আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তাদের শাসনামলে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা এখনো হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচার ব্যবস্থার অভ্যন্তরে আগের শাসনের অনুগত অনেক কর্মকর্তা এখনো সক্রিয় থেকে ন্যায় বিচারের পথরুদ্ধ করছে এবং ভুক্তভোগীদের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত করছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আজমল হোসেন তার মক্কেল রাজনীন ইসলাম ও মো. এনামুল আমিনুল-এর মামলা উল্লেখ করে বলেছেন, কীভাবে আগের প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এখনও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দমন করতে নিজেদের প্রভাব খাটাচ্ছে, এটি তার পরিষ্কার উদাহরণ।
“এই মামলাগুলো যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়েছিল, তা স্পষ্ট। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরও আমার মক্কেলরা হয়রানি ও ভয়ভীতির দুষ্ট চক্রে বন্দি রয়ে গেছে। এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে, কারণ আগের সরকারের অনুগত ব্যক্তিরা এখনো বিচার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে,” বলেন অ্যাডভোকেট হোসেন। তিনি আরও জানান যে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা হাজারো মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও আইনগত ভিত্তিহীন। সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে বারবার আবেদন জানানো হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে এসব ভিত্তিহীন মামলার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোয় নতুন হয়রানির কারণ হয়েছে, এমনকি আরো মিথ্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
“যদি আগের দমনমূলক শক্তি গুলো বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে, তাহলে ন্যায় বিচার কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবেনা। আমার মক্কেল সহ অনেকেই ন্যায্য ও সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার রাখেন, যেখানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ছায়া থাকবে না,” তিনি জোর দিয়ে বলেন। অ্যাডভোকেট হোসেন একটি নিরপেক্ষ পর্যালোচনা পরিচালনা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত সব মামলা প্রত্যাহার, এবং তার মক্কেল ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
আইন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন যে, যদি অবিলম্বে বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাত দুষ্ট ব্যক্তিদের অপসারণ করা না হয়, তাহলে অতীতের দমন নীতির শিকার আরও অনেকেই মিথ্যা মামলায় আটকে থাকবেন। অ্যাডভোকেট হোসেনের আহ্বান ইঙ্গিত দেয় যে, বিচার ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় জরুরি সংস্কার না হলে আগের শাসনের প্রভাবশালীরা ন্যায় বিচারকে ব্যাহত করতে থাকবে।
Leave a Reply