1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. hdtariful@gmail.com : Tariful Romun : Tariful Romun
  3. shohagkhan2806@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  4. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  5. ranaria666666@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১১ পূর্বাহ্ন

আল কোরআনে উল্লেখিত মরুভূমির আত ত্বীন ফল চাষ হচ্ছে গাজীপুরে

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০

যে ফলের কথা মহান আল্লাহ পাক পবিএ আল কোরআনে উল্লেখ করেছেন সেই মরুভুমির মিষ্টি ফল আত ত্বীন এখন চাষ হচ্ছে বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে।

এই ফল চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা এলাকার আজম তালুকদার।

শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা গ্রামে ‘মডার্ণ এগ্রো ফার্ম এন্ড নিউট্রিশন’ নামের ফার্মে এই ত্বীন ফলের চাষ হচ্ছে।

জানা গেছে, এটি আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় ত্বীন ফলের বাগান। এই ফল চাষে ব্যাপক সফলতা দেখে দেশের অনেকেই এখন আত ত্বীন ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

শ্রীপুরের এই ফার্ম থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে ত্বীন ফল ও এর চারা। দিনদিন চাহিদা বাড়ার কারণে কর্তৃপক্ষ ফার্মটির সম্প্রসারণ করে এই ফলগাছের চারা উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছেন।

প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ব্যবস্থাপক পারভেজ আলম বাবু জানান, বারতোপা এলাকায় ৭ বিঘা জমিতে ত্বীন ফলের চাষ করা হয়েছে।

মাদার প্ল্যান্ট (মুল গাছ) থেকে তৈরি করা কলমের ৩ মাস বয়স থেকে ফল দেয়া শুরু করে। ফল ধরার ১ সপ্তাহের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়। প্রতিটি গাছে ন্যুনতম ৭০ থেকে ৮০টি ফল ধরে।

সারা বছরই গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছ ছয় থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। খোলা মাঠ ছাড়াও টবের মধ্যে ছাদবাগানে ত্বীন চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। ছাদ বাগানের চাষীদের মধ্যেও এর ব্যাপক চাহিদা দেখা গেছে।

ত্বীণ ফল ও গাছের ব্যাপক চাহিদার কারণে ৭টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফার্ম কর্তৃপক্ষ। এখান থেকে কলম তৈরি করে এর নিজেদের প্ল্যান্ট ছাড়াও চাষিদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া ও যশোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ফল বিক্রেতাসহ ভোজন রসিকরা এখান থেকে ত্বীন কিনে নিয়ে যান। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ কেজি ত্বীন ফল বিক্রি হচ্ছে। যার প্রতিকেজির মূল্য ১ হাজার টাকা।

ফলের পাশাপাশি সৌখিন চাষিরা এখান থেকে চারাও কিনে নিচ্ছেন। দুইমাস বয়সী চারার পাইকারি মূল্য ৫২০ টাকা ও খুচরা মূল্য ৭২০ টাকা। এখান থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার চারা বিক্রি হচ্ছে। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় টবসহ ফল ধরা চারা বিক্রি হচ্ছে। ত্বীন গাছে রোগ-জীবাণু সংক্রমণের মাত্রা একদমই কম।

সৌদি আরব ও বাংলাদেশ এই ফলকে ত্বীন নামে ডাকলেও অন্যান্য দেশ বিশেষ করে ভারত, তুরস্ক, মিসর, জর্দান ও যুক্তরাষ্ট্রে এটি আঞ্জির নামে পরিচিত। ডুমুর জাতীয় এ ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম Ficus carica ও পরিবারের নাম moraceae. ফলটি পুরোপুরি পাকলে রসে ঠাসা ও মিষ্টি হয়ে ওঠে বলে জানান পারভেজ আলম বাবু।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মো. আজম তালুকদার জানান, ২০১৪-২০১৫ সালে তিনি থাইল্যন্ড থেকে জীবন্ত গাছ এবং তুরস্ক থেকে ত্বীন গাছের কাটিং নিয়ে আসেন। পরে নিজস্ব প্রোপাগেশন সেন্টারে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আদ্রতা বজায় রেখে বারতোপা এলাকায় ২০১৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন ও আবাদ শুরু করা হয়। প্রতিটি গাছে প্রথম বছরে এক কেজি, দ্বিতীয় বছরে ৭/১১ কেজি, তৃতীয় বছরে ২৫/৪০কেজি পর্যন্ত ফল ধরে। এভাবে ক্রমবর্ধিত হারে একটানা ৩৪ বছর পর্যন্ত ফল দিতে থাকে।

