1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. hdtariful@gmail.com : tariful Rumon : tariful Rumon
  3. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন

বাইস্কোপের নেশায় আমায় ছাড়ে না!

আঃজলিল
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২১

কালের বিবর্তনে বাইস্কোপ এখন শুধুই সৃতি”

শার্শা যশোরঃ
তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বাইস্কোপ, বাইস্কোপের নেশায় আমায় ছাড়ে না। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে গায়ে। কোনো প্রেয়সী তার প্রেমিককে এখন আর বাইস্কোপ দেখাতে নিয়ে যেতে বলে না। বাইস্কোপওয়ালাকেও এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। “কি হবে রে বাবা এসব ঘেঁটেগুঁটে। যা হারাবার তা হারিয়েই যাবে।

যা চলে যাবার তা রুখবে সাধ্য কার? ধরে রাখবে কে? প্রযুক্তির যে জোয়ার। না হারিয়ে যাবে কোথায়? উপায় নাইরে বাজান, উপায় নাই। শিলপাটাটা ধারকাটাওয়ালা, ঘোলওয়ালা, কটকটিওয়ালা, কুলুরা, বেদেরা আজ কোথায় হারিয়ে গেলোগো বাবা? সবাই হয়তো আছে। শুধু পেশাটা বদলে ফেলেছে।

আবার হয়তো অনেকেই মরে গেছে। কিছুই করার নাই। মানুষের জীবনাচরন বদলে গেছে। তাই তার অনুষঙ্গ হারিয়ে যাবে এটাইতো স্বাভাবিক। ঈদের আনন্দ, হিন্দুদের পূজা পার্বন আর বিভিন্ন মেলায় দেখা যেত বাইস্কোপ।এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। ছোট্ট শিশু থেকে আরম্ভ করে বুড়োরাও দেখতো একটা বক্সের মধ্যে সুন্দর করে পোস্টার সাজানো বাইস্কোপ” -এমনি করে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার শংকরপুর ফেরিঘাট এলাকার সোলায়মান বলেন বায়স্কোপ গ্রামাঞ্চলে ভ্রাম্যমান সিনেমা হলের ছবি নামে পরিচিত।

গাঁয়ের ছেলে-বুড়োরা ছুটত তার পেছন পেছন। আবার কেউ কেউ তাকে ছবিওয়ালাও বলত। হাতে থাকতো তার একটা ডুগডুড়ি। বাজাতে বাজাতে গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে হাঁটতো। দল বেঁধে সবাই একখানে জড়ো হতো গাঁয়ের শিশু-কিশোর ও কুলবধুরা। তারপর শুরু হতো সিনেমা। তার আগে অবশ্যই টিকিট কিনে নিতে হতো। বক্সের চারখানা ফুটোয় আট জোড়া চোখ লাগিয়ে সেই স্বপ্নের সিনেমা দেখতো গাঁও-গেরামের মানুষরা।

সে সবই এখন সূদুর অতীত। কারো মনে পড়ে, কারো পড়ে না। এখন আর দেখা যায় না সেই ছবিওয়ালাকে। কালেরগর্ভে কোথায় যে হারিয়ে গেলো তারা তা বর্তমান প্রজন্মের কেউ জানেনা।চাকরিজীবি ব্যাবসায়ী সামাজিক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্তরা বলেন, আমি আমরা বা সবাই নিজেরাই দেখেছি ওই বাইস্কোপ। দুপুরে বাড়ির উঠানে বক্সটা নিয়ে বসত। বাড়ির সবাই পর্যায়ক্রমে দেখতাম। মজাই লাগতো। সেই ছবিওয়ালা আজ আর নেই। আস্তে আস্তে সব বিলীন হয়ে যাবে আমাদের অতীতের সব ঐতিহ্য।

