আপনি কি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন? সর্বনাশ! তাহলে কমে যেতেই পারে আপনার স্পার্ম কাউন্ট। নষ্ট হতে পারে শুক্রাণুর কর্মক্ষমতা। এমনকি সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতায় হ্রাস পেতে পারে অচিরেই। মুখের কথা নয়, একদল গবেষকের করা সমীক্ষায় এমনই আশঙ্কার ফল হাতেনাতে পেয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে করোনা পৃথিবীতে থাবা বসাতে শুরু করে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিক থেকে সেই মারণ ভাইরাস থাবা বসাতে শুরু করে ভারতেও। এরপরই সংক্রমণে রাশ টানতে পৃথিবীর একাধিক দেশে লকডাউন করা হয় দীর্ঘ সময়ের জন্য। কিন্তু কোনওভাবেই রাশ টানা যায়নি সংক্রমণে। বরং প্রতিদিনই সংক্রমণের সংখ্যার রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২.২ মিলিয়ন মানুষের প্রাণ নিয়েছে মারণ করোনা। তবে খানিক স্বস্তি অন্তত ফিরেছে। কারণ করোনা ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র মিলেছে। প্রথম পর্যায়ের ভ্যাক্সিনেশন চলছে পুরোদমে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রথম সারির নেতৃত্ব।
প্রথমাবস্থায় করোনা শুধুমাত্র শ্বাসতন্ত্রের ওপরে প্রভাব বিস্তার করে ভাবা হলে, পরে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয় গবেষকদের নয়া নয়া গবেষণায়। সেক্ষেত্রে কখনও দেখা গিয়েছে করোনার জেরে জিভে আলসার হচ্ছে, আবার কখনও সারা শরীরে র্যাশের মতো গোটা দেখা দিচ্ছে। তবে এবারে এক্কেবারে নয়া এক আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন একদল গবেষক। তাঁদের দাবি, করোনা হলে পুরুষদের শুক্রাণুর কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা সম্মুখীন হবেন একজন পুরুষ। রিপ্রোডাকশন শীর্ষক জার্নালে এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে শুক্রিবার।
গবেষণায় উঠে এসেছে করোনা হলে একজন পুরুষের স্পার্ম কাউন্ট একধাক্কায় অনেকটা কমে যায়। করোনা ভাইরাস নষ্ট করে দিচ্ছে শুক্রাণুর কর্মক্ষমতা। এমনকি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য একজন পুরুষের শরীর থেকে যে সমস্ত হরমোন নিঃসরণ হওয়ার কথা, তার উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে নানা সমস্যা। জানা গিয়েছে, ১০ দিনের ব্যবধানে ৬০ দিন ধরে ৮৪ জন পুরুষের ওপর এই সমীক্ষা চালান হয়। পাশাপাশি ১৫ জন সুস্থ অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত হননি এমন পুরুষের শুক্রাণুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপরেই দেখা যায় করোনা আক্রান্তদের শরীরে কেমিক্যাল ইমব্যাল্যান্স-সহ একাধিক সমস্যা তৈরি হয়ে গিয়েছে, যা DNA প্রোটিনকে নষ্ট করে দিচ্ছে। তার ফলেই শুক্রাণুর গুণগত মান কমে যাচ্ছে। ফলে ভ্যাকসিন আসায় সংক্রমণের চিন্তা কমলে, ফের নয়া আশঙ্কায় কুঁকড়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
Leave a Reply