ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের কুমড়ী মোড় হইতে নহাটা বাজার পর্যন্ত যাতায়াতের প্রধান সংযোগ নতুন সড়কের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ও অফিস সুত্রে জানা যায় নিয়ম না মেনে রাস্তা গভীর করা, ফ্যালাসাইটিং নির্মাণে রড কম, নি¤œমানের রড ব্যবহার, তিন নাম্বার ইটের খোয়া, নিম্ন মানের বালি, প্রাক্কলনে আছে ইউড্রেন নির্মাণে পাথর ব্যবহার করা কিন্তু তা না করে ইউড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে ৩ নাম্বার ইটের খোয়া দিয়ে। এমনকি রাস্তা খনন করে রোলার না দিয়ে এলজিডি অফিসের যোগসাজশসে তড়িঘড়ি করে বালি ফেলা ও বালিতে পানি ও রোলার না দেওয়া। বহু বছরের পুরাতন দুটি রিং কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেখে আর ও ৬ টি ইউড্রেন নতুন নির্মাণ পাশাপাশি করার অভিযোগ উঠেছে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান নান্দাইলের শহীদ এন্টারপ্রাইজ এর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে ভিত্তি প্রস্থর থাকলেও পাওয়া যায়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের কাজ নির্মাণের কোন ধরনের সাইনবোর্ড। ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর আইআরডিপি প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বাস্তবায়নে, চুক্তিমূল্য (প্রায়) ১,২৪,০১,১৬১ (এক কোটি চব্বিশ লাখ, এক হাজার একশ একষট্টি) টাকা ব্যয়ে চেইঃ০০- (১৪০০) মিটার উন্নয়ন কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ (এম পি)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বহু বছরের পুরাতন দুটি রিং কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেখে আর ও ৬ টি ইউড্রেন নতুন নির্মাণ করেছে পাশাপাশি রাস্তায় পুরাতন যে দুটি রিং কালভার্ট আছে তা যে কোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। অফিসের লোক কোনদিন দেখছি না কাজ দেখা-শুনা করতে ঠিকাদারের লোকের ইচ্ছে মত কাজ করছে। তারা করলে যে কিভাবে করে পাশাপাশি দুটি ড্রেন নির্মান , ইট, বালু, ইটের খোয়া, রড বেশী বালা না, কিতা কইতাম কইলে কেলা হুনবো আমরার কথা, কিন্তু দীর্ঘ ৭ মাস পার হলেও কোন ব্যবস্থ্যা নেয়নি কেউ। এমনকি রাস্তায় যে বালু দিয়েছিল তা মানুষের ফসলি জমিতে চলে যাচ্ছে এতে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশংঙ্কা আছে।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ পথের যাত্রীদের। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার ধেরুয়া কড়েহা, চল্লিশা কড়েহা, রামকৃষ্ণপুর, পাজুহাটী, নহাটা কুমড়ী একাংশ ও পার্শবর্তী নেত্রকোনা সদর উপজেলার মদনপুর, নন্দীপুর, ঢুলিগাতী, তিয়শ্রী, ওয়াইলপাড়া, কামারউরা, বালী, মহিষাহাটী, খলাপাড়া, ও কেন্দুয়া উপজেলার ভূইয়াপাড়া, হোসেননগর, দৈলা গ্রামসহ তিনটি উপজেলার ১৮টি গ্রামের একমাত্র ভরসা এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন। ১৪০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তাটি প্রায় ৭ মাস আগে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
তবে খুব ধীরগতিতে সে সময় নির্মাণ কাজ চলার পরে ৩ মাস যাবৎ পুরোপুরি এ রাস্তা নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলার অন্যান্য উন্নয়ন কাজ শুরু করা হলেও এ রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।
এ রাস্তাটি রাস্তার প্রায় ৭মাস ধরে খুঁড়ে রাখায় অনেক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ত পানি জমে থাকে। বৃষ্টির সময় পানি জমে এতো পানি হয় যে ওইখান দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির অর্ধেকাংশ পানিতে ডুবে যাত্রীদের শরীর পানিতে ভিজে যায়।স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী এমনকি গাড়ী উল্টে গিয়ে অনেক দূর্ঘনা ঘটে আহত হয় আহত হয় অনেকে।
এ ব্যাপারে ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী যাত্রীরা জানান, এ রাস্তার উপর দিয়ে কোন গাড়ি যেতে চায়না ফলে গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তিন থেকে চার কিলোমিটার ঘুরে কয়েকগুন বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
গাড়ি চালক জয়দুল ইসলাম জানান, এ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালালে গাড়ির টায়ার স্পিংসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। তাই সচরাচর আমরা এই রাস্তায় গাড়ি চলাচল করতে পারিনা আমরা সকল গাড়ীর মালিক মিলে ১০ হাজার টাকার বালি কিনে রাস্তায় দিয়েছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার শহিদ মিয়া মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে রাস্তার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া ব্যবহারের অনিয়মের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে অফিসে যাওয়ার কথা বলে মোবাইল সংযোগ কেটে দেন।
এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আল ফারুখ জানান এই রাস্তার বিষয়ে উপজেলা মাসিক মিটিংএ আলোচনা করেছি ৭ মাস পার হলেও কেউ কোন ব্যবস্থ্যাই নেয়নি দ্রুত রাস্তা নির্মানের দাবী জানাই।
উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মোঃ ওয়াহেদুল হক জানান পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে ইউড্রেন নির্মান করা হয়েছে এটা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে পরিবর্তন হলে কাজ শুরু করা হবে।কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply