রূপগঞ্জ থেকে :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। ওই সংঘর্ষে দুইপক্ষের অন্তত ৩০ জন গুরুতর আহত হয়। গতকাল মঙ্গলবার হাশেম ফুড কারখানার অগ্নিদগ্ধ ভবন পরিদর্শনে আসেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এসময় তারা বলেন, সরকারের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোই এই দূর্ঘটনার জন্য দায়ী। এছাড়া হাশেম ফুডের গতকালের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তারা হতাহত সকল শ্রমিকদের সর্বাত্মক সহায়তারও আশ্বাস দেন তারা।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হাশেম ফুডের আগুন লাগা কারখানা পরিদর্শনে আসেন। এসময় জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক নাসির উদ্দিনসহ তার কর্মী সমর্থকেরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য দিপু ভূঁইয়ার সমর্থকদের কয়েকজনের সাথে অশালীন আচরন ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটায়। রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, নাসিরউদ্দিন স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত করে দলকে সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গত পৌর নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েও আওয়ামীলীগের প্রস্তাবকারী রেখে মনোনয়ন বাতিলের মাধ্যমে বিনা ভোটে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে সুযোগ তৈরী করে দেন নাসির। আজকে বিএনপির অনুষ্ঠান বানচালের উদ্দেশ্য সে পরিকল্পিতভাবে এই ন্যাক্কারজনক সংঘাত করিয়েছেন। এদিকে দুপুর সোয়া ২ টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোর উদাসীনতা আর নজরদারির অভাবে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও এতগুলো প্রাণহানি ঘটেছে। এই দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। তিনি হতাহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি করেন। তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ঢাকা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সদস্য আশরাফুল হক রিপন, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ন, জেলা সেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, বাসির উদ্দিন বাচ্চু প্রমুখ।
কারখানা পরিদর্শন শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বাইরে বের হলে উভয় গ্রুপ ফের রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। দুইপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। সংঘর্ষকালে কারখানায় বেতন নিতে আসে শ্রমিকরা আতংকে ছুটাছুটি শুরু করেন। সংঘর্ষে নাসির উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা ইসমাইল হোসেন মামুন, মাসুম বিল্লাহ, আব্দুল হালিম, আবদুল্লাহ, আমিন, তপু, আলী হোসেন, মকবুল মিয়া, শাজাহান সাজু, শামীম মিয়া, তনয় হোসেনসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ লাটিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার হাশেস ফুড কারখানার দুই হাজার শ্রমিকের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়। এসময় কারখানার ম্যানেজার(ভ্যাট) নুরুজ্জামান বলেন, আমরা শ্রমিকদের জুন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দিচ্ছি। এছাড়া আহত শ্রমিকদের খোঁজখবর রাখছি। তাদের চিকিৎসা ব্যয়সহ নিহত শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তাও দিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ।