বিএনপিতে নিজের রাজনৈতিক ‘ভবিষ্যৎ অন্ধকার’ জেনে নতুন পরিকল্পনা নিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে সেই গোপন কথাটি আর গোপন রইলো না। হঠাৎ করে সিঙ্গাপুর যাত্রায় তা এবার প্রকাশ্য হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দলের অভ্যন্তরে ও রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন উঠেছে। কেউ বলছেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের অংশ হিসেবে তার এই বিদেশ গমন। আবার কেউবা বলছেন, তিনি সিঙ্গাপুর থেকে লন্ডনে যাবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। কিন্তু মূল ঘটনা কী, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।
তবে বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যমতে, মির্জা ফখরুলের সিঙ্গাপুর যাত্রা পূর্ব পরিকল্পনার অংশ। অনেকদিন ধরেই তিনি দলের ভেতর ও বাইরের নানা ঘটনায় ক্ষুব্ধ। কিন্তু আসন্ন জাতীয় দলীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে এতদিন চুপচাপ বসে ছিলেন তিনি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছেন, পরবর্তী কাউন্সিলে মহাসচিবের পদ বাগাতে তার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও তারেকের ‘আস্থাভাজন’ রুহুল কবির রিজভী। তাই তীরে এসে তরী ডোবার আগেই ফখরুল নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তার সঙ্গে থাকছেন বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা, জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কাছের মানুষদের অন্যতম এলডিপির বর্তমান চেয়ারম্যান কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ ও ব্যারিস্টার মওদুদের মতো নেতারা।
কিন্তু বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলছেন, প্রয়োজন ছাড়া সিঙ্গাপুর যাচ্ছি না। যথাসময়ে দলের অন্যান্য নেতাকর্মী ও মিডিয়াকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হবে। তবে হ্যাঁ, কাজ মেটানো হয়ে গেলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি হালকা ঘোরাঘুরি করারও ইচ্ছা আছে। আগে থেকে মওদুদ আহমেদও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর অবস্থান করছেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক সিনিয়র নেতা বলেন, যতটুকু শুনেছি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। কর্নেল (অব:) অলি আহমেদের মতো নেতারা সেখানে থাকছেন। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে তারা একাধিকবার গোপনে বৈঠকও সেরেছেন বলে জেনেছি। তাই এই সিঙ্গাপুর যাত্রা সেই দল গঠনের প্রথম পদক্ষেপ বলে আমার ধারণা।
বিষয়টি বিএনপির রাজনীতিতে নয়া মেরুকরণ সৃষ্টি করবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সকল সন্দেহ আর গুঞ্জনের অবসান হলো ফখরুল-মওদুদদের সিঙ্গাপুর যাত্রার মাধ্যমে। কারণ, বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল তারা নতুন দল গঠনের পাঁয়তারা করছেন। এবার তাদের চিকিৎসার নামে হঠাৎ এই বিদেশ ভ্রমণই প্রমাণ করা দেয়, তারা নতুন পথে হাঁটার চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন। এ কারণে দেশে যখন পৌর নির্বাচনের উত্তাপ তখনই তারা গোপনে পাড়ি জমালেন সিঙ্গাপুরে। দলের প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থাকলে তারা কখনই এমনটা করতে পারতেন না।
Leave a Reply