ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আগামীকাল মঙ্গলবারের সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
আজ সোমবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এমএ খায়েরের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও বন্ধ থাকবে।
এদিকে উপকূলীয় জেলাগুলোসহ অন্যান্য জেলার বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি পাঠদান চালু রাখার বিষয়ে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসরিন সুলতানা স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোসহ অন্যান্য জেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সম্ভাব্য প্রভাবের বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণি পাঠদান চালু রাখার বিষয়ে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিতে জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ কবলিত এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
মাউশি উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ কবলিত এলাকার দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালন এবং দুর্গত জনগণের নিরাপদ আশ্রয় প্রদানের লক্ষ্যে নিকটস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে (স্কুল ও কলেজ) অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের পাঠাগারের বই, গুরুত্বপূর্ণ দলিল, বিজ্ঞানাগার এবং কম্পিউটার ল্যাবরেটরির সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণ নিরাপদ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জাতীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠেয় আগামীকাল মঙ্গলবারের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামানের সই করা অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠেয় শুধু ২৫ অক্টোবরের সব পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হলো। স্থগিত এসব পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিগগিরই জানানো হবে।
অন্যান্য পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখ ও সময়সূচি অপরিবর্তিত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হেনেছে। সন্ধ্যায় উপকূল স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ মধ্যরাতে বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূল অতিক্রম করবে বলে জানা গেছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ইতিমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা, বরিশাল, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পিরোজপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলা এবং ওই এলাকার দ্বীপ ও চরগুলোকেও ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর ও কক্সবাজার উপকূল এবং সেখানকার চর ও দ্বীপগুলোকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply