জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আন্তর্জাতিক স্বর্নপদক জয়ী অ্যাথলেটস মো. সোহেল রানাসহ তার তিন ভাইকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে প্রতিবেশি মোশাররফ হোসেন। এ ঘটনায় মামলা করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তিনি। একের পর এক মো. সোহেলকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে মোশাররফ ও তার লোকজন।
অ্যাথলেটস মো. সোহেল ১২ বছর বয়সেই বিকেএসপিতে ভর্তি হয়। ২০১৪ সালে ন্যাশনাল অ্যাথলেটিকস আয়োজিত জুনিয়র অ্যাথলেটস
প্রতিযোগীতায় দুটি স্বর্ণপদক ও এক ব্রোঞ্জ পদক, ২০১৫ সালে তিনটি স্বর্ণপদক ও দুটি সিলভার পদক, ২০১৬ সালে দুটি স্বর্ণপদক ও একটি সিলভার, ২০১৭ সালে তিনটি স্বর্ণপদক ও একটি সিলভার পদক, ২০১৮ সালে তিনটি স্বর্ণপদক ও দুটি সিলভার পদক লাভ করেন।
এ ছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাথলেটিকস এসোসিয়েশন আয়োজিত ২০১৯ সালের এশিয়ান জুনিয়র গেমস হংকংয়ে সফলতার সাথে অংশগ্রহন করেন।
২০১৯ ভারতে আয়োজিত এসিএবি কাপ অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করে একটি স্বর্ণ ও একটি রোপা পদক লাভ করেন।
অ্যাথলেটস সোহেল রানা সদর উপজেলার
সিরতা ইউনিয়নের চড় খরিচা গ্রামের মো. আব্দুল জলিলের ছেলে। আহতরা হলেন, মো. সোহেলের ভাই রেজাউল করিম মিন্টু (৪০) আশরাফুল ইসলাম (৩৫) শাহ আলম কবির (২৫)।
অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেন একই গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি মামলা তুলে নেয়ার জন্য মো. সোহেলের পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে অ্যাথলেটস সোহেল বলেন, গত ২২ বছর ধরে চড় খরিচা বাজারে ২২ শতাংশ জমি আমরা ভোগ দখল করে আসছি। সম্প্রতি একই এলাকার মৃত আইন উদ্দিনের ছেলে সাজু জমির অংশীদার দাবি করেন।
এমতাবস্তায় গত ১৬ নভেম্বর জমিতে দোকান তৈরীর কাজ করতে তৃতীয় পক্ষ সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেন তার দলবল নিয়ে দোকান তৈরীর কাজে বাধা দেয়।
বিষয়টি ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মোশাররফ ও তার লোকজনতে বুজিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর মোশাররফ হোসেন ২০/২২ জনের একটি দল দেশিয় অস্ত্রসহ আমাদের উপর হামলা চালায়। পরে আমিসহ আমার তিনভাইকে কুপিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বাড়িতে ফিরে আসি।
এ ঘটনায় (১৬ নভেম্বর) রাতে শাহ আলম বাদী হয়ে মোশাররফকে প্রধান আসামী করে ১০ জনকে আসামী করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
অ্যাথলেটস সোহেল আরও বলেন, মামলা করার পর থেকে একের একের এক আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। বিশেষ করে আমাকেই ওরা টার্গেট করেছে। আমি যেন আর খেলাধুলা করতে না পারি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মামলার পরও আসামীরা আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করার পরও আসামীদের ধরছে না পুলিশ। পরিবার নিয়ে আমরা সব সময় হুমকিতে আছি।
এ বিষয়ে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন বলেন, আসামী না ধরার বিষয়ে আমার কোন দুর্বলতা নাই। আমাকেই আসামী ধরতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আসামী ধরা হবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, কেউ যদি তাকে মামলা তুলে নেয়া বা হত্যার হুমকি দেয়। তাহলে অভিযোগ এর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া আসামী ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a Reply