1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  3. hdtariful@gmail.com : Tariful Rumon : Tariful Rumon
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন

করোনায় কেমন কাটছে ঈদ!

শরিফুল ইসলাম
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ধনী-গরীব বৈষম্য আছে বাংলাদেশেও। দেশের অন্য জেলাগুলোর মত নাটোরের গ্রাম থেকে শহরেও আছে নিম্নবৃ্ত্ত, মধ্যবৃত্ত ও উচ্চবৃত্ত মানুষের বাস। জীবনের সাধারণ নিয়মে জন্ম-মৃত্যু হলেও জীবিকায়, চলনে, বলনে ভিন্নতা আছে এসব মানুষের। কিন্তু প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে যার যা আছে তাই নিয়েই সুখী থাকতে চায় মানুষ। সে সুখে বিষ ঢালছে করোনা নামক অদৃশ্য শত্রু।

করোনার ভয়াল থাবা তছনছ করে ফেলেছে পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। ছোট্র একটি ভাইরাস হার মানিয়ে দিচ্ছে বাঘা বাঘা দেশের তথ্য-প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের আবিস্কারকে। গরীব দেশ থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির চাকাকে বারবার তুমুল আঘাত করছে ক্ষুদ্র এ অণুজীব। বিষন্ন হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। দিনমজুর, গরীব ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন ও জীবিকার আহাজারি ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। শত সহস্র লাশের গন্ধে ভারি হয়ে উঠছে সে বাতাস। অন্ধকার কেটে যায় প্রকৃতির নিয়মে, সেই আঁধার কাটাতে আশার আলো হয়ে এসেছে করোনা ভাইরাসের টিকা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক মোড়লগীরি অথবা কুটনৈতিক কারণে মাঠ পর্যায়ে করোনার সাথে খোড়ার মত যুদ্ধ করছে সে টিকা। তবু, থেমে নেই মানুষের জীবন। ভয়ংকর এ মহামারীর মধ্যেও সময়ের সাথে আসছে পবিত্র উৎসব ও আনন্দের দিন। কঠিন এ সময়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ উল ফিতর কেমন কাটবে সে প্রশ্ন হয়তো সবার!

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া পরামর্শ মতে সরকার নিয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। মানুষকে ঘরে রাখতে, চলাচল সীমিত করতে, জনসমাগম হ্রাস করতে, দিয়েছে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও বিধি-নিষেধ। এসব সিধান্ত তেমন সফলতার মুখ না দেখলে চালু হয়, কঠোর লকডাউন। মৃত্যুহার ও করোনা সংক্রমণ লকডাউনের কারণে কমলেও চরম হুমকির মুখে পড়েছে সাধারণ, গরীব, খেটে খাওয়া, দিনমজুর এমনকি মধ্যবৃ্‌ত্ত মানুষের জীবন-জীবিকা।

নাটোরের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বাজারে স্টিল আলমাড়ির ব্যবসা করেন মো. শিমুলের। লকডাউনে দোকান খুলতে পারেননি শিমুল। বেঁচাবিক্রি বন্ধ। কিভাবে দিন চলছে জানতে চাইলে শিমুল বলেন, ব্যবসা বন্ধ থাকায় খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। কিন্তু সংসারের খরচ হচ্ছেই। বৌ, বাচ্চাকেতো না খাইয়ে রাখা যায় না। ব্যাংকে অল্প কিছু টাকা ছিল, সেই টাকা দিয়েই কোনোমতে চালিয়ে নিচ্ছি। তবে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই টাকা শেষ হয়ে যাবে। এভাবে দোকান বন্ধ থাকলে কিভাবে সংসার চলবে, কিভাবে আবার ব্যবসা চালু করবো, এ নিয়ে মানসিকভাবে খুব হতাশাগ্রস্থ আমি। ঈদ কিভাবে করবো চিন্তাই করতে পারছি না।

গুরুদাসপুরের গাড়িষাপাড়া ওভারব্রিজের পাশে ছোট একটি টংয়ের দোকানে চা, পান-সিগারেট বিক্রি করে সংসার চালান মজনু মিয়া। লকডাউনের কারণে ব্রিজে লোকজন তেমন আর আসেনা। তার বিক্রিও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ধান কেটে, দুই চারদিন অন্য মানুষের বাড়িতে কামলা দিয়ে চললেও দৈনিক আয় না থাকায় বিষন্ততায় ভুগছেন বলে, তিনি জানান।

