাসক্ত হাসান আলীকে দলীয় নেতাকর্মীরা দল থেকে বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
অভিযুক্ত হাসান মেম্বার বলেন, আমি ইমামকে মারধর করিনি। জামায়াত হেফাজতের বৈঠক ছিল, আমি ওখান থেকে চলে আসি; আমাকে কেউ বের করে দেয়নি।
ভিডিওচিত্র ও মাদকাসক্ত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার প্রতিপক্ষের লোকজন এটা ছড়িয়েছে,আমি মাদকাসক্ত নই।
Leave a Reply