গাছটির আয়ু হলো প্রায় ১০০ বছর। তিন মাসের মধ্যেই শতভাগ ফলন আসে। আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় ত্বীন ফল জন্মে থাকে। ত্বীন একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল, যা মরু অঞ্চলে স্বাচ্ছন্দ্যে জন্মায়। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছে ত্বীন। ত্বীন কোনো রাসায়নিক সার ছাড়াই, মাটিতে জৈব ও কম্পোজড সার মিশিয়ে রোদে মাঠে ও ছাদে টবে লাগিয়ে ফল উৎপাদনে সাফল্য পাওয়া গেছে। তাই ছাদবাগানীদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

আজম তালুকদার আরো বলেন, দেশে ছাড়াও বিদেশে এ ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত ও জাপান আমাদের কাছে ত্বীন ফলের চাহিদার কথা জানিয়েছে। ত্বীন চরম জলবায়ু অর্থাৎ শুষ্ক ও শীতপ্রধান দেশে চাষ হলেও, প্রমাণ করেছি নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতেও ৩৬৫ দিনে ফল উৎপাদন সম্ভব। বিদেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম। এ ফল আমাদের দেশে সারা বছর পুষ্টি ও ফলের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।

তিনি বলেন, গার্মেন্টসের বিকল্প আরেকটা সম্ভাবনা দেখছি, সেটি হলো বাংলাদেশে ব্যাপক ত্বীন চাষ। সরকারের সহযোগিতা পেলে তা রপ্তানি করে আন্তর্জাতিকভাবে বাজার ধরা সম্ভব। ত্বীন একটি সম্ভাবনাময় ফসল, যা চাষ করে দেশের বেকরাত্ব দূর এবং রপ্তানি করে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা আজম তালুকদার আরও জানান, ত্বীন ছাড়াও গাজীপুরে তার বাগানে বিচি ছাড়া পেপে, আঠা ও বীজহীন কাঁঠাল, জৈতুন, চেরি, আপেল ও মাল্টাসহ বিদেশি অনেক ফলগাছের চারা উৎপাদন ও তা সম্পসারণের কাজ চলছে। তাদের সংগ্রহে ত্বীন ফলের ১০৩টি জাত রয়েছে। তবে ছয়টি জাত তারা এখানে চাষাবাদ করছেন। জাতগুলোর ফল নীল, মেরুন, লাল ও হলুদসহ বিভিন্ন বর্ণের হয়ে থাকে। এখানকার গাছে প্রতিটি ত্বীন ফল ওজনে ৭০ থেকে ১১০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এ ব্যাপারে গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় শ্রীপুরের ত্বীন ফলের প্রজেক্টটি। বাণিজ্যিকভাবে এতো বড় পরিসরে ত্বীন চাষ দেশের কোথাও করা হয়নি। আমরা এই প্রকল্পটি পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ত্বীন ফলের চাষ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও বিদেশ থেকে আত ত্বীন ফলের আমদানি নির্ভরতা কমে আসার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরো জানায় যে, ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধে এ ফলটি খুবই উপকারী। এছাড়া নানা রোগ নিরাময়ে বিশেষ করে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আত ত্বীন ফল। এটি চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও হাঁপানি রোগ নিরাময়েও সহায়তা করে। মানসিক ক্লান্তি দূর করে। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ক্যালিসিয়ামসহ নানা ভেষজ গুণ।

মহান আল্লাহ পাক পবিএ আল কোরআনে যে ফলের কথা উল্লেখ করেছেন সেই মরুভূমির মিষ্টি ফল আত ