প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি নতুন কোন ঘটনা নয়। বলা যায়,প্রশাসনের উৎপত্তির মাঝেই এর জন্ম,প্রচলন ও বিকাশ।
সুতরাং সভ্যতার প্রথম থেকেই প্রশাসনের সাথে দূর্ণীতি অঙ্গাঙ্গী ভাবেে জড়িত। কিন্তু আজ দূর্নীতি বাংলাদেশের প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। ফলে উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন বৃটিশ, পাকিস্তানিদের আধিপত্য থাকার কারনে এমনিই তেমন কোন চোখে পরার মত উন্নয়ন হয়নি।উন্নয়নের ছোঁ -য়া -ও -লাগেনি বললেই চলে!
তার উপর দুর্নীতি নামক সাপের ছোঁবলে দেশটি মারাত্বক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
এর মূলৎপাটন ছাড়া কোন রকমেই দেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব নয়।কোন একক উপাদান কে দূর্ণীতির কারণ বলে উল্লেখ করা যায়না।
বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দূর্ণীতিরর বহু মাত্রিকতা রয়েছে।
যেমনঃ
০১.সামাজিক পরিবর্তন ঃ সমাজ প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল। সময় সময় সামাজিক অবস্থার প্রচন্ড্র পরিবর্তনেরর চাপে মানুষের মাঝে অনিশ্চয়তা ভাব জন্মায় ফলে এই অনিশ্চয়তা থেকে পরিত্রানের জন্য মানুষ বৈধ ও অবৈধ কাজ করতে বাধ্য হয় ফলে দূর্ণীতির জন্ম হয়।
০২.নৈতিক মুল্যবোধঃ মানুষ নৈতিক মূল্যবোধ লাভ করে প্রধানত সামাজিক পরিবেশ ও ধর্মীয় অনুপ্রেরণা থেকে আর যে সমাজে মানুষ নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি উদাসীন সে সমাজে দুর্নীতি অনিবার্য।
০৩.রাজনৈতিক কারনঃ দূর্নীতির ব্যপক কারণ গুলোর মধ্যে রাজনৈতিক কারণ অন্যতম।আসলে রাজনৈতিক বেড়াকলে দুর্নীতির বসবাস। রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতাসীন হওয়ার পরই নানা রকম অবৈধ পন্থার আশ্রয় গ্রহন করে। স্বজন প্রীতির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেন। তারা তো উপর্জনের লালসায় মত্ত হয়ে ওঠে। আর এই লালসাই হলো দূর্নীতির কারণ।
০৪.কাল টাকার আবির্ভাবঃ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার লাইসেন্স এবং পারমিটকে কেন্দ্র করে বাজারে কালো টাকার আবিভার্ব হয়। ক্ষুদ্র মুদ্রাস্ফীতি ও কালো বাজারী টাকা সমগ্র প্রশাসনিক পরিবেশকে দূষিত করে ফলেই দেশে দুর্নীতির সৃষ্টি।
০৫.অর্থনৈতিক কারণঃ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থারর সাথে সম্পর্কটা পাকাপোক্ত। তাই রাজনৈতিক অবস্থা দুর্নীতিপরায়ন হলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দুর্নীতি স্বাভাবিক ভাবেই হয়ে ওঠবে।
সর্বোপরি জনগণের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা দুর্নীতির অন্তরায় নয়।
০৬.অদক্ষতা ও দুর্নীতি ঃ ইচ্ছা, অনিচ্ছাকৃত ভাবে অদক্ষতা এবং যথোচিত বিলম্ব দুর্নীতি সৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।বলা যায়,কোন ব্যাক্তি যদি সরকারি কোন অফিসে কোন কিছুর জন্য আবেদন করেন এবং তিনি যদি আবেদনের উত্তর না পান তাহলে স্বভাাবতই তাকে অফিসে আসতে হবে এবং অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে।
প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি দমনের উপায় ঃ
০১.দুর্নীতি দমন আইন প্রয়োগের বাস্তবতা।
০২.সংবাদ পত্রের স্ব- স্বধীনতা।
০৩. দুর্নীতির শাস্তি ও সততার পুরুষ্কার।
০৪. প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
০৫. গণসচেতনতা সৃষ্টি।
০৬. প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নিয়মিত পদোন্নতির ব্যবস্থা নেওয়া।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বুঝা যায় যে,দূর্নীতির করার যে মাধ্যম বা সেক্টর গুলো আছে, প্রশাসনিক ভাবে “জিরো টলারেন্স” নীতি চালু রাখলে দূর্ণীতির আতুরঘরেই দূর্নীতি অবসান হবে। আর প্রশাসনই যদি দুর্নীতির আতুর ঘরে বড় হয় তবে জ্যামিতীয় হারে বাড়বে দুর্নীতি। (চলমান)
Leave a Reply