1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  3. hdtariful@gmail.com : Tariful Rumon : Tariful Rumon
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন

জান্নাতি মানুষের স্তর ও মর্যাদা

মুফতি আবদুল্লাহ নুর
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

কোরআন ও হাদিসে জান্নাতের একাধিক নাম এসেছে, যা দ্বারা জান্নাতের সংখ্যা অধিক বলেই ধারণা হয়। তবে গবেষক আলেমরা বলেন, সংখ্যার বিবেচনায় জান্নাত একটি। তবে তার একাধিক স্তর ও শ্রেণি রয়েছে।

কোরআন ও হাদিসে ‘জান্নাত’ শব্দটি যেখানে বহুবচন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, সেখানে জান্নাতের মাহাত্ম্য, স্তরগুলো, প্রকারভেদ কিংবা জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তির নেকির বিপুলতার দিকে ইঙ্গিত করা উদ্দেশ্য।

আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণিত, উম্মে রাবি বিনতে বারা (রা.) নবী (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘আল্লাহর নবী! আমাকে কি হারেসা সম্পর্কে বলবেন না?’ হারেসা বদরের যুদ্ধে অজ্ঞাত তীরের আঘাতে শহীদ হয়েছিল। সে যদি জান্নাতবাসী হয় তাহলে আমি ধৈর্য ধরব। আর যদি অন্য কিছু হয় তাহলে তার জন্য বেশি করে কাঁদব। রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন : হারেসার মা! জান্নাতে নানা প্রকারের জান্নাত আছে।

অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে, জান্নাতে বহু জান্নাত আছে। তোমার ছেলে সর্বোচ্চ ফেরদাউস পেয়ে গেছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮০৯)

জান্নাতের স্তরগুলো

জান্নাতের স্তরগুলোর সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। বলা হয়, এর সংখ্যা কোরআনের আয়াতের সমান।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের বাহককে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, তুমি কোরআন পড়তে থাকো ও ওপরে উঠতে থাকো এবং দুনিয়াতে যেভাবে স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে পড়তে সেভাবে পড়তে থাকো। কেননা (জান্নাতের ভেতর) তোমার স্থান ঠিক সেখানে হবে, যেখানে তোমার শেষ আয়াতটি খতম হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৬৪)
আর জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর হলো ফেরদাউস। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা যখন আল্লাহর কাছে চাইবে তখন ফেরদাউস চাইবে। কেননা এটি জান্নাতের মধ্যম এবং জান্নাতের সবচেয়ে ওপরে।

এর ওপরে আছে রহমানের আরশ। এখান থেকে জান্নাতের নহরগুলো প্রবাহিত হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৬৩৭)
জান্নাতিদের নানা শ্রেণি

জান্নাতবাসীদের কিছু আমল এবং জান্নাতবাসীদের স্তরগুলোর বিবরণ সুন্নাহতে এসেছে। যেমন—

১. সাধারণ মুমিন : যারা আল্লাহ ও রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) বলেন, ‘অবশ্যই জান্নাতবাসীরা তাদের ওপরের বালাখানার বাসিন্দাদের এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে উজ্জ্বল দীপ্তিমান নক্ষত্র দেখতে পাও। এটা হবে তাদের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্যের কারণে। সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো তো নবীদের জায়গা। তাঁরা ছাড়া অন্যরা সেখানে পৌঁছতে পারবে না। তিনি বললেন, অবশ্যই, সে সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! সেসব লোকও পৌঁছতে পারবে, যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং রাসুলদের সত্য বলে স্বীকার করবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩০৮৩)

২. আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রামকারী : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের মধ্যে এক শটি স্তর আছে, যা আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রামকারীদের জন্য মহান আল্লাহ প্রস্তুত করে রেখেছেন। দুই স্তরের ব্যবধান আসমান-জমিনের মধ্যবর্তীর দূরত্বসম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৬৩৭)

৩. শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা পোষণকারী : একনিষ্ঠভাবে শাহাদাতকামী ব্যক্তিও এটি অর্জন করতে পারবে। সাহল বিন হানিফ (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর কাছে শাহাদাত প্রার্থনা করবে আল্লাহ তাআলা তাঁকে শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছাবেন; যদিও তার মৃত্যু নিজ বিছানায় হয়।’ (সহিহ বুখারি, আয়াত : ১৯০৯)

৪. আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়কারী : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন : দরিদ্র লোকেরা নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাঁদের সম্পদের দ্বারা উচ্চমর্যাদা ও স্থায়ী আবাস লাভ করছেন। আমরা যে যে নামাজ পড়ি, তাঁরাও সে সে নামাজ পড়ে, আমরা যে যে রোজা রাখি, তাঁরাও সে সে রোজা রাখে। আর তাঁদের আছে অতিরিক্ত অর্থ যা দিয়ে তাঁরা হজ করে, ওমরাহ করে, আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে এবং দান-সদকা করে। তখন নবীজি (সা.) তাঁদের তাসবিহ ফাতেমি পড়ার নির্দেশ দেন। তা হলো ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮০৭)

৫. তীব্র শীতে অজুকারী : আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছুর দিক নির্দেশনা দেব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ গুনাহ মুছে দেন এবং মর্যাদার স্তর উন্নীত করেন?’ সাহাবিরা বললেন, অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন : ‘কষ্ট হলেও ভালোভাবে অজু করা, মসজিদের দিকে বেশি বেশি কদম ফেলা এবং এক নামাজ শেষ করে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষায় থাকা। আর এটাই হলো রিবাত (প্রস্তুতি)। এটাই হলো রিবাত। (মুসলিম, হাদিস : ২৫১)

৬. কোরআনে হাফেজ : আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘পবিত্র কোরআনের বাহককে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, তুমি কোরআন পড়তে থাকো ও ওপরে উঠতে থাকো এবং দুনিয়াতে যেভাবে স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে পড়তে, সেভাবে পড়তে থাকো। কেননা (জান্নাতের ভেতর) তোমার স্থান ঠিক সেখানে হবে, যেখানে তোমার শেষ আয়াতটি খতম হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৬৪)

সুতরাং যে ব্যক্তি সুউচ্চ হিম্মতের অধিকারী, তার উচিত সর্বোত্তম বিষয়ের প্রতি আগ্রহী হওয়া, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ করা এবং জান্নাতুল ফেরদাউসের আকাঙ্ক্ষা অন্তরে লালন করা।

আল্লাহ সবাইকে জান্নাতে যাওয়ার মতো আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২০
  • ১২:২৯
  • ৫:০৪
  • ৭:১২
  • ৮:৩৬
  • ৫:৪২