কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থেকে গচিহাটা সড়ক পর্যন্ত মাত্র পাঁচ দশমিক ০৭ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজ ১৯ মাসেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রতিদিন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ‘গাফিলতি’কে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে রাস্তা প্রশস্তকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করেন মম কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের এপ্রিলে। প্রকল্পের কাজের শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু, দীর্ঘ ১৯ মাসে অগ্রগতি হয়েছে কাজের ৬০ শতাংশ। এদিকে সড়ক প্রশস্তকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রকল্পের নির্ধারিত সময় শেষ হয় ২৮ এপ্রিলে ২০২০ সালে। পরবর্তীতে কাজটি সম্পন্ন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
কিন্তু তারপরও প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যদিও দফায় দফায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগাদা পত্র দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেন উপজেলা এলজিইডি অফিস। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাঁচ দশমিক ০৭ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের ৬০ ভাগ কাজ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। আর বাকি ৪০ ভাগ কাজ ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বন্ধ হয়ে আছে। যতটুকু কাজ সম্পন্ন হয়ে ততটুকুও চলাচলের কারণে পুনরায় ভাঙা শুরু হয়েছে। ফলে সংস্কারের স্থায়িত্ব একেবারেই নিম্নমানের বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিনেও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে সড়কটির অবস্থা ছিল করুণ। এতে সড়কের নির্ভরশীল লোকজনের দুর্ভোগও ছিল সীমাহীন। তবে ১৯ মাস আগে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা।
কিন্তু ধীরগতির সংস্কারে দুর্ভোগ থেকে আদৌ মুক্তি মিলবে কি না সেটা নিয়ে তারা শংকিত স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দা জব্বার, মুকায়েম ও রহিম মিয়া জানান, ‘পাঁচ-ছয় বছর যাবৎ দুর্ভোগের মধ্যে ছিলাম। রাস্তা সংস্কার কাজ দেখে নতুন স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ যেন এখনো কমছেই না। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।
‘ মম কনস্ট্রাকশনের সত্ত্বাধিকারী ঠিকাদার জীবন মিয়া জানান, ‘কিছুদিন অসুস্থ থাকার কারণে সংস্কার কাজ বন্ধ ছিল। শিগগিই রাস্তা সংস্কারের বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।’ কটিয়াদী উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, ‘সংস্কার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারকে দাগিদ দেয়া হয়েছে। শিগগিই কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রকল্প বাতিলের সুপারিশ করা হবে। পরবর্তীতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply