1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন

ফেরত চাই হারানো দেশীয় খেলা

হাসান শাওন
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২

মনে পড়বে শুধু সে গান, “আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম . . .” কেউ হয়তো সে গানও ভুলে গেছেন নাগরিক যাতাকলে। ছিল বিস্তৃর্ণ মাঠ। সবুজের সমারোহ। হাত বাড়ালেই নদী।

খেলা তখন বোকা বাক্সবন্দি ছিল না। গ্রামের মাঠে মাঠে চলতো হাডুডু, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, বৌচি, এক্কাদোক্কা, লুকোচুরি, কানামাছি, ছোঁয়াছুঁয়ি, সাতচাড়া, ডাঙগুলি, কুমির তোর জলে নেমেছি..এমন কত খেলা! বহু প্রজন্ম খেলা বলতে এগুলোকেই বোঝে। খাঁটি দেশীয় খেলা এসব। বিদেশি খেলা ছিল না এমন না। ফুটবল ছিল।

বাংলা জনপদে ছিলেন একজন ফুটবলের জাদুকর সামাদ। যিনি তার আমলে বিশ্বজুড়ে ফুটবল শৈলীর স্বীকৃতি পেয়েছেন। কিন্তু ফুটবল তখন পর্যন্ত গ্রাম বাংলার প্রধান খেলা ছিল না। দেশীয় খেলায়ই মেতে থাকতেন বেশিরভাগ মানুষ। হায়, সেদিন!

আজকের শিশু, কিশোর, তরুণরা এসব সম্পর্কে প্রায় জানেনই না। খেলা বলতে এখন যেন একটাই। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা দূষণের সুন্দরবন ও এর বাঘের খবরে অনেকে উদাসীন থাকলেও জাতীয় ক্রিকেট দলকে ডাকা হচ্ছে “টাইগার” নামে। নিঃসন্দেহে বিশ্বপর্যায়ে ক্রিকেট দলের উত্থান ও সাফল্য আমাদের জন্য গর্বের। কিন্তু হাহাকার থাকবে হারানো খেলার জন্য।

বিশ্বায়নের নামে এভাবেই একক পুঁজির কর্তৃত্বে বিপন্ন হচ্ছে বহুমাত্রিকতা। খেলার জগত এর ভিন্ন থাকবে কেন? লোকজ গ্রামীণ খেলা তাই বিলীন প্রায়। আর জনপ্রিয় খেলার নামে চলছে গুটি কয়েকের কদর। আর ক’দিন পর আমাদের স্মৃতি থেকেও হয়তো মুছে যাবে সেই মুখরিত খেলার দিন।

শহরের শিশুদের সমস্যা বহু। মাঠ হাতে গোনা। অনেক স্কুলে পর্যন্ত নেই খেলার মাঠ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট বন্দি শিশুরা খেলছে ঘরে, এক চিলতে বারান্দায় অথবা ছাদে। তার চেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে শিশুদের ডিভাইস আসক্তি। দিনের বড় একটা সময় তাদের কাটছে ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ, টিভি, কম্পিউটারে। এতে শিশুর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। স্থুলতা সমস্যায় ভুগছে এখনের শিশুরা। আশঙ্কা আছে আরো মারাত্মক রোগ বিস্তারের।


এ পরিস্থিতিতে তাই অভিভাবকদেরই সক্রিয় হতে হবে শিশুর স্বার্থে। তাদের শরীর চর্চা ও খেলায় উৎসাহ দিতে হবে। খেলাধুলা একটি জৈবিক প্রক্রিয়ায় দেহ ও মনকে সতেজ রাখে। তাই সারাদিন শুধু পড়া চাপিয়ে দেওয়া শিশুর বিকাশ ব্যাহত করে। তাকে খেলায় উৎসাহী করার দায়িত্ব বড়দের। খেলার কোনো জাতীয়তাবাদ নেই। কোনো বিদেশি খেলায়ই নিরুৎসাহ করার কিছু নেই। তবে দেশীয় অনবদ্য খেলাগুলোর যত্ন , বিকাশ ও চর্চায় রাষ্ট্রসহ খেলা পৃষ্ঠপোষকদের ভূমিকা দেখতে চাই। ফিরে আসুক গ্রামীণ লোকজ খেলা। আজকের শিশুরাও এর সাথে পরিচিত হোক। অতীত প্রজন্মের সঙ্গে নতুনের মেলবন্ধনের এমন প্রহর দেখতে আমরা প্রত্যাশী।

লেখক, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা হাসান শাওনের জন্ম, বেড়ে ওঠা রাজধানীর মিরপুরে। পড়াশোনা করেছেন মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বাঙলা কলেজ, বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে। ২০০৫ সাল থেকে তিনি লেখালেখি ও সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। কাজ করেছেন সমকাল, বণিক বার্তা, ক্যানভাস ম্যাগাজিন ও আজকের পত্রিকায়।

২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর হাসান শাওনের প্রথম বই “হুমায়ূনকে নিয়ে” প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত। ঢাকা ট্রিবিউন কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী নয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৪৭
  • ১২:৩১
  • ৫:০০
  • ৬:৫৬
  • ৮:১৩
  • ৬:০৩