1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. najmulhasan7741@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  3. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন

ঋণ বিতরণ ৮০% কমেছে ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক ও আশার

জৈষ্ঠ প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০

গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হয় তার৭০ শতাংশেরও বেশি অর্থের জোগান দেয়বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও খাত। ক্ষুদ্র ঋণকার্যক্রমের মাধ্যমেই কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোগে গ্রামীণপরিবারগুলোকে অর্থায়ন করে এনজিওগুলো। কিন্তুবৈশ্বিক মহামারী করোনার আঘাতে অন্য সবঅর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মতো থমকে যায়এনজিওগুলোর ঋণ কার্যক্রমও। আশঙ্কাজনকভাবেকমে যায় ঋণ বিতরণ ও আদায়।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্থায়নে বড় ভূমিকা রয়েছেদেশের শীর্ষস্থানীয় তিনটি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যবলছে, করোনার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরেরশেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এ তিনটি প্রতিষ্ঠানেরইঋণ বিতরণ কমেছে ৮০ শতাংশের বেশি। একইসঙ্গে ৭৫ শতাংশের বেশি কমেছে ঋণ আদায়।

চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণশুরু হয়। দেশে প্রথম কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীশনাক্ত হয় মার্চের ৮ তারিখ। এর পর থেকেইসংকুচিত হতে থাকে বেসরকারি উন্নয়নসংস্থাগুলোর ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম। ২৬মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরু হলে ঋণের কিস্তিআদায় ও বিতরণ একপ্রকার বন্ধই হয়ে যায়, যারপ্রতিফলন ঘটেছে গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকের(এপ্রিল-জুন) ঋণ বিতরণ ও আদায়ের চিত্রে।

দেশের শীর্ষ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।সবচেয়ে বড় এনজিও হিসেবে বাংলাদেশ ছাড়াওবিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুনাম রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। গত২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে গড়েপ্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছেব্র্যাক। এর মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির ঋণবিতরণের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৯৩০ কোটিটাকা। কিন্তু করোনার কারণে অর্থবছরের শেষপ্রান্তিকে তা ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকায় নেমেএসেছে। অর্থাৎ আগের প্রান্তিকের তুলনায় শেষপ্রান্তিকে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৮১ দশমিক ৫২শতাংশ।

কভিডকালে ঋণ বিতরণ ও আদায়ে নতুন পদক্ষেপনিয়েছে ব্র্যাক। প্রথাগত কার্যক্রমের বাইরে নতুন ওইনোভেটিভ কর্মসূচির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ শুরুকরেছে সংস্থাটি। সেসব কার্যক্রমের মাধ্যমে ঋণবিতরণে গতিও এসেছে। তবে আদায় কার্যক্রমপুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শিগগিরই আদায়কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন ব্র্যাকমাইক্রো ফাইন্যান্সের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তাশামস আজাদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরাঅনুধাবন করতে পেরেছি যে গ্রামীণ অর্থনীতি ঘুরেদাঁড়াতে এখনই প্রচুর অর্থায়ন প্রয়োজন। অনেকগ্রাহকই ঋণ পেলে খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষমহবে। এজন্য আগের ঋণ পরিশোধ করতে পারেনিকিন্তু ঋণ নিতে সক্ষম এমন প্রায় আড়াই লাখগ্রাহককে রিফাইন্যান্সিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ঋণপ্রদান করেছে ব্র্যাক। এ কর্মসূচির ফলে এখনঅনেকে দুটো ঋণই পরিমিত মাত্রায় শোধ শুরুকরেছেন। ফলে সার্বিকভাবে ঋণ আদায় ও বিতরণেযে গতিহীনতা তৈরি হয়েছে সেটি থেকে ব্র্যাক দ্রুতস্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারবে বলে আশা করছি।

করোনার আঘাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় থমকেযায় দেশের আরেক শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়নসংস্থা আশার। প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থবছরের প্রথম তিনপ্রান্তিকে গড়ে ৮ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা ঋণবিতরণ করেছে। এর মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিকে(জানুয়ারি-মার্চ) ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৮হাজার ৯২০ কোটি টাকা। কিন্তু শেষ প্রান্তিক বাএপ্রিল-জুন সময়ে এটি মাত্র দেড় হাজার কোটিটাকায় নেমে আসে। ফলে তিন মাসের ব্যবধানেপ্রতিষ্ঠানটির ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৮৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে আশার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ওআশা ইন্টারন্যাশনালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তামো. এনামুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, দেশেরঅর্থনীতিকে দ্রুত আগের অবস্থানে ফিরতে সহায়কভূমিকা নিতে পারে এনজিওগুলো, যারা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য কিংবা অন্যান্য নানা উদ্যোগে ঋণবিতরণ করে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপহলে সামনের দিনে প্রতিষ্ঠানগুলোর মন্দ ঋণবাড়তে পারে। এতে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো আরো রুগ্ণহতে পারে। তবে আশার ঋণদান কার্যক্রম সম্পূর্ণসদস্য ও নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। বৈদেশিকনির্ভরতা একেবারেই নেই বললেই চলে। তারল্যপরিস্থিতি বিবেচনায় বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।অন্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় আশাতে একটি স্বাতন্ত্র্যঅবস্থা বিরাজ করায় কভিড সংকট খুব ভালোভাবেমোকাবেলা করতে পারবে তারা।

