1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. hdtariful@gmail.com : Tariful Romun : Tariful Romun
  3. shohagkhan2806@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  4. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  5. ranaria666666@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন

ল্যাট্রিনের পাশে খোলা আকাশের নিচে বসবাস : মানবিকতা, নাকি ধাপ্পা!

অনলাইন ডেক্স
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

বয়স ৬৫ কি ৭০ হবে। কথা বলতে পারেন না। শুধু চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরে। ল্যাট্রিনের পাশেই অসাড় শরীর নিয়ে আধভাঙা চৌকিতে বসে কোনোমতে নিজের আব্রু ঢেকে রেখেছেন অপরিচ্ছন্ন চাদর দিয়ে। মাথার ওপর প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ছাউনি দেওয়া হয়েছে। এতে রোদ-বৃষ্টি ফেরে না। এখানে খেয়ে না খেয়ে গত প্রায় এক বছর ধরে কথিত বৃদ্ধাশ্রমে বসবাস করছেন বাকপ্রতিবন্ধী বৃদ্ধ। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বৃদ্ধের নাম হযরত আলী। কোথায় বাড়ি আবার কোথা থেকে এসেছেন কেউ বলতে না পারলেও তার তথ্য দিতে পারেন কথিত বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক। আর এ বৃদ্ধাশ্রমটি গড়ে উঠেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরখামাটখালী এলাকায়।

পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের চরে অবস্থিত মাতৃছায়া বৃদ্ধাশ্রম। মাতৃত্বের স্নেহ ও ছায়া কোনোটাই নেই এখানে। লোকালয় থেকে প্রায় অনেকটা বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে অবস্থিত বৃদ্ধাশ্রমটি গড়ে তুলেছেন বীরকামটখালী গ্রামের মরছব আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাস্টা রোলের গেটম্যান। বাড়িতে সহায়সম্পদ না থাকলেও চরে ৮ শতক জমি কিনে প্রায় ৪ শতক জমির ওপর গড়ে তুলেছেন বৃদ্ধাশ্রম। টিন দিয়ে অর্ধঘেরা এই বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছে প্রায় ১৪ হাত লম্বা একটি চালাঘর। গত সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে বৃদ্ধাশ্রমটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে। কাছে যেতেই পায়ের শব্দ শুনে ভেতর থেকেই এক বৃদ্ধার কণ্ঠ- কে আইছেন, এই যে চাবি আমার কাছে। পরে একটা ফাঁকা জায়গা দিয়ে এ প্রতিনিধিকে চাবি দেওয়া হয়। খোলা হলো টিনের দরজাটি। 

ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, পাঁচজন বাসিন্দা গাদাগাদি করে বসবাস করছেন। তার মধ্যে দুই নারী মানসিক প্রতিবন্ধী। ভরদুপুরে একজন বাইরে বসে থাকলেও এ প্রতিনিধিকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বামীর কাছে তাকে পাঠিয়ে দিতে অনুনয়-বিনয় করেন। এখানে কে এনেছে তা তিনি বলতে পারছেন না। তবে তিনি যেতে চাইলেও এখন আর যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার চরমাটিভাঙা গ্রামের মো. কামরুজ্জামান (৫১) থাকেন এ বৃদ্ধাশ্রমে। তিনি জানান, গ্রামের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে। তিনি টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের হুইসেল শুনে অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাঁর দেহের বাঁ পাশ অবশ হয়ে পড়ে। এক নারীর সহায়তায় তিনি এই বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই পেয়েছেন। কামরুজ্জামান বলেন, তাঁর বাড়ির লোকজন যদি খোঁজ পায় তাহলে তাঁকে এখান থেকে নিয়ে যাবে। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ আমাকে ছাড়তে চাইছেন না বলে অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, মাঝেমধ্যে এখানে গাড়ি নিয়ে লোকজন এসে ফটো তুলে নিয়ে যায়। সঙ্গে নিয়ে আসেন অনেক প্যাকেটজাতীয় জিনিসপত্র। কিন্তু তাদের কিছুই দেওয়া হয় না। খোলা আকাশের নিচে ল্যাট্রিনের পাশেই একটা চৌকিতে শুয়ে আছেন বাকপ্রতিবন্ধী একজন। নাম জিজ্ঞেস ছাড়াও কাছে গিয়ে কুশলাদি জানতে চাইলে তিনি ‘আ আ…’ করে কিছু বলতে চাইলেও বলতে পারেননি।

এলাকার লোকজন জানান, ভেতরে কী হয় তারা কেউ কিছু জানেন না। এলাকার কারো কোনো পরামর্শও নেন না।

বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক রফিকুল ইসলামের খোঁজ নিলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি এ কাজটি হাতে নিয়েছেন। তবে কারা এই চিকিৎসক তা তিনি বলতে নারাজ। যাঁরা এই বৃদ্ধাশ্রমে আছেন, তাঁদের কিভাবে আনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন হাসপাতাল ও রাস্তাঘাট থেকে আনা হয়েছে। মোট বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা কয়জন জানতে চাইলে তিনি সাতজনের কথা বললেও তাঁর বৃদ্ধাশ্রমে আছে পাঁচজন। বাকি দুজন তাঁর বাড়িতে আছেন বলে জানালেও সেখানে খোঁজ নিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা ইনসান আলী বলেন, আমার জানামতে ময়মনসিংহ জেলার কোথাও বৃদ্ধাশ্রম নেই। নান্দাইলে আছে, এটা আমার জানা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:৫৪
  • ১২:৪৬
  • ৪:৪১
  • ৬:২১
  • ৭:৩৬
  • ৭:০৭