বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাছির উদ্দীন আহমদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাজুক অবস্থা কাটিয়ে আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন। ভর্তি রোগীদের জন্য শতভাগ ঔষধ সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর প্রায় একক প্রচেষ্টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একই সাথে রোগীদের এবং ডাক্তারদের জন্য একটি চমৎকার স্থান হয়ে উঠেছিল।
ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য তিনি ব্যবস্থা করেছিলেন ২৪ ঘন্টা সক্রিয় সিসি টিভি ক্যামেরা আর স্টাফদের প্রত্যেকের সঠিক ইউনিফরম। হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দৌরাত্ব কমানোর জন্য তাঁর নেয়া ক্রাশ প্লান হাসপাতালে দালালের দৌরাত্ব অনেকখানি নির্মুল করতে সাহায্য করেছে।
গত বছর ডেঙ্গু মহামারীর সময় তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে রোল মডেল হিসেবে স্থাপন করেন। ডেঙ্গু পরীক্ষার সব খরচ বিনামূল্যে করে দেয়ায় তিনি দেশজুড়ে প্রশংসার পাত্র হয়েছিলেন। তিনি ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে হোল ব্লাডের পাশাপাশি, ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা, প্যাকড রেড সেল কিংবা প্লাটিলেট দেওয়ার উদ্যোগ নেন যা ছিল রীতিমতো যুগান্তকারী।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আলোয় আলোকিত এবং হাসপাতালের সেবার মান অনেকাংশে বাড়াতে অবদান রেখেছিলেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাছির উদ্দিন আহমদ।
কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালের চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন,ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ,উপজেলা হাসপাতাল থেকে অফিস চলাকালীন সময়ে তথাকথিত নামিদামী প্রাইভেট হাসপাতালে ও ক্লিনিকে তাদের উপসস্থিতি দেখা যায়।
এভাবে প্রাইভেট হাসপাতালে ও ক্লিনিকে রোগীদের টানাটানির কারণে হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসার ব্যহত হয়।
বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাছির উদ্দীন আহমদ কে বদলির জন্য বিভিন্ন সরকারী মহলে তদবীর করে অবশেষে বদলি করার পরপরই ক্ষমতাশীল দলের প্রভাবশালী লোকেরা ব্যাঙের চাতার মত গড়ে তুলছে নামে বেনামে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক, যেখানে চিকিৎসার নামে করা হচ্ছে প্রতারনা।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রুগীদের চিকিৎসা সেবা বহুলাংশে ব্যহত হচ্ছে। প্রশ্ন হল,প্রাইভেট হাসপাতালে এত ডাক্তারের উপস্থিতির উৎস কোথা থেকে?প্রাইভেট হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভিজিট ফিস ৭০০-১০০০ টাকা।মানুষ মনে করেন এটা গলাকাটা ফি।এত টাকা কেন নেওা হয়,কে নির্ধারক এই ভিজিটের।আর সেটা রাতারাতি ৫০০-১৫০০ টাকা হয়ে গেলেও বলার কেউ নেই! তাছাড়া ডাক্তারেরা ভিজিট নিয়ে কি রশিধ দেয়, কি নামে দেয়? জবাব নেওয়ার কেউ নেই!
ডাক্তার কাঞ্চন সরকার(সহকারী অধ্যাপক, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) বলেন’কোন জায়গায় ডা:ভিজিট নিচ্ছে ১৫০০ টাকা,আরেক জন নিচ্ছে ১০০০ টাকা, ৮০০,৫০০,৬০০,২০০টাকা করে,আসলে এটা কোন জায়গায়ই নির্ধারিত নাই।বাংলাদেশে ডাক্তারদের রেগুলেটরি বডি হচ্ছে বিএমডিসি।বিএমডিসি যদি নির্ধারিত করে দেয় তাহলে এই প্রশ্ন গুলো ভোক্তভোগীদের কাছ থেকে আসতো না’।
যে ডাক্তার দৈনিক রোগী দেখেন ৪০/৫০ জন, তার দৈনিক আয় কত তার হিসাব দিচ্ছে কোথায়?কি হিসাব দিচ্ছে আয়কর বিভাগকে? প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের রোগীরা শুধু প্রতারিতই হচ্ছেন না,অপচিকিৎসায় বরণ করেন পুঙ্গত্ব আবার কেউ প্রাণ হারাচ্ছেন।দূর থকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাইলেও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নির্দিষ্ট ল্যাবে পরিক্ষা নিরীক্ষা করতে বাধ্য করেন।এবং বিভিন্ন অপকৌশলে রোগীদের পকেট কাটা হয়।তাই ময়মনসিংহের মানুষের দাবী, ডাক্তারদের গলাকাটা ফি আদায় ক্ষেত্রে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায়।
Leave a Reply