কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। বাতাসের গতিবেগ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিভিন্ন নদ নদীতে ৩/৪ ফুট পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ভাংগা বেরিবাধ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ১০টি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। একই অবস্থা ধানখালী ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামে। এছাড়া মহিপুরের নিজামপুর গ্রামের বেবিবাধ টপকে চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওইসব গ্রামের মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, ঘূর্নিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় সাগর পাড়ে বসবাসরত অস্থায়ী বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এছাড়া দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সিপিপি, রেড ক্রিসিন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ ফায়ার সার্ভিসের কমিউনিটি ভলান্টিয়ার টিমের সদস্যরা প্রস্ততি নিয়েছে।আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮০ কি.মি. দক্ষিণ দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে বুধবার ভোর নাগাদ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পোঁছতে পারে।প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ (দুই) নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।ধানখালী ইউনিয় পরিষদইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার বেলন, দেবপুর বেরিবাধ ভেঙ্গে দেবপুর, লোন্দা, ধানখালী ও পাঁচজুনিয়া গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছে। এছাড়া নিশান বাড়িয় বেরিবাধ টপকে পানি প্রবেশ করেছে।লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ারের ভাংগা বেরিবাধ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারে পানি প্রবেশ করে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পনিবন্ধী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে পুকুর, মাছের ঘের সহ ফসলি জমি। অনেকের বাড়িতে উনুনে হাড়ি ওঠেনি। এছাড়া নতুন করে আরো বেরিবাধ ভাংগার আশংকা দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় ১৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র, নবনির্মিত ২টি মুজিব কিল্লা ও ১৫টি মেডিকেল টিম ও ১৩ হাজার পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে শুকনা খাবারের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে পাঠানো হয়েছে। শিশু খাদ্যের জন্য ১ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য আরো ১ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে।
Leave a Reply