1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  3. hdtariful@gmail.com : Tariful Rumon : Tariful Rumon
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:২১ অপরাহ্ন

‘মানব অস্তিত্ব বিলীন হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগে’

অনলাইন ডেক্স
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৫ জুন, ২০২১

বাংলাদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আঘাত হানে। এ ঝড়ের ব্যাপ্তি ছিল প্রায় দুটি বাংলাদেশের সমান আকৃতির। ২০১৬ সালের ২১ মে রোয়ানুর আঘাতে চট্টগ্রামে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রায় একই আকৃতির আরেকটি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ২৬ মে ভারতের ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ে। এর আঘাতে বাংলাদেশে ছয়জনের মৃত্যু হয়। রোয়ানু থেকে ইয়াস পর্যন্ত ছয় বছরে ছয়টি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের নিকটবর্তী ভারতের উপকূলে আঘাত হানে। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মূলত নানারকম দূষণ থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের কারণে মানুষকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হতে হচ্ছে। এ দুর্যোগ একটা সময়ে মানব-অস্তিত্বই বিলীন করে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের।

সার্বিক জলবায়ু পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের এ বাস্তবতার মধ্যে বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ বাংলাদেশে উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার (ইকোসিস্টেম রেসটোরেশন)’। দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সাধারণত সাগরের পানির উষ্ণতা ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পার হলে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। আর সাগরের পানির উষ্ণতার অন্যতম প্রধান কারণ সার্বিক উষ্ণায়ন। এটি পুরোপুরিই মানবসৃষ্ট। নানা কারণে মানুষ বিভিন্ন ধরনের কার্বন গ্যাস নিঃসরণ করে। এছাড়া নানাভাবে পরিবেশ দূষণ করছে। এতে পৃথিবী গরম হচ্ছে। উষ্ণতা বাড়লে সার্বিক জলবায়ু ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে। ফলে কেবল ঘূর্ণিঝড়ই নয়, অনাবৃষ্টি, অল্পসময়ে ও অসময়ে অতিবৃষ্টি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলে লবণাক্ততার বিস্তার, এর কারণে কৃষি ও মৎস্য সম্পদসহ সার্বিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। সব মিলে মানবজীবনের এমন কোনো খাত নেই যেখানে এর প্রভাব পড়ছে না। মূলত নানারকম দূষণ থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের কারণে মানুষ আজকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। এ দুর্যোগ একটা সময়ে মানব-অস্তিত্বই বিলীন করে ফেলতে পারে বলে তার আশঙ্কা।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র বলতে জলে-স্থলে বসবাসকারী সার্বিক জীবজগৎকে বোঝায়। জীবজগতের একটি আরেকটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সার্বিক বাস্তুতন্ত্রের কোথাও ভারসাম্যহীনতা তৈরি হলে তা গোটা পরিবেশ ও প্রতিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এগুলো এতটাই নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত যে, এর কারণে গোটা মানবসমাজ বিপন্ন হতে পারে। উপমহাদেশের হরপ্পা-মহেঞ্জোদারোসহ প্রাচীন নানান সভ্যতার ধ্বংস অনিবার্য হয়েছিল বাস্তুতন্ত্র তথা জীববৈচিত্র্যের বিপন্নদশা থেকে। যা সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষণ থেকে শুরু হয়।

অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের প্রাকমৌসুম ভয়াবহ খরায় কেটেছে বাংলাদেশের। সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড দাবদাহ। এ সময়টাতে বরিশাল পর্যন্ত নদীর পানিতে লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়ে। এর কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এর একটি কারণ হতে পারে, বৃষ্টি না হওয়ায় উজান থেকে পানি নামতে পারেনি। ফলে সাগরের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে, যা অনেকটাই স্থলভাগের ভেতরে চলে আসছে। আরেকটি কারণ হলো-সাগরের পানির স্তর বৈশ্বিকভাবে ২০ সেন্টিমিটার বা দেড়ফুট বেড়েছে বলে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এখন উপকূলের ১৯-২০টি জেলায় যদি লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে কৃষি, মৎস্য, বনায়নসহ সার্বিক জীবন-জীবিকাই পড়বে হুমকির মুখে। বিগত ছয় বছরে ছয়টি ঘূর্ণিঝড়ের অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশের।

এর মধ্যে ২০১৭ সালে এক বছরেই ফণী ও বুলবুল নামে দুটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। সর্বশেষ ইয়াসের আঘাতে ১০০ উপজেলায় বাঁধ ভেঙেছে। আবার বর্ষা মৌসুম সামনে অপেক্ষা করছে।

এ সময়ে উত্তরাঞ্চল বন্যায় ভাসতে পারে। গত কয়েক বছর ধরে প্রতি বছর বন্যা হচ্ছে। এ ছাড়া অল্প সময়ে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে নগরবন্যার মুখোমুখিও হচ্ছি আমরা। তাই ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নসহ সার্বিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এজন্য একদিকে অভিযোজন আরেক দিকে প্রশমন (মিটিগেশন) ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। কার্বন নিঃসরণের দিক থেকে হয়তো আমরা বিশ্বের তেমন ক্ষতি করছি না, কিন্তু সার্বিক পরিবেশ তথা বায়ু, পানি, মাটি ইত্যাদির যে দূষণ করছি, বিশেষ করে প্লাস্টিক দ্বারা পরিবেশের এবং নদীদূষণ অনেকটাই অপ্রতিরোধ্য হয়ে গেছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্বের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে জোরদার ভূমিকা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিতে পারে। যদিও আমার কাছে মনে হচ্ছে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে যথেষ্ট ধীরগতি আছে।

কর্মসূচি : বিশ্ব পরিবেশ দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান। এবার এ কর্মসূচির স্লোগান হলো-‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি।’ আজ বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ‘সোনালু’, ‘জাম’, ‘আমড়া’ ও ‘ডুমুর’ বৃক্ষের চারটি চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন করবেন।

এছাড়া পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তর আরও কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান, স্থাপনা ও সড়কে ব্যানার, ফেস্টুন স্থাপন করে পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে মানুষকে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দিবস সম্পর্কে অবহিত করতে জনগণকে মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২৭
  • ১২:৩৮
  • ৫:১৩
  • ৭:২৩
  • ৮:৪৭
  • ৫:৪৯