ময়মনসিংহের গৌরীপুর-বেখৈরহাটি সড়ক সংস্কার ও মেরামত প্রকল্পের কাজ চলমান অবস্থাতেই একদিকে চলছে মেরামত আর অন্যদিকে ভাঙছে। নতুন সড়কে তিন দফায় দেয়া হয়েছে ৮৪টি স্থানে জোড়াতালির পট্টি। দেবে গেছে সড়ক, মাটি না কাটায় ভাঙছে সড়ক, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের কারণে উঠে যাচ্ছে রাস্তার পাথর! সিকিউরিটি উত্তোলনের (ঠিকাদারের জামানত উত্তোলন মেয়াদ) মেয়াদের আগে বারবার মেরামত ও সংস্কারে এলাকাবাসী বিস্মিত!
শুক্রবার এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. ওয়াহেদুল হক বলেন, যেখানে ত্রুটি আছে সেগুলো ঠিক করা হচ্ছে। আরও যেসব স্থানে লাগবে সেগুলোতেও ঠিক করে দেয়া হবে। তবে রাস্তায় নিম্নমানের মাল ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেন ঠিকাদার আহাম্মদ আলী। তিনি জানান, যেসব স্থানে থিকনেস কমে গেছে, সেসব স্থানে সিলকোট করে দেয়া হচ্ছে। এতে রাস্তার কোনো ক্ষতি হবে না।
সরজমিন দেখা যায়, নির্মাণ কাজ করা হয়েছে ধুলাবালি আর কর্দমাক্ত স্থানে। প্রবল বর্ষণে পানি সেচেও বিটুমিনের কাজ চলমান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পুরাতন মালামাল ব্যবহার, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার, সঠিকভাবে প্রাইমকোড-টেককোড না করা ও নিম্নমানের পাথর ব্যবহারের অভিযোগ। প্রাইমকোড ছাড়াই অধিকাংশ স্থানে মেরামত করায় সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তার পাথর চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এ সড়কটি একাধিকবার মেরামত করা হলেও এলাকাবাসী পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত সেবা। এ প্রসঙ্গে অচিন্তপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জের আব্দুল জব্বার জানান, লিখলে লাভ নেই, কয়েকদিন পরে আবারও মেরামত হবে, ভাঙন-আর মেরামত আমাদের নিত্যসঙ্গী।
একদিকে মেরামত আর অন্যদিকে ভাঙন এ সড়ক নির্মাণে নিয়মে পরিণত হয়েছে। মেরামতকৃত নতুন সড়কে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিন দফা জোড়াতালি দেয়া হয়েছে। এরপরও উঠে যাচ্ছে রাস্তার পাথর, দেবে যাচ্ছে রাস্তা। জমছে পানি। ভোকেশনালের সামনে ৯টি পয়েন্টে, খেলার মাঠ এলাকায় ৫টি পয়েন্টে, পূর্বদাপুনিয়ার ৮টি পয়েন্টে, বালুয়াপাড়ায় ১৭টি নতুন রাস্তা জুড়ে পট্টি দেয়া হয়েছে। নতুন রাস্তা এখন জোড়াতালির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। তৃতীয় দফায় থিকনেস কম থাকায় ২২টি স্থানে আবারও প্রলেপ দেয়া হয়েছে। গোলকপুর গ্রামের ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, বৃষ্টির জমা পানির ওপরেই কাজ করা হয়েছে দারিয়াপুর এলাকায়। বালুয়াপাড়া মোড়ে মেরামত প্রসঙ্গে জরিনা আক্তার বলেন, বছরে বছরে কাজ করে। রাস্তা তো আর টিকে থাকে না। নতুন রাস্তায় আবার মেরামত করা হচ্ছে, এটা দুঃখজনক।
Leave a Reply