ভালুকা( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের ভালুকার মেদুয়ারী ইউনিয়নে সচ্ছল পরিবারে একাধিক কার্ড, নিম্ন আয়ের কমলা কার্ড না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ অভিযোগ উঠেছে এলাকায়। উপজেলার মেদুয়ারী ইউনিয়নে টিসিবির কার্ডের পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাজিম উদ্দিন আহমেদ( ধনু)।
উপজেলার মেদুয়ারী ইউনিয়নে গত ২১ মার্চ রোববার (সকাল ১০ টা) থেকে টিসিবির কার্ডের পণ্য দেওয়া শুরু করা হয়। মেদুয়ারী ইউনিয়নের তিনটি পয়েন্টে টিসিবির কার্ডের পণ্য দেওয়া হচ্ছে। হতদরিদ্র কমলা কার্ড না পেয়ে পরিষদ চত্বর উপস্থিতিতে জানান, আমি কমলা হতদরিদ্র পাইনি কার্ড, একিই পরিবারে দু’টি কার্ড রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে এলাকায়। মেদুয়ারী ইউনিয়নে তালিকাভুক্ত কার্ডের সংখ্যা (৮৭১) তার মধ্যে শতকরা ৭০/% কার্ড দারি ব্যক্তি রয়েছেন প্রভাবশালী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। এছাড়াও বেশ কিছু পয়েন্টে দেখা গেছে লাইনে দাঁড়ানো রয়েছে। নিম্ন আয়ের লোকজন অথচ তালিকাভূক্ত রয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম। ওই সকল ব্যক্তিরা লাইনে না দাড়িয়ে নিম্ন আয়ের কার্ডধারীদের দিয়ে মালামাল সংগ্রহ করেছেন। এমনকি তাদের সন্তান দিয়ে সংগ্রহ করেন। জনপ্রতিনিধিরা সরকারের দেওয়া নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই জনপ্রতিনিধিরা তাদের আত্মীয়-স্বজন ও অতি কাছে ব্যক্তিদের নাম দিয়ে তালিকাভুক্ত করেন। এদিকে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি নামে রয়েছে দুইটি কার্ড। এ ঘটনায় মেদুয়ারী ইউনিয়নের আরও শতাধিক লোকজনের অভিযোগ করেছে। নিঝুরী গ্রামের হতদরিদ্র নিম্নআয়ের কমলার সংসারে দুই ছেলে তিন মেয়ে, ঘরে অসুস্থ স্বামী। টাকার অভাবে পারছে না স্বামীর চিকিৎসা করাতে সংসার চালাতে কমলার হিমশিম। তবুও কমলা পায় না সরকারের দেওয়া কোনো উপকারভোগী কার্ড।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে এক কোটি পরিবারের মানুষ পাচ্ছে কম দামে টিসিবির পণ্য। গত রোববার থেকে দেশজুড়ে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা করে পরিবারগুলোর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে কার্ড। এতে করে ৫ কোটি মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আসবে বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সরকারের আগের ভাতাভোগীদের সঙ্গে প্রান্তিক পর্যায়ের আরও ৫৭ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষ পেয়েছেন ফ্যামিলি কার্ড।
ওই কার্ড দেখিয়ে তারা টিসিবির ট্রাক থেকে দুই দফায় নিতে পারবেন সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল ও ছোলা। কার্যক্রমটি সফল করতে টিসিবির পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে প্রস্তুতি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মেদুয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি লোকমান হেকিম সরকার, আওয়ামিলীগের নেতা আবুল কাশেম, ইউপি সদস্য, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ টিসিবি কার্ডধারীরা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভালুকা উপজেলায় ১২২০৪ জনকে টিসিবির পণ্য কেনার জন্য পারিবারিক পরিচিতি কার্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মেদুয়ারী ইউনিয়নে আছেন ৮৭১ জন।
এছাড়া টিসিবির মাধ্যমে একটি পরিবারকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত দুইবার করে দুই লিটার সয়াবিন তেল, চিনি ও মসুর ডাল দুই কেজি এবং পেঁয়াজ সর্বনিম্ন দুই কেজি কেনার সুযোগ দেয়া হচ্ছে৷ তাদের কাছে সয়াবিন তেল ১১০ টাকা লিটার, মসুর ডাল প্রতি কেজি ৬৫ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা, পেঁয়াজ কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা বাজার দরের চেয়ে কম৷ বিশেষ করে সয়াবিন তেল এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকা প্রতি লিটার৷
মেদুয়ারী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার রানি বিতরণ শুরুতেই বলেন, এ টিসিবির কার্ড নিম্ন আয়ের লোকজনের জন্য এবং পর্যাক্রমে আরও নিম্ন আয়ের লোকজনকে কার্ড দেওয়া হবে।
সুশীল সমাজ বলেন, এ টিসিবির কার্ডের তালিকা স্বজনপ্রীতি হয়েছে। স্বজনপ্রীতি আমাদের সমাজে এক ভয়ানক মরণব্যাধির নাম। যা ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এবং ধ্বংস করে দিচ্ছে ন্যায়বিচার, ন্যায়নীতি ও নিরপেক্ষতার আদর্শ। চাকরি, ব্যবসা, রাজনীতি, প্রশাসন, সর্বত্র স্বজনপ্রীতি লক্ষ্য করা যায়। আমরা যে যে দায়িত্বে থাকি চেষ্টা করি নিজের পরিবারের সদস্যদের বা পরিচিতজনদের একটু সুযোগ-সুবিধা দিতে।
Leave a Reply