1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. hdtariful@gmail.com : Tariful Romun : Tariful Romun
  3. shohagkhan2806@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  4. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  5. ranaria666666@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

অবৈধ গর্ভপাতের কাজ করে কোটিপতি নার্স মমতাজ

নিজস্ব প্রতিবেধক
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নার্স অবৈধ গর্ভপাতের কাজ করে কোটিপতি বনে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। একসময় এসব কাজ করলেও এখন মানবতার তাড়নায় তা করছেন না বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত নার্স মমতাজ বেগম। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

মমতাজ বেগম ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিউ এলাকায় বসবাস করেন। তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক ওরফে সিদ্দিক মাস্টার। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে।

বড় মেয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিবিএমসিবি) পড়াশোনা শেষ করে ইন্টার্ন করছেন। ছোট মেয়ে নার্সিংয়ে পড়াশোনা করছেন।

আয়েশা খাতুন (ছদ্মনাম) ফুলপুর পৌর শহরের বাসিন্দা। ২০১৪ সালে কলেজে পড়াকালীন প্রেম হয় স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। প্রেমের ছয় মাস পর শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন তারা। পেটে আসে বাচ্চা। বয়স হয় ৮ সপ্তাহ। চিন্তায় মানসিকভাবে ভেডে পড়েন তারা। একজনের পরামর্শে উপায় খোঁজার জন্য স্মরণাপন্ন হন নার্স মমতাজ বেগমের। সমাধানের পথও পান। ৬ হাজার টাকায় গর্ভপাত করান আয়েশা খাতুন।

শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে কেনেন আরও ২ হাজার ৩০০ টাকার ওষুধ। কিছুদিন ওষুধ খাওয়ার পর শারীরিক দুর্বলতা কিছুটা সারলেও জরায়ুতে প্রায় ব্যথা হতে থাকে তার।

এ ঘটনার দুই বছর পর বিয়ে হয় আয়েশা খাতুনের। কিন্তু গর্ভে এখনো বাচ্চা আসেনি। চিকিৎসা করিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। এজন্য তিনি অপরিকল্পিত গর্ভপাত করানোকেই দায়ী করছেন।

এখন তিলে তিলে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছেন আয়েশা। তার জানামতে অনেক তরুণী গর্ভপাত করান নার্স মমতাজ বেগমকে দিয়ে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, প্রাইভেট ক্লিনিক এবং বাসাবাড়িতে চুক্তিতে গর্ভপাতের কাজ করেন মমতাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন নার্স বলেন, ‘মমতাজ বেগমের কাছাকাছি সময়ে চাকরিতে যোগদান করেও তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মমতাজ বেগম হাসপাতালের পাশে জায়গা কিনে চারতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে একতলা সম্পূর্ণ করেছেন। ময়মনসিংহ নগরীর চায়না মোড়ে ৬ শতাংশ জমি কিনেছেন। যার বাজারমূল্য কোটি টাকা।’

তারা আরও বলেন, ‘তার এক মেয়ে কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিবিএমসিবি) পড়াশোনা শেষ করে ইন্টার্ন করছেন। যেখানে ভর্তি হতেই কয়েক লাখ টাকা লাগে। তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করে সামান্য সম্মানী পান। সবকিছুই এই গর্ভপাতের টাকায় করা।’

নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একেকটা গর্ভপাতের কাজ করতে ৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন মমতাজ। গর্ভপাত করাতে গিয়ে অনেকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় রুহুল আমিন ও মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স মমতাজের মতো অনেকেই আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। আমরা এর সঠিক তদন্তপূর্বক বিচার চাই। মমতাজের বিষয়টি সামনে আসলেই, বাকিদেরটাও আসবে। তার আশকারা পেয়েই এ সমাজের অনেক তরুণ-তরুণী নষ্ট হয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নার্স মমতাজ বেগম বলেন, ‘২৫ বছর ধরে তিনি সুনামের সঙ্গে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করছেন। একসময় তিনি গর্ভপাত করানোর কাজ করতেন। এখন বিবেকের তাড়নায় আর করছেন না। গর্ভপাত করানোর টাকা দিয়েই ফুলপুরে একতলা বাড়ি এবং ময়মনসিংহ শহরে কিছু জায়গা কিনেছেন।’

তবে তিনি অন্যায় কিছু করেননি বলেও দাবি করেন।

নার্স মমতাজ বেগমের স্বামী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘তিনি ফুলপুরে একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করেন। প্রাইভেট শিক্ষক হিসেবে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসারে স্ত্রীর পাশাপাশি তিনিও সহযোগিতা করছেন। একসময় তার স্ত্রী গর্ভপাত করালেও বছর দুয়েক আর করছেন না।’

ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিত বলেন, তিনি যোগদান করার পর গর্ভপাত করানো নিয়ে মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে তা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে তাকে সতর্কও করা হয়। এসব করবেন না বলে তিনি অঙ্গীকারও করেন। তার জানামতে মমতাজ এখন গর্ভপাত করেন না। যদি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এই চিকিৎসক।

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, ‘একজন নার্সের দায়িত্ব রোগীর সেবা করা। গর্ভপাত করানো তার দায়িত্ব নয়। এ বিষয়ে তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলে চিকিৎসকের অনুমতিক্রমে করতে পারবেন। অন্যথায় তিনি অপরাধী বলে গণ্য হবেন।’

ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন এবিএম মসিউল আলম বলেন, ‘চিকিৎসকের অনুমতিক্রমেই একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স গর্ভপাত করাতে পারেন। তবে কেউ গণহারে এসব করতে পারবেন না। মমতাজ বেগমের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০
  • ১২:২০
  • ৪:৩৩
  • ৬:১৫
  • ৭:২৮
  • ৬:২১