রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভুষনছড়াসহ বিভিন্ন স্থানে টিসিবি পণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ভুষনছড়া ইউনিয়নে স্বল্প আয়ের মানুষ ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবি পণ্য ক্রয়ের তালিকায় কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে এর নিয়ন্ত্রণ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যদের হাতে। ওই ইউনিয়নে কার্ড বিতরণেও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি একটি সুত্র হতে জানা যায়, স্থানীয় কয়েকজন ইউপি সদস্যর প্রভাবে কয়েকজন মিলে বস্তাভর্তি করছেন টিসিবি পণ্য। ইউপি সদস্যরা বলছেন তারা কিছুই জানেন না, তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস উপজেলা প্রশাসনের।
খবর নিয়ে জানা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে স্বল্পমূল্যে তিনটি খাদ্যপণ্য-চাল, ডাল ও তেল বিক্রি কর্মসূচি শুরু করেন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি। এ কর্মসূচির আওতায় বরকলের পাচঁটি ইউনিয়নে টিসিবি পণ্য বিক্রিতে ডিলার নিযুক্ত করা হয় । অভিযোগ রয়েছে ফ্যামিলি কার্ড অনলাইনকরণের সময় ইউপি সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়েছেন। বিশেষ করে ক্ষমতাসীনরা নিজ দলীয় ও ইউপি সদস্যরা নিজ নিজ সমর্থকদেরই কার্ড দিতে চেষ্টা করছেন। ফলে প্রকৃত নিম্ন আয়ের মানুষদের অনেকেই সরকারি এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই সঙ্গে টিসিবি পণ্য বিতরণেও প্রভাব খাটিয়ে অন্যান্য সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কার্ড জিম্মি করে রাখেন ইউপি সদস্যরা। পরে সেই কার্ড দেখিয়ে ইউপি সদস্য ও তার অনুসারীরা ডিলারদের কাছ থেকে কিছুদিন টিসিবির পণ্য ছাড়িয়ে নিয়েছেন।পরবর্তীতে উক্ত ইউনিয়নের সকল সুবিধাভোগী ব্যাক্তির কার্ডগুলোকেই তারা হস্তগত করেছেন। ভুষনছড়া ইউনিয়নের অধীনে থাকা হতদরিদ্রের কাছ থেকে তাদের কার্ডগুলো ইউপি সদস্যরা ডিলারের সহযোগীতায় নিয়ে নেন। এরপর থেকে বিগত প্রায় ৯ মাসের অধিক সময় ধরে ইউপি সদস্যদের একক সিদ্ধান্তে নিজস্ব লোকদের হাতে তার স্বাক্ষরিত একটি থেকে ১০ টি করে স্লিপ ধরিয়ে দেন। এর ফলে যাদের নামে কার্ড হয়নি এমন ব্যক্তিকরাও পণ্য উত্তোলন করেন বলে কার্ডধারীরা স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন।
ওই ইউনিয়নের ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সবুর তালুকদার ৬নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিন, ৮নং ওয়ার্ডের জলিল টিসিবি পণ্য বিতরণকালে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের লোক দিয়ে বস্তাভরে পণ্য নিয়ে যায়। ফলে সুবিধাভোগীদের পণ্য দিতে পারে না টিসিবি ডিলার।
সংশ্লিষ্ট ডিলারের প্রতিনিধি মো ফারুক বলেন, আমাদের অনেক সময়ে কিছু করার থাকে না। ইউপি সদস্যদের সিল ও স্বাক্ষরের ওপড় ভিত্তি করে আমরা টিসিবি পণ্য দিয়ে থাকি।তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে তাদের কথা মতো তাদের পাঠানো লোকের কাছে মালামাল দিতে হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো মামুনর রশিদ জানান,টিসিবি’র সুবিধাভোগীদের কার্ডগুলো টিসিবি ডিলার ফারুখের কাছে ছিলো।সেগুলো পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে পুনরায় কার্ড প্রনয়নের চেষ্টা চলতেছে।
টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, অনিয়মের বিষয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যানকে উক্ত বিষয়টি সমাধানের জন্য তালিকা অনুযায়ী কার্ড প্রনয়নের কাজ করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply