ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের আমিরাবাড়ী টানপাড়া গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে গত ২৮মে ২১ইং রাতে সংগঠিত মারামারির ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে একই পরিবারের ৩জন ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গুরুতর আহত আমিরাবাড়ী টানপাড়া গ্রামের মৃত মোবারক মন্ডল মাস্টারের ছেলে শরিফুল ইসলামদের সাথে অভিযুক্ত একই গ্রামের মৃত মুহাম্মদ আলী মন্ডলের ছেলে তারাফ মন্ডলদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন ও সময় দা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বেআইনী ভাবে উক্ত জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে জমিতে থাকা অনেক গাছের চারা কেটে পাকা ভাউন্ডারীর দেয়াল ভাংচুর করে। এ ঘটনার টের পেয়ে শরিফুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজনরা বাঁধা দিতে গেলে অভিযুক্ত তারাফ মন্ডল ও তার লোকজনেরা দা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শরিফুলের পরিবারের ৪জনকে মারাত্বকভাবে আহত করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন, মামুন (৩৫), ইতি আক্তার (২৫) ও হালিমা (৫৫)।
এ ঘটনায় শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী শরিফুল ইসলাম তার অভিযোগে বলেছেন, তারাফ মন্ডল (৬০), পিতা-মৃত মুহাম্মদ আলী মন্ডল, বুলবুল মড়ল (৪২), ফারুক মন্ডল (২৫), উভয় পিতা-তারাফ মন্ডল, হাসান মন্ডল (৩০), পিতা-মৃত সবুজ মন্ডল, নাসির (৪৫), মাসুদ মন্ডল (২২), মিন্টু মন্ডল (৩২), উভয় পিতা-লাবু মন্ডল, লাবু মন্ডল (৫৭), পিতা-মৃত মুহাম্মদ আলী মন্ডল, নাসরিন (৩৮), স্বামী-বুলবুল মড়ল, জুয়েনা আক্তার (৪০), স্বামী-নাসির, সর্বসাং-আমিরাবাড়ি টানপাড়া, থানা-ত্রিশাল, জেলা-ময়মনসিংহদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করিতেছি যে, বিবাদীদের সাথে আগে থেকেই বাড়ি সংলগ্ন সাবেক-৯৬২ নং দাগের ০৭ শতাংশ ভূমি নিয়া আমাদের বিরোধ চলিয়া আসিতেছে। উক্ত বিরোধের জের ধরিয়া বিবাদীরা দিন গত রাত অর্থাৎ ইং- ২৮/০৫/২০২১ তারিখ রাত অনুমান ০১.০০ ঘটিকার সময় দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়া বেআইনী ভাবে উক্ত জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে এবং জমিতে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ কাটিয়া এবং সীমানার পাকা ভাউন্ডারী ওয়াল বাইরাইয়া ভাংচুর করে অনুমান-৮০,০০০/- টাকার ক্ষতি সাধন করে। টের পাইয়া আমি ও আমার বড় ভাই মামুন (৩৫) আগাইয়া গেলে ১নং বিবাদী তারাফ মন্ডলে হুকুমে বিবাদী বুলবুল খুন করার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা দা দিয়া মামুন এর মাথা লক্ষ্য করিয়া স্বজোড়ে কোপ দিলে, মামুন সামান্য সরিয়া পড়ায় উক্ত কোপ মামুন এর পিঠের বাম পাশে উপরে কাধের নিচে লাগিয়া গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।
মামুন মাটিতে পড়িয়া গেলে বিবাদী ফারুক, হাসান ও নাসির তাদের হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া মামুন এর মাথা লক্ষ করিয়া পর পর কয়েকটি কোপ দিলে মামুন বাম হাত দিয়া ঠেকাইলে বাম হাতে সামনের অংশে কুনুইয়ের নিচে ও উপরে এবং হাতের পিছনে কুনুইয়ের উপরে লাগিয়া গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। আমি আগাইয়া গেলে বিবাদী মাসুদ মন্ডল ও মিন্টু মন্ডল তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আমার মাথা লক্ষ্য করিয়া স্বজোড়ে বারি মারিলে, আমি সামান্য সরিয়া পড়িলে আমার ডান কাধে লাগিয়া গুরুত্বর হাড় ভাঙ্গা জখম হয়। আমি মাটিতে পড়িয়া গেলে বিবাদী লাবু, তারাফ, নাসরিন ও জুয়েনা তাদের হাতে থাকা লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়া এলোপাথারী বাইরাইয়া নিলা ফুলা বেদনা দায়ক জখম করে। আমার বোন ইতি আক্তার (২৫) এবং মা হালিমা (৫৫) আগাইয়া গেলে বিবাদী তারাফ, লাবু তাদের টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানীসহ এলোপাথারী বাইরাইয়া নিলা ফুলা জখম করে।
বিবাদী তারাফ তার দুই হাতে আমার বৃদ্ধা মায়ের গলা চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। আমার মা হালিমা মাটিতে পরিয়া গেলে বিবাদী হাসান ও নাসির পর পর কয়েকটি কোপ মারিয়া আমার মায়ের দুই পায়ের ঘুরালির নিচে গাধায় কাটা রক্তাক্ত জখম করে।
আমরা ডাকচিৎকার শুরু করিলে, আমাদের ডাকচিৎকার শুনিয়া স্থানীয় অনেকেই আগাইয়া আসিতে থাকিলে বিবাদী তাদের হাতের অস্ত্রাদি উচাইয়া প্রদর্শন করতঃ যে কোন মূল্যে উক্ত জমি বেদখল করে নিবে, বাধা দিলে বা ঘটনার বিষয়ে দরবার শালিস এবং আমরা উক্ত জমিতে গেলে খুন করিয়া লাশ গুম করার হুমকী ধামকী দিয়া চলিয়া যায়। পরে আমি ও আমার ভাই মামুন, বোন ইতি, মা হালিমা ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই এবং রেফার্ড মূলে আমরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাদের ভর্তি করে।
এ পর্যন্ত এ মামলায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানের অভিযানে বুলবুল মন্ডল (৪২), ফারুক মন্ডল (২৫), উভয় পিতা-তারাফ মন্ডল নামের ২জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে।
Leave a Reply