যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর সমর্থক ভোটারদের কাছে হুমকি দিয়ে ইমেইল পাঠাচ্ছে ইরান।
আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জন র্যাটক্লিফ বলেছেন, ইমেইল গুলো কট্টরপন্থী ট্রাম্প সমর্থক একটি গ্রুপের কাছ থেকে পাঠানো হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। ‘অস্থিরতা উস্কে দেয়ার’ উদ্দেশ্যেই ঐ ইমেইলগুলো পাঠানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মি. র্যাটক্লিফ আরো বলেছেন যে ‘ইরান ও রাশিয়া ভোটারদের কিছু তথ্য’ হাতে পেয়েছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে এই ঘোষণা এলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১৩ দিন আগে।
মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে বিদেশি সংস্থা ভোট গ্রহণে হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচনকে ঘিরে ভুয়া তথ্য ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের। তাই ভোট গ্রহণের আগে গোয়েন্দা সংস্থার এই অস্বাভাবিক সংবাদ সম্মেলনকে মার্কিন সরকারের ঐ আশঙ্কার পক্ষে সমর্থন হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
মি র্যাটক্লিফ বলেছেন, ইরান যে ‘স্পুফ ইমেইলগুলো’ পাঠিয়েছে, সেগুলো ট্রাম্পের কট্টরপন্থী সমর্থক গ্রুপ ‘প্রাউড বয়েজ’এর নাম ব্যবহার করে ভোটারদের ‘ভয় দেখাতে, বিশৃঙ্খলা উস্কে দিতে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সুনাম ক্ষুণ্ণ’ করতে পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২০: কে এগিয়ে- ট্রাম্প না বাইডেন?
ডোনাল্ড ট্রাম্প: টিভি তারকা থেকে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন: এবারের দৌড় হোয়াইট হাউসের জন্য
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন যেভাবে অন্য দেশের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন
এছাড়া ভোটারদের তথ্য ব্যবহার করে ‘নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে ভুয়া তথ্য’ ছড়ানো হতে পারে, যা ‘বিভ্রান্তি, বিশৃঙ্খলা ছড়ানো এবং আমেরিকান গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস হ্রাস’ করানোর প্রচেষ্টা করা হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন মি. র্যাটক্লিফ।
ইরানের পাশাপাশি রাশিয়ার কাছেও কিছু ভোটারের তথ্য আছে বলে জানান মি. র্যাটক্লিফ। তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইরানের মত ‘রাশিয়ার পক্ষ থেকে একই ধরণের কর্মকাণ্ড’ লক্ষ্য করেননি বলে জানান মি. র্যাটক্লিফ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’এর পরিচালক ক্রিস্টোফার রে সংবাদ সম্মেলনে মি র্যাটক্লিফের সাথে ছিলেন। তিনি বলেন যে মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি এখনও নিরাপদ এবং ‘স্থিতিশীল।’
ভোটারদের তথ্য কীভাবে ফাঁস হচ্ছে অথবা রাশিয়ার কর্মকর্তারা ঐ তথ্য নিয়ে কী করছে – সে বিষয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিস্তারিত জানাননি।
এর আগে ২০১৬’র নির্বাচনের সময়ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছিল যে ক্রেমলিন সমর্থিত হ্যাকাররা সাইবার হামলা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারণা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল।
ইরান এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সিস্টেম সফলভাবে হ্যাক করতে পারেনি।
সম্প্রতি পাঠানো সন্দেহজনক ইমেইলগুলো একাধিক রাজ্যের ডেমোক্র্যাট ভোটারদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেসব মেইলে তাদের ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
মেইলে হুমকি দেয়া হয়েছে: “আপনি ভোটের দিন ট্রাম্পকে ভোট দেবেন, অন্যথায় আমরা আপনাকে খুঁজে বের করবো। আপার সমর্থন পরিবর্তন করে রিপাবলিকানদের সমর্থন করুন যেন আমরা জানতে পারি যে আপনি আমাদের মেসেজ পেয়েছেন।”
বুধবার পর্যন্ত চার কোটি মার্কিন নাগরিক এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দিয়েছেন।
Leave a Reply