কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ত্রিশাল উপজেলার পূর্ব পাঁচপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক আবুল কালাম শেখের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়ার রেকর্ড সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইসবুকে) ভাইরালের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান মাহমুদ। অপরদিকে সচেতন মহলের ব্যানারে একইদিন কিছু লোক ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপি, এমপি পুত্র ও দুর্নীতিবাজদের বিচার দাবীতে মানববন্ধন করেছেন।
সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমপি পুত্র হাসান মাহমুদ জানান, সাম্প্রতিককালে একটি কুচক্রি ও স্বার্থান্বেষী মহল ব্যক্তি স্বার্থ ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে তাকে, তার পিতা আলহাজ্ব হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী এমপিকে এবং তার পরিবারের অপরাপর সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ ও মানহানীকর তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। ঐ চক্র তার পিতা ও পরিবারকে হেয়প্রতিপন্ন করার হীন প্রয়াস চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, পুলিশের হেড কোয়ার্টার, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা, কাল্পনিক অভিযোগ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এসব প্রচার করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে কুচক্রি মহল কে বা কারা এবং কি ধরণের অভিযোগ বা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে লিখিত বক্তব্যে স্পষ্ট করেননি। তবে তিনজনের অডিও রেকর্ডের কথোপকথন তার নয় বলেও দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবী নেওয়াজ সরকার, উপজেলা যুগ্ম-আহবায়ক এ এন এম শোভা মিয়া আকন্দ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
হাসান মাহমুদ বলেন, এলাকায় তার পিতা এবং তার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা ও তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নামধারী সুবিধাবাদী একটি মহল এসব করছেন। তিনি এসব ব্যাপারে মিডিয়ার সহযোগিতা চান।
এমপি হাফেজ রহুল আমীন মাদানী ও তার পুত্র উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান মাহমুদের কথা বলে ত্রিশাল উপজেলার পূর্ব পাঁচপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আবুল কালাম শেখের ছেলে শাকিলকে পুলিশে চাকুরীর দেয়ার কথা বলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেন তার কাছ থেকে ২০১৯ সালে ১৪ লাখ টাকা নেন।
কৃষক আবুল কালাম শেখ জানান, গত বছর ছেলে শাকিলের পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরীর জন্য জমি বিক্রি করে ১২ লাখ ও সুদে ২ লাখ টাকা এনে মোট ১৪ লাখ টাকা দেন সাখুয়াই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনকে। বর্তমানে তোফাজ্জল হোসেন আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবেই পরিচিত।
তোফাজ্জল হোসেন ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের সংসদ সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী ও তার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান মাহমুদকে দিয়ে চাকুরী পাইয়ে দেয়ারও আশ্বাস দেন। শাকিল পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলেও চাকুরী হয়নি। চাকরী না হওয়ার ছয় মাস পরে তোফাজ্জল সাত লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকি টাকা দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করছেন। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার দেন দরবারও হয়েছে। কোন সমাধান না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিরুপায় হয়ে লিখিত আবেদন করে টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে নিউজ হয়। সেই প্রেক্ষিতেই এই সংবাদ সম্মেলন বলে জানান স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের অনেকেই।
অপরদিকে সচেতন মহলের ব্যানারে সোমবার দুপুরে কিছু লোক ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপি, এমপি পুত্র ও দুর্নীতিবাজদের বিচার দাবীতে মানববন্ধন করেছেন।##
Leave a Reply