সুন্দরবনের কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন মৌয়াল কুদ্দুস
তারিখঃ ১৬/০৫/২০২৪
বারঃ বৃহস্পতিবার।
গভীর সুন্দরবনে ঢুকে মধু কাটার পর নদীতে গোসল করতে নামেন আব্দুল কুদ্দুসসহ ছয় মৌয়াল। হাঁটু থেকে সামান্য উঁচু পানিতে গোসল করছিলেন। হঠাৎ আবদুল কুদ্দুসকে পানির মধ্যে ঘুরপাক খেতে দেখেন অন্যরা। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই হতবাক। আবদুল কুদ্দুস পানিতে ঘুরপাক খাচ্ছেন আর পানিতে ভেসে উঠছে রক্ত। হঠাৎ পানির ওপরে উঠে এলো কুমিরের লেজ।
বাকিদের বুঝতে আর কিছু বাকি রইল না। আবদুল কুদ্দুসকে কুমিরে ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গে হাতে থাকা মগ ও পাতিল নিয়ে সজোরে পানিতে আঘাত করতে লাগলেন বাকি পাঁচজন। তারা আব্দুল কুদ্দুসের দুই পা ধরে টানাটানি শুরু করেন। এভাবে চলতে থাকল তিন থেকে চার মিনিট। হঠাৎ শিকার ছেড়ে নদীর গভীরে চলে যায় কুমিরটি। এর আগে, ২০১৫ সালে মধু কাটতে গিয়ে সুন্দরবনের তালপট্টি এলাকায় বাঘের কবলে পড়েন আবদুল কুদ্দুসসহ ৭ জনের একটি দল।
আবদুল কুদ্দুসকে (৫৫) কুমিরের হাত থেকে জীবিত উদ্ধারের এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেন তারই ছোট ভাই আবদুল হালিম। ঘটনাটি ঘটে গত ১১ মে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া নদীতে। গত সোমবার লোকালয়ে ফেরার পর মঙ্গলবার (১৪ মে) তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত আবদুল কুদ্দুস জেলার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের মৃত মোকছেদ সানার পুত্র।
এ বিষয়ে সুন্দরবনের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, গত পাঁচ বছরে সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের আক্রমণে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে কুমির ও বাঘের আক্রমণে আহত হন দুইজন। সুন্দরবনে গিয়ে বাঘ, কুমিরসহ হিংস্র প্রাণী থেকে নিরাপদে থাকার বিষয়ে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে মৌয়ালদের সতর্ক করা হয়।
Leave a Reply