নওগাঁয় সুমি খাতুন নামে এক প্রসূতি নারীর পেটে গজ রেখেই সেলাই দেওয়ার অভিযোগ উঠে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করে পুনরায় অপারেশন করে পেট থেকে গজ কাপড় পাওয়ার অভিযোগ মিলে প্রসূতির পরিবারের। তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ডাক্তার তানিয়া রহমান তনি নামের এই চিকিৎসক।
আজ দুপুরে নওগাঁ জেলার প্রেসক্লাব মিলনআয়তনে সংবাদ সম্মেলনে ডাক্তার তনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে উল্লেখ করে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৫ মে’ ২০২৪ জরুরি ভিত্তিতে কল পেয়ে নওগাঁ শহরের একতা ক্লিনিকে সকাল ৮টায় আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া গ্রামের উজ্জলের স্ত্রী সুমি’র সিজারিয়ান অপারেশন করেন তিনি। প্রয়োজনীয় রুটিন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট স্বাভাবিক পেয়েই তিনি অপারেশন করেন। অপারেশনের পর ঐ দিন ৪টায় ভিজিট করে রোগীর সব ভাইটাল প্যারামিটার স্বাভাবিক দেখতে পান। এরপর সন্ধ্যার দিকে একতা ক্লিনিক থেকে
তাকে ডাকা হলে তিনি গিয়ে দেখেন রোগীর স্কীনে সেলাইয়ের স্থান থেকে সামান্য রক্ত বের হচ্ছে। এসময় লোকাল এনেস্থেসিয়া ব্যাবহার করে পূর্বের সেলাই কেটে একই স্থানে নতুন করে সেলাই করেন তিনি। এরপর রোগীর রক্তপাত সংক্রান্ত অন্য কোন জটিলতা বা ব্যাধি আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কয়েকটি পরীক্ষা করতে পরামর্শ দেন রোগীর স্বজনদের। কিন্তু রোগীর লোকজন পরীক্ষা করতে অসম্মতি জানিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর ইচ্ছা পোষণ করে। পরবর্তীতে তাদের ইচ্ছানুসারে চিকিৎসক তনি রোগীকে রেফার্ড করেন। এবং পরবর্তীতে রোগীর খোঁজ খবর নিতে কয়েকবার রোগীর স্বামী উজ্জলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি
ফোন রিসিভ করেননি।
এরপর ২০ মে হঠাৎ বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় রোগীর পেটে গজ কাপড় রেখে সেলাই দেয়া হয়েছে এমন সংবাদ প্রচার করা হয়। সংবাদ প্রচারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে ডাক্তার তানি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের গাইনি এন্ড অবস বিভাগে যোগাযোগ করে জানতে পারেন ঐ রোগীর ল্যাপারটমি করে কোন গজ কাপড় পাওয়া যায়নি। বরং রোগীর এইচ, ই,এল ,এল,পি সিনড্রোম ধরা পড়ে। এ জন্য রোগীকে আইসিইউ’তে শিফট করা হয়। ডাক্তার বলেন এই সিনড্রোম প্রসব পরবর্তী সময়ে অনেক রোগীর দেখা দিতে পারে যা পূর্বে থেকে ধারণা করা যায় না। এর সাথে সার্জারির কোন সম্পর্ক নাই বা সার্জন দায়ী নয়। সংবাদ সম্মেলনে ডাক্তার তানিয়া রহমান তনির সাথে বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার এবং পরিবারের সদস্যরা অবস্থিত ছিলেন।
মো: এ কে নোমান।
Leave a Reply