নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের সাতগাঁও গ্রামের সাতগাঁও এম বি পি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জমিলা খাতুনের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ভুয়া বলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ আরো ২০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাবর মোহাম্মদ শফিউল নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জমিলা খাতুন প্রথম বছরে প্রথম শ্রেণি পাস, ১০ বছরে দাখিল শ্রেণি পাস, ১২ বছরে আলিম পাস করেন, যা বাস্তবতার নিরিখে কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। তার নিয়োগপত্রের নামে ঘষামাজা এবং চাকরিতে যোগদানের সময় বাধ্যতামূলক কোনো ব্যক্তিগত তথ্যে পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রদান করেননি। তিনি ধর্মীয় শিক্ষক পদে অস্থায়ী নিয়োগ পেলেও পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সহকারী শিক্ষিকা পদে নিয়োগ পান।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, তার ছোট বোন জমিলা খাতুনের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ব্যবহার করে নিজে জমিলা খাতুন নাম ধারণ করে বহালতবিয়তে চাকরি করে আসছেন ১৯৮৭ সাল থেকে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের মাধ্যমে মোসাম্মৎ জমিলা খাতুন নাম ধারণ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, জন্ম তারিখ তদন্ত করলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ এলাকাবাসী অবগত থাকলেও তার স্বামী ডাকাত প্রকৃতির বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জমিলা খাতুনকে মোবাইল ফোনে পাওয়া না গেলেও তার ছেলে মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, আম্মা অসুস্থ। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফ চৌধুরী বলেন, অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। তবে অভিযোগকারীর ঠিকানা না থাকায় এটাকে বেনামি অভিযোগ বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আমার আম্মার চাকরিকালীন মন্ত্রণালয় থেকে দুবার অডিট হয়েছে। যদি ভুয়া সনদপত্র হতো তাহলে অবশ্যই ধরা পড়ত। বর্তমানে অনলাইনে ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই।
সাতগাঁও এম বি পি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার ভৌমিক বলেন, অভিযোগ হয়েছে শুনেছি। আমার জানামতে নামে ভুল ছিল, তা সংশোধন করা হয়েছে। তবে সনদপত্রের বিষয়ে আমি অবগত নই। কেননা, আমি ২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়েছি। যেহেতু জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে, একমাত্র স্যারের মাধ্যমেই যাচাই-বাচাই করা হলে অভিযোগের বিষয়বস্তু বেরিয়ে আসবে।
খালিয়াজুরী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলামের সাথে অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের কপি এখনো হাতে পাইনি। অভিযোগের কপি পেলে তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর গফুর বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তবে অভিযোগকারীর নাম দেয়া থাকলেও ঠিকানা দেয়া হয়নি। অভিযোগকারীর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা দিয়ে অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply