বাজারে একের পর এক বেড়েই চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে আটা ও চিনি। বাজারে আটার দাম কেজিতে আরও চার-পাঁচ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। এদিকে বিপণনকারী কোম্পানিগুলো আটার দুই কেজির প্যাকেটের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। দুই কেজির প্যাকেটজাত আটা মিলছে ১০৮ থেকে ১১২ টাকায়, যা আগের চেয়ে ৮ থেকে ১০ টাকা বেশি। এ হিসাবে প্যাকেটজাত ও খোলা উভয় আটায় প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে চার থেকে পাঁচ টাকা। একইভাবে চিনির দাম বাড়িয়ে ৯০ টাকা করা হয়েছে। এক সপ্তাহে চিনিতে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন।
সরু চালের দাম কেজিতে গড়ে আরও তিন টাকা করে বেড়ে বেশি বিক্রি হওয়া নাজিরশাইল ৮৫ টাকা ও মিনিকেট ৭৬ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। গত সপ্তাহে নাজিরশাইল চালের দাম ছিল ৮২ টাকা এবং মিনিকেটের দাম ৭০ থেকে ৭২ টাকা। এ ছাড়া জিরার দাম কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৩৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া জিরা গতকাল ৪৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জিনিসের দাম বাড়ার বিষয়ে বিএনপি বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। এর মধ্যে আটার দাম আরেক দফা বাড়লো। ৫০ টাকার নিচে কোনো আটা পাওয়া যাচ্ছে না। দাম বাড়ার পর খোলা আটা বিক্রিও করছি না।
এত দাম বাড়লে মানুষ আটা খেতে চায় না। তিনি বলেন, চালের দাম প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে। চিকন চালের দাম আরও বেড়েছে। এ ছাড়া এই সপ্তাহে সবচেয়ে যে জিনিসটির দাম বেশি বেড়েছে সেটি হলো জিরা। বাজারে আসা ক্রেতারা তাদের হতাশা আর ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারে এসে কেনাকাটায় খেই হারিয়ে ফেলার কথা বলছেন সীমিত আয়ের মানুষেরা। বিএনপি বাজারে পণ্য কিনতে আসা রফিক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সবকিছুর দাম চড়া। প্রতিদিনই কোনো না কোনো জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু সরকারের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। দুই বছর আগেও এমন পরিস্থিতি ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, আগে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে বাজারে আসলে পুরো মাসের বাজার করা যেত। একই টাকার বাজার এখন মাসের অর্ধেক সময়ও যাচ্ছে না। বাজারে আসলে পকেট খালি হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু তেমন কিছুই বাজার করা যাচ্ছে না। এভাবে যদি আরও কিছুদিন চলে, তখন হয়তো আমাদের মতো মানুষদের না খেয়ে থাকতে হবে। তালতলা বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি একটি স্কুলের শিক্ষক জনি আহমেদ। সংসার চালানো অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। চাল, ডাল, ডিম, দুধ সবকিছুর দাম বেড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য খরচও অনেক বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংসার, বাচ্চাদের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই কেনা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের কাছে আমাদের মতো মানুষদের একটিই চাওয়া, সেটি হলো সবার কথা বিবেচনায় নিয়ে জিনিসের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া এবং একইসঙ্গে কঠোরভাবে বাজার মানিটরিং করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ বাজার মানিটরিং করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখলাম না। এটা আমাদেরকে হতাশ করে।
Leave a Reply