মুসলিমবহুল মালেরকোটলাকে পাঞ্জাবের ২৩তম জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ঈদের দিনে খুশির এই ঘোষণা দেন।
গত শুক্রবার ঈদের দিন অমরিন্দর সিং ঘোষণা করেন, এই ঐতিহাসিক দিনে আমি মালেরকোটলার জন্য কিছু করতে পেরে গর্বিত। ঐতিহাসিকভাবেই সারা বিশ্বের শিখ সম্প্রদায়ের স্মৃতিতে মালেরকোটলার একটা আলাদা জায়গা আছে, সম্মান আছে।
ঈদের দিনে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে আয়োজিত অনলাইন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন এই জেলায় ৫০০ কোটি টাকা মেডিকেল কলেজ, একটি মহিলা কলেজ, নতুন বাস স্ট্যান্ড আর একটি মহিলা থানা বানানো হবে।
পাঞ্জাব ক্যাবিনেটের একমাত্র মুসলিম সদস্য রাজিয়া সুলতানাও জানান, আলাদা মেডিকেল কলেজ, মহিলা কলেজ, মহিলা থানা ও বাসস্ট্যান্ড স্থাপনের ঘোষণা করে সরকার মালেরকোটলাকে ঈদের উপহারে ভরিয়ে দিয়েছে।
মুসলিম সংখ্যাঘরিষ্ঠ এলাকা মালেরকোটলা এতদিন সঙ্গরূপ জেলার অধীনে ছিল। এটিকে নতুন জেলা ঘোষণা করায় মুসলিম, শিখসহ ওই অঞ্চলের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও আপত্তি তুলেছেন উত্তরপ্রদেশের হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
পাঞ্জাব সরকারের এই ঘোষণার পরদিনই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ টুইট করে বলেন, বিশ্বাস বা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো ধরনের বিভেদ করা ভারতীয় সংবিধানের মূল আদর্শের বিপরীত।
‘কাজেই মালেরকোটলাতে আলাদা জেলা তৈরি করা কংগ্রেসের বিভাজনকারী নীতিরই পরিচায়ক’ বলে মন্তব্য করেন উগ্র হিন্দুত্ববাদী এ নেতা। তবে মালেরকোটলার শিখ ও মুসলিমরা তার এই কথার বিরোধিতা করেছেন।
তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বেশ কয়েকশো বছর ধরে এই শহরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে চমৎকার সম্প্রীতির একটা পরম্পরা আছে।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ খলিল বিবিসিকে জানান, সাতচল্লিশে দেশভাগের সময়ও মালেরকোটলায় কোনো দাঙ্গাহাঙ্গামা পর্যন্ত হয়নি।
তিনি বলেন, শিখ ও মুসলিমরা তখন পরস্পরের মধ্যে সম্পত্তি বিনিময় করে এপার-ওপার করেছেন, কিন্তু শহরে সাম্প্রদায়িকতার কোনও আঁচ পর্যন্ত লাগেনি।
পৃথক মালেরকোটলা জেলার গঠনকে তাই শিখ ও মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবেই দেখছে পাঞ্জাব।
পাঞ্জাবের বিজেপি এমপি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোমপ্রকাশও রোববার আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে গিয়ে মালেরকোটলা জেলার গঠনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
Leave a Reply