স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার ঘটনায় সংসদে তোপের মুখে পড়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপোতে পরিইত হয়েছে। যারা পুকুরচুরি করেন তারা পার পেয়ে যান, অথচ এসব যারা প্রকাশ করেন তারাই নানা সমস্যার সম্মুখউন হন।
সোমবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট ও ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা। তবে এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এসব প্রসঙ্গ এড়িয়ে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সফলতা দেখিয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। এ সময় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেন, ‘যারা পুকুরচুরি করছেন, তারা বেরিয়ে যাচ্ছেন। যারা এসব প্রকাশ করছেন, তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা জবাবদিহি নিশ্চিতে কাজ করে। সাংবাদিকদের এটুকু সুযোগ দেওয়া সমাজের দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। এটা ৪ থেকে ৫ শতাংশ দেওয়া উচিত ছিল। করোনা মহামারির কারণে বাড়ানো উচিত ছিল। কমপক্ষে জিডিপির ২ শতাংশ দেওয়া উচিত। করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে অর্থনীতি চাঙা হবে। তাই স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল করতে হবে। এটাকে অবহেলা করা উচিত নয়। কিন্তু অবহেলা করা হচ্ছে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজাতে হবে। এটা সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। এই দুর্নীতি কীভাবে সংস্কার করবেন, এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় এক পদে ৫০ জন চিকিৎসক আর জেলা-উপজেলায় চিকিৎসক নেই। লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ সত্যিকারভাবে আজ ভারতনির্ভর হয়ে গেছে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ভারতে চলে যাচ্ছে। যদি আমরা সত্যিকার অর্থে স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজাতে পারি, সংস্কার করতে পারি, তাহলে বিদেশে স্বাস্থ্য খাতে যে ব্যাপক টাকা চলে যায়, তা যাবে না।’
হারুন আরও বলেন, ‘মানসম্মতভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে যদি টিকা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা আগামী এক বছরের মধ্যে ৮০ শতাংশ লোককে টিকার আওতায় আনতে পারব। আমি মনে করি, সরকারের পাশাপাশি এখানে বেসরকারি ব্যবস্থাকে উন্মুক্ত করতে হবে। সেখানে দুর্নীতি থাকা চলবে না। স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার কোম্পানি টিকা এনেছে। ভারত কেন চুক্তির বরখেলাপ করল? ২০ লাখ মানুষ এক ডোজ টিকা পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন।’
Leave a Reply