বগুড়ায় এসিল্যান্ড এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ট্রাক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। জেলার শাহাজানপুরের বীরগ্রাম এলাকায় মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে। ট্রাক মালিকরা জানায়, কাগজপত্র দেখার নামে শাজাহানপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক খান এবং শাজাহানপুর থানার এস আই শামীম ট্রাক ড্রাইভারদের থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। ড্রাইভাররা সেই টাকা দিতে না পারায় ৭টি ট্রাক ভাঙচুর করেন তারা। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মালিকরা। বিষয়টি সম্পর্কে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক খান কিছুই জানেন না বলে জানালেও এসআই শামীম বলেছেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক খানের উপস্থিতিতে তার ড্রাইভার খায়রুলসহ তার সাথে থাকা আরো ৪/৫ জন ট্রাকগুলো ভেঙেছে। পুলিশ কোনভাবেই ভাঙচুরের সাথে ছিলো বলেও জানান ওই এসআই।
পরে ড্রাইভারদের কাছে কাগজপত্র দেখতে চান তারা। ড্রাইভাররা সব কাগজপত্র দেখানোর পর তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। ড্রাইভাররা সেই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক খানের ড্রাইভার খায়রুল, এসআই শামীম এবং এসিল্যান্ডের সাথে আশা আরো ৪/৫ জন মিলে ট্রাকগুলো ভাঙতে শুরু করেন। অভিযোগে আরো বলা হয়, ট্রাকগুলোর চাকা শাবল মেরে নষ্ট করে দিয়েছেন তারা। এছাড়াও ট্রাকগুলোর ক্লাস, দরজা, হেড লাইটসহ ব্যাবপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেছেন।
ট্রাকগুলোর মালিক, হোসেন শরীফ মনির, পবিত্র কুমার সিংহ, রবিন আহসান বলেন, জেলা প্রশাসক থেকে অনুমতি নেয়া একটি পুকুর খননের মাটি বহন করছিলো তাদের ট্রাক। কোন কারণ ছাড়াই উল্লেখিত কর্মকর্তারা তাদের ট্রাকগুলোর ক্ষতি সাধন করেছেন। তারা বলেন, আমাদের কোন অপরাধ থাকলে সেটি প্রচলিত আইনে তারা ব্যবস্থা নিতে পারতো। তারা কোন আইনে এই ট্রাকগুলো ভাঙচুর করেছে সেই বিষয়টি জানতে আমরা মাননীয় আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার প্র¯ুÍতি নিচ্ছি। ট্রাক মালিকরা আরো জানায়, মাঝে-মধ্যেই প্রশাসনের কিছু অসাদু কর্মকর্তা আমাদের ট্রাক ভাংচুর করেন। মাস দেড়েক আগে শাহানপুরে এভাবেই ১১টি ট্রাক এবং চলতি বছরের শুরুর দিকে এক দিনে আরো ৩২টি ট্রাক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হাতে ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।
বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, মাঝে মধ্যেই কাগজপত্র চেক করার নামে ট্রাক মলিকদের থেকে রাস্তায় চাঁদা তোলেন প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। গতকালও একইভাবে চাঁদার দাবিতে ট্রাক ভেঙেছেন শাজাহানপুরের এসিল্যান্ড এবং পুলিশের এসআই শামীম। বিষয়টি নিয়ে মালিক পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এঘটনায় আমরা উচ্চ আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শাজাহানপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক খান বিষয়টি জানেন না বলে এক কথায় উত্তর দিয়েছেন। তবে শাজাহানপুরের এসআই শামীম বলেন, এসিল্যান্ডের উপস্থিতিতে তার ড্রাইভার এবং তার সাথে আসা আরো ৪/৫ জন ওই ট্রাকগুলো ভেঙেছে। তিনি নিজে ভাঙচুর করেননি বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply