একটা সময় ছিলো যে সময়টাতে মানুষ কল্পনাও করতে পারতো না যে মাটির তৈরি হাঁড়ি পাতিল ব্যতীত অন্য কোন তৈজসপত্র ব্যবহার করা যাবে?
কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এর সবই সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের এই নব আবিস্কারের যুগে।অ্যালুমিনিয়াম,সিলভার,কাসা, গ্লাস, মেলামাইন, প্লাস্টিক ও নাইলন দিয়ে তৈরি হবে দৃষ্টিনন্দন ও নান্দনিক মানের ব্যবহারযোগ্য সব বাসনকোসন যা ছিলো কল্পনাতীত যা পরবর্তীতে বাস্তবে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে রূপ নিয়েছে।
শিল্পবিপ্লবের আগে মানুষ নিজেদের প্রয়োজন পূরনের তাগিদে নানা উপায়ে তৈজসপত্র ব্যবহার করতো নিজেদের ব্যবহারের জন্য। একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের আবিষ্কার আমাদের জীবন যাত্রাকে করেছে গতিময় ও অত্যন্ত সহজ। কিন্তু সিলভার, অ্যালুমিনিয়াম , মেলামাইন, গ্লাস, প্লাস্টিক বা নাইলনের তৈরি এসব তৈজসপত্র স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কতোটা উপযুক্ত তা নিয়ে স্বাস্থ্যবিশ্লেষকরা বলেন: প্লাস্টিক, নাইলন, সিলভার,অ্যালুমিনিয়াম,এবং মেলামাইনের তৈরি বাসনকোসনে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। তাই যতটা সম্ভব এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
কিন্তু মাটির তৈরি হাঁড়ি,পাতিল,কাসা,থালাবাটি,কলস,ফুলদানি, কলমদানি,পেয়ালা, সরাই মটকা পিঠে তৈরির ছাঁচ,মুড়ির ছাদনী,ঝাঝুর, গাছের চারা রাখার টব এসমস্ত মাটির তৈরি তৈজসপত্র ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কা একেবারেই নেই। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় আধুনিক মানের ভিআইপি রেস্টুরেন্টে ও পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতেও পোড়ামাটির তৈরি বাসনে রেস্টুরেন্ট ওয়েটারদের মাধ্যমে খাবার সার্ভ করা হয়ে থাকে। কিন্তু ঐতিহ্যর ধারুক ও বাহক গ্রাম-গঞ্জে এখনো কোথাও কোথাও নজরে পড়ে কুমারের হাতে মাটির তৈরি নজরকাড়া এসব তৈজসপত্রগুলো।
একটা সময় ছিলো যখন গ্রাম-গঞ্জের হাটগুলোতে মাটির তৈরি বিভিন্ন রকমের হাড়িপাতিল উঠে ভরে যেতো। এছাড়া গ্রাম-গঞ্জে অনেক হকাররা ফেরি করে মাটির তৈরি তৈজসপত্রগুলো বিক্রি করতো। কুমারের হাতে মাটির তৈরি গৃহস্থালির ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যাদি,পুতুল খেলনা, প্রতিকৃতি,টপ শোপিস দেখা যেতো যা এখন আর একেবারেই চোঁখে পরে না বললেই চলে। যখন অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার ছিলো না তখন মানুষ কুমারের মাটির তৈরি তৈজসপত্রই ব্যবহার করতো।
সময়ের ক্রমবিবর্তনের ধারায় মানুষের সৌখিনতা বেড়ে যাওয়ার ফলে কৃত্রিম তৈরি জিনিসের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু তাতেই ঘটছে বিপত্তি। যার দরুন কান্সারের আশঙ্কা বেড়েই চলছে। এথেকে পরিত্রাণের জন্য মাটির তৈরি তৈজসপত্রের ব্যবহার স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে বড় রকমের ভূমিকা রাখবে এবং বেঁচে যাবে মৃতপ্রায় ক্ষুদ্র এই মৃৎশিল্পখাটি।
Leave a Reply