দেশের আরেক শীর্ষ বেসরকারি সংস্থা গ্রামীণব্যাংকের ঋণ কার্যক্রমেও বড় আঘাত হেনেছেকরোনা। প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থবছরের প্রথম তিনপ্রান্তিকে গড়ে ৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণবিতরণ করেছে। এর মধ্যে শুধু তৃতীয় প্রান্তিকেইবিতরণের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৪৩০ কোটিটাকা। কিন্তু মার্চে করোনার সংক্রমণ শুরু হলেএপ্রিল-জুন প্রান্তিকে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ বিতরণ ১হাজার ২৯০ কোটি টাকায় নেমে আসে। অর্থাৎ তিনমাসের ব্যবধানে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৮০শতাংশ।

ঋণ বিতরণের পাশাপাশি ঋণ আদায়ে ভাটা পড়েছেএনজিওগুলোর। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সার্বিকভাবেপ্রায় ৯৬ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা আদায় হলেওগত অর্থবছরে আদায় হয়েছে মাত্র ৮২ হাজার ৪৮০কোটি টাকা। গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে তারআগের প্রান্তিকের তুলনায় ঋণ আদায় কমেছে প্রায়৭৬ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক, আশা ও গ্রামীণব্যাংকের ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার৪৮০ কোটি টাকা, যা শেষ প্রান্তিকে ৫ হাজার ৫৯০কোটি টাকায় নেমে আসে। এর মধ্যে ব্র্যাকের ঋণআদায় ৯ হাজার ৮০ কোটি টাকা থেকে ২ হাজার৬০ কোটি টাকা, আশার ৮ হাজার ১৮০ কোটিটাকা থেকে ২ হাজার ২২০ কোটি টাকা এবং গ্রামীণব্যাংকের ঋণ আদায় ৬ হাজার ২২০ কোটি থেকে ১হাজার ৩২০ কোটি টাকায় নেমে আসে।

গ্রামীণ মানুষের একটি বড় অংশ এখনো ব্যাংক ওআর্থিক সেবার বাইরে রয়ে গেছে। সেখানেএনজিওগুলোর ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম গ্রামীণঅর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ খাতেরসঙ্গে জড়িত রয়েছে তিন কোটির বেশি মানুষ ।কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় এক কোটির বেশি মানুষের।এ অবস্থায় দেশের শীর্ষ তিন বেসরকারি সংস্থার ঋণবিতরণ ও আদায় কার্যক্রমে স্থবিরতা থাকলেসামনের দিনে মন্দ ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ারপাশাপাশি এনজিওগুলোর সম্প্রসারণমূলককার্যক্রমে গতিহীনতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ঋণনা পাওয়ার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোরকার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেনবিশ্লেষকরা।

ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ডডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) সাবেক নির্বাহীপরিচালক অধ্যাপক এম এ বাকী খলীলী এ প্রসঙ্গেবণিক বার্তাকে বলেন, মূলত কভিডের সময়ে ঋণআদায় কার্যক্রমে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞার কারণেইবিতরণ ও আদায় পরিস্থিতি কমেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোঋণ আদায় করেই তা পুনরায় বিতরণ করে। ফলেপ্রধান তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ কার্যক্রমেস্থবিরতা থাকলে গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারকার্যক্রম বিঘ্নিত হবে। ঋণ বিতরণ কার্যক্রমেস্থবিরতা থাকলে গ্রামের মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায়ফিরতে সম্পদ বিক্রি, অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণ গ্রহণ, সঞ্চয় ব্যবহার, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরঅনুদান বা মহাজনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যেতেপারে। এনজিওগুলো সেই নির্ভরতা কমিয়ে আনতেসহায়ক ভূমিকা নেবে। এজন্য দ্রুত এনজিওগুলোরকার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমেই সামনের দিনেকভিড পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২২
  • ১২:২৮
  • ৫:০৩
  • ৭:১০
  • ৮:৩৩
  • ৫:৪৩