রাজধানীর দক্ষিণখানে আলোচিত আজহারুল হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রী আসমা আক্তার এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার পাঁচ দিনের রিমান্ড চলাকালে আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে তাদের আদালতে হাজির করেন দক্ষিণখান থানার উপ-পরিদর্শক অনুজ কুমার সরকার। তিনি আদালতে আসামিদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মন্ডল আজহারুলের স্ত্রী আসমার এবং আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ২৬ মে ওই দুই আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আজহারুল দক্ষিণখান এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে সরদার বাড়ি জামে মসজিদে প্রায় ৩৩ বছর ধরে ইমামতি করছিলেন আব্দুর রহমান। আজহারুলের ছেলে আরিয়ান ওই মসজিদের মক্তবে পড়ালেখা করত। আজহারুল নিজেও আব্দুর রহমানের কাছে কোরআন শিখেছেন। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আজহারের বাসায় যাতায়াত ছিল আব্দুর রহমানের।
আজহারুলের স্ত্রী আসমা ও আব্দুর রহমান পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আজহারুল ইসলাম বিষয়টি জেনে ফেলেন। গত ২০ মে রাত ৯টার দিকে আজহারুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে কৌশলে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিজ শয়নকক্ষে ডেকে নেয় আব্দুর রহমান। তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আজহারুল দরজার সামনে পড়ে গেলে আব্দুর রহমান তার গলার ডান পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আজহারুল। হত্যার আলামত গোপন করতে আজহারুলের লাশ ৬ টুকরো করে আব্দুর রহমান।
পরে মসজিদের ওযুখানার গেট সংলগ্ন সেফটিক ট্যাংকের ভিতর লাশের টুকরোগুলো লুকিয়ে রাখা হয়। কয়েক দিন পর দুর্গন্ধ বের হলে আব্দুর রহমান সেফটিক ট্যাংকের ঢাকনার ওপর মসজিদের নির্মাণকাজের জন্য রাখা সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে। পরে সেখান থেকে আজহারের টুকরো টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পরে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় আজহারুলের স্ত্রী আসমা আক্তার। স্বামীকে হত্যা করতে তিনি ইমামের সঙ্গে পরামর্শ করেন। সে অনুযায়ী পূর্বপরিকল্পিতভাবে আজহারুলকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় বলে র্যাব জানিয়েছিল।
Leave a Reply