বাসে হেলপারি করে জীবিকা নির্বাহ করে রুহুল আমিন। লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় থাকায় কামাই রোজগার বন্ধ তার। ধার-দেনা করে কোনোমতে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পেটে ভাত নাই, ঈদের আনন্দ কই থেকে আসবে। বাস চালু না হলে না খেয়ে মরে যেতে হবে।’

লকডাউনের মধ্যে শপিং মল সীমিত পরিসরে খোলার অনুমতি দিলে কয়েকদিন ভালোই বেঁচাকেনা হচ্ছে বলে জানান স্বপ্না গার্মেন্টেসের পরিচালক মো. সাগর শাহ। একটা দোকানে অনেক খরচ হয়, দোকান বন্ধ করে রাখলে সেই ব্যবসা আবার চালু করা খুব কঠিন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পবিত্র ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে লোকজন আসছে জামা-কাপড় কিনতে। কিন্তু মানুষের হাতে আগের মত টাকা নাই। তাই, এখন যেটা না হলেই না, সেগুলা কিনছেন।’

চাঁচকৈড় বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা শাহরিয়ার শাওনের। ঈদ উপলক্ষে কেমন বেচাকেনা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের সব মানুষ সব কিছু বেশি বেশি করে কিনে। এবার আর্থিক সংকট সব ঘরেই। খুব প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনছেন মানুষ।

এদিকে, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে দুর্দশা দূর করতে দিনরাত্রি কাজ করে যাচ্ছে সরকার। কিছু অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারি ও প্রতিনিধির কারণে সরকারি সেবা থেকে মানুষ বঞ্চিত হলেও সৎ, যোগ্য, ও দক্ষ কর্মকর্তা, কর্মচারি ও প্রতিনিধিদের জন্য সর্বক্ষেত্রে সেবা, সাহায্য ও সহযোগিতা পাচ্ছে দেশের মানুষ। সরকারের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যেগেও এ দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে, বাড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের মানবতার হাত দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে।

গুরুদাসপুর উপজেলায় করোনাকালে ঈদ সামনে রেখে সরকারিভাবে কি কি সাহায্য, সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), মো. তমাল হোসেন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ব্যাপকভাবে সাহায্য, সহযোগিতা প্রদান করছেন। গুরুদাসপুর উপজেলায় এবার আমরা বরাদ্দ পেয়েছি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪০০টাকা ও পৌরসভায় পেয়েছি ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৪৫০ টাকা। এগুলো কার্ড অনুসারে দেওয়া হবে। এছারাও নাটোর জেলায় ভিজিএফ (আর্থিক) এবং জি আর (ক্যাশ) বাবদ মোট বরাদ্দ হয়েছে ৬ কোটি ৮৮ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকা। ‘

ব্যক্তিগত অর্থ বা সরকারিভাবে পবিত্র ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে এই করোনাকালীন সময়ে কোনো সাহায্য-সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবেন কিনা জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা চেয়ারম্যান, মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ২৫ রোজার পর থেকে আমার সাধ্য অনুযায়ী কিছু অনুদান মানুষকে দিবো। কিভাবে এবং কাদের দেওয়া হবে, সে পরিকল্পনা এখন করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদান উপজেলা টাক্সফোর্সের করা তালিকা অনুসারে খুব শীঘ্রই প্রদান করা হবে।

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। করোনার এই মহামারি কালে গোপনে গোপনে অনেক মানুষ তাদের মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সাধারণ, আয় রোজগারহীন, গরীব, ও খেটে খাওয়া মানুষদের কল্যাণে, সাহায্যে ও সহযোগিতায়। গুরদাসপুর ও বড়াইগ্রামে সেরকম একজন মানুষ আর্থিকভাবে সাহায্য, সহযোগিতা ও আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘করোনাকালে পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে ব্যাপক পরিকল্পনা আছে আমাদের। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই মানুষের সেবায়, মানুষের কল্যাণে যে পরিকল্পনা আছে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। মানুষকে জানিয়ে কিছু করতে চাইনা, গোপনে গোপনে সাহায্য করতে চাই সেসব মানুষদের যাদের প্রকতপক্ষেই সাহায্য, সহযোগিতা দরকার।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭
  • ১২:৩০
  • ৫:০৬
  • ৭:১৭
  • ৮:৪২
  • ৫:৪০