নাটোর প্রতিনিধি:নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের চাঁদপুর গোরস্থান এলাকায় বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের লাগানো অর্ধ শতাধিক সরকারী গাছের আম লুটের অভিযোগ উঠেছে কাফুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে । রোববার দুপুরে চাঁদপুর গোরস্থান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আম লুটের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয়রা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও বন্য প্রাণীদের জন্য প্রাকৃতিক খাবার বিক্রি করে অনেকটা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের মেশিন অপারেটর আব্দুর রহমান।
বিএমডিএ অফিস সূত্র জানায়, পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ২০০৭-৮ অর্থ বছরে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের বনবেলঘড়িয়া বাইপাস থেকে তকিয়া পর্যন্ত উভয় পাশে আমসহ অন্যান্য ফলদ গাছ রোপণ করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। গত তিন বছর থেকে ওই সব গাছে ফল আসা শুরু করে। মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এসব গাছের ফল খেয়ে পথচারীদের যেমন পুষ্টির চাহিদা পূরণ হতো, তেমনি বন্যপ্রাণীদের জন্য তৈরি হতো প্রাকৃতিক খাবার। ২০১৯ সালে এক কেজি নয়, প্রতিটি গাছের আম বিক্রি করা হয় ১৬ টাকায়। নাটোরে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এমন ঠিকাদার প্রীতির কারণে সে সময় সমলোচনার ঝড় উঠে। সেই থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গাছ গুলোর আম বিক্রি করা বন্ধ। চলতি বছর আমগাছগুলো কোন ঠিকাদারকে বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নাটোর সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত পাম্প অপারেটর আব্দুর রহমান কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই রোববার দুপুর থেকে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের দুই পাশ্বে লাগানো গাছগুলো থেকে প্রকাশ্যে আম লুট করা শুরু করে। এ সময় স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তিনি নাটোরে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) জাল কার্যাদেশ দেখান। এলাকার তরুণরা কার্যাদেশটি জাল বলে দাবী করে আম পাড়ায় বাঁধা দিতে গেলে তিনি এলাকাবাসীকে পুলিশ এবং সন্ত্রাসী দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়ে প্রকাশ্যে আম লুট করে। ৫০টির মতো গাছের আম নামিয়ে বাজারে বিক্রি করে দেয়। পরে টেন্ডারে কাউকে দেয়া হয়নি বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
পথচারী রহিদুল ইসলাম জানান, মহাসড়কের পাশে লাগানো আমগাছগুলো গত দুই বছর থেকে আম ধরতে শুরু করেছে। আশ-পাশের লোকজন এসব গাছে ছায়ার নীচে বসে। আবার অনেক সময় পাকা আম গাছ থেকে লোকজন পেড়ে খায়। এছাড়া পশু-পাখিরাও গাছের আমগুলো খায়। টেন্ডার ছাড়াই আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান কাঁচা আম লুট করে বিক্রি করে দেওয়ার কারণে হতাশ হয়েছি আমরা।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান জানান, বাজারে আমের দাম কম হওয়ায় সব গাছের আম নামাবো না ।আমি আচার করার জন্য চার/পাঁচটা গাছের আম পেরেছি। আমি টেন্ডারে আমগাছগুলো পেয়েছি। আমার কাছে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের আম নামানোর কার্যাদেশ রয়েছে। কার্যাদেশ দেখতে চাইলে তিনি কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হোন।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মাদ আহসানুল করিম জানান, জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য এবার আম বিক্রির টেন্ডার আহবান করা হয়নি। সেহেতু কার্যাদেশ দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। অল্প সামান্য আম। এগুলো পথচারী এবং পশু-পাখিরাই খাবে। আম গাছগুলো থেকে আম পারতে আব্দুর রহমান কে নিষেধ করা হয়েছে। নিষেধ করার কারণে তিনি অফিস র্ষ্টাফদের সাথে বাজে ব্যবহার করেছেন।
Leave a Reply