বাংলাদেশে নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে ও অতিথি পাখিদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। দুইটাই এক স্বভাবের। নির্বাচন আসার পর স্বার্থ হাসিলের জন্য খালা, খালু,মামা চাচি, চাচা,ডাকের অভাব হয়না।স্বার্থ হাছিল মানে, চেয়ার পেলে আর খালা, খালু,মামা চাচি, চাচার কথা মনে পরে না চেয়ারম্যান, মেম্বার নামধারী অতিতী পাখিদের।
তখন সখিনা, কুলসুম, বানেছার মা’র ভোটের সাংঘাতিক দাম,ভোট চলে গেলে চেয়ারম্যান, মেম্বার তাদের আসনে বসার পর সখিনা, কুলসুম, বানেছার মা কোন সুযোগ সুবিধের জন্য গেলে তখন তারা চেয়ারম্যান মেম্বারের গুদের উপর বিষফোড়া হয়ে দাড়ায়।
অতিতী পাখি শীত কালে বাংলাদেশে আসে আর চেয়ারম্যান, মেম্বার গণ জনগণের কাছে আসে ভোটের সময়। তাহলে বুঝা যায় অতিতী পাখি আর ভোট কাঙ্খিত লোকদের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।ভোট চলে গেলে নির্বাচনে জয়ী হয়ে গদিতে বসে জনগনের ভোট দানের প্রতিদান টা দেয় আঁচ ওয়ালা বাঁশ স্বরুপ। একটা পরিচয় পত্রের জন্য ঘুরতে হয় কয়েক দিন,জন্ম নিবন্ধনের জন্য অতিরিক্ত ফি নিয়ে ধরনা দিতে হয় বহুসময়।
যা হোক সব মিলিয়ে ধনে,মানে, ঐতিহ্যে,আভিজাত্যে,বাংলা একসময় সোনালী দিন পার করলেও কালের বিবর্তনে আজ তা হারিয়ে গেছে। সেটা হতে পারে আমাদের ১৯০ বছরের দাসত্ব, সেটা হতে পারে আমাদের মীরজাফরের রক্ত, সেটা হতে পারে আমাদের পরশ্রীকাতরতা, সেটা হতে পারে আমাদের নীচু মানসিকতা, সেটা হতে পারে আমাদের অতিলোভ, সেটা হতে পারে আমাদের অন্যকে দাবিয়ে রাখার মানসিকতা। এমন শত হতে পারার গল্পে মিশে আছে বাঙালী।
যোগ হতে পারে অতীত দ্রুত ভুলে যাওয়ার মানসিকতা,যোগ হতে পারে অতি আবেগী মনোভাব, যোগ হতে পারে হুজুগে বাঙালির মতো গুণ। ফুটে উঠতে পারে বাঙালির আসল চরিত্র।ঈর্ষা, অতিবচন,হিংসা, নোংরামি, পরিচিতি পর্বের মতো নেতিবাচক যতো দিক।সর্বসাধারণের সে সুযোগ টা-ই কাজে লাগায় অতিথি পাখি নামক কিছু বাঙালি।
অতিথি পাখিরা যেমন নির্দিষ্ট সময় ধরে আসে ঠিক তেমনি নির্বাচন এলেই তাদের আগমন ঘটে। ধারাবাহিক ভাবে জনপ্রতিনিধি থাকলেও যা,জনপ্রতিনিধি হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও তা।আগমনটা ঘটে একই সময়ে। সুবচন, কমিটমেন্টে আটকে ফেলে জনসাধারণ। মদ,জুয়া, চুরি, ডাকাতি বিরোধী শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে।
হিরোইন, ইয়াবাসহ সকল প্রকার মাদকের বিরুদ্ধে তুলে সোচ্চার আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি। জনগণের ন্যায্য অধিকার পূরণে হয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।সাথে জনসাধারণের অতি প্রিয় চা,পান,সিগারেট সহ রয়েছে অর্থনৈতিক লেনদেন। ফলাফল ; বারবার জিতে যাচ্ছে অতিথি পাখি আর হেরে যাচ্ছে সাধারণ জনগণ।
কলামিস্ট ও কথাসাহিত্যিক নূরুল ইসলাম ছোটন
Leave a Reply