আমরা এখন আকাশ সংস্কৃতির ঘেরাটোপে বন্দী। ওই দেখা যায়, কেমন মজা/তাকদি না দিন জাবেদের ঘোড়া চইল্যা গেলো/ইলিয়াছ কাঞ্চণ আইস্যা গেলো/ চম্পাকে নিয়ে চইল্যা গেলো,আরে আরে কেমন মজা/ দেখেন তবে তক্কা মদিনা/তারপরেতে মধুবালা/এক্কাগাড়ীতে উত্তম কুমার আর সুচিত্রা সেন। এরকম সুরের ধারা বর্ণনা দিয়ে গ্রাম্য জনপদে বাইস্কোপ দেখাতেন বাইস্কোপওয়ালারা।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে- রূপগঞ্জে এখন আর এমন মজার বাইস্কোপ দেখা যায় না। ছোট্টবেলায় হাট-বাজারে, মেলায় দেখা যেতো বাইস্কোপ। আধুনিক বিজ্ঞানের মর্ডাণ সময়ে সেলুলয়েডের রঙিন যুগে এখন আর চোখেই পড়ে না এ মজার বাইস্কোপ। এখন শুধুই স্মৃতি। হাটবাজার মেলা ছাড়াও বাইস্কোপওয়ালারা মাথায় করে গ্রামে গ্রামে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বাইস্কোপের বাক্সটা নিয়ে মানুষকে ছবি দেখাত।

তার হাতে থাকতো বাজনা বাজানোর জন্যে একটা বিষেশ ধরনের বাদ্যযন্ত্র। যে কারো বাড়িতে পৌছেই সেই বাজনা বাজিয়ে আওয়াজ দিত। বলতে শোনা যেত বাইস্কোপ দেখবেন গো বাইস্কোপ। তখন আশেপাশের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা মা-দের কাছে কাকুতি মিনতি করতো ওই বাইস্কোপ দেখার জন্যে। মায়েরা তখন বিরক্ত হয়ে ধানের গোলা থেকে বা চালের মটকা থেকে এক সের ধান বা চাল দিতেন। আর পাবি না কিন্তু এও বলে দিত। ছেলে মেয়েরাও রাজী হয়ে বলতো হ মা আর নিমুনা, আর দেখুম না। এই বলেই ধান নিয়ে ছুটে যেতো বাইস্কোপওয়ালার কাছে।

বাইস্কোপওয়ালা তার ব্যাগের মতো থলেতে ধান ঢেলে রেখে দিত। ধান নিতে দেরি, আর বাইস্কোপের কাছে হাঁটু গেড়ে বসতে দেরি হতো না। পর্দা ওঠলো বাইস্কোপের, মুখের মাঝে দুই হাত দিয়ে চুপি দিয়ে দেখতে থাকতো বাইস্কোপ। বাইস্কোপওয়ালা এক হাতে বাইস্কোপের রিল ঘুরাতে থাকতো আর বলতে থাকতো কি যাচ্ছে আর সামনে কি আসছে। বলতে শোনা যেতো কি সুন্দর দেখা গেলো আলোমতি আইস্যা গেলো, কি সুন্দর দেখা গেলো প্রেমকুমার আইস্যা গেলো ইত্যাদি।

বর্তমান সেলুলয়েডের রঙিন ফিতা, অনলাইন আর ইন্টানেটের যুগে এখন আর সেই মনোরম বাইস্কোপ দেখাই যায় না। ছোট্টবেলার সেই বাইস্কোপ এখন শুধুই স্মৃতি। মাত্র দশ পয়সা দিয়ে অথবা এক হেড় বা এক পট ধান বা চাল দিয়ে দেখা যেতো এই বাইস্কোপ।

পরিবেশ আন্দোলনের রূপগঞ্জ অঞ্চলের নেতা লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, ৩০ বছর আগেও বাইস্কোপওয়ালাকে আমার গ্রাম রূপসীতে ছবি দেখাতে আসতে দেখেছি। কতই না কান্ড করতাম এ বাইস্কোপ দেখার জন্যে। বাবা-মায়ের অনেক বকুনি খেয়েও বাইস্কোপ দেখতাম। আর কতই না মজা করতাম , আনন্দ পাইতাম এ বাইস্কোপ দেখে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সভ্যতা আমাদের অনেক কিছু উপহার দিয়েছে। কেড়েও নিয়েছে বাইস্কোপের মতো আরো অনেক কিছু।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১৬
  • ১২:৩৮
  • ৪:৫৮
  • ৬:৪৫
  • ৭:৫৮
  • ৬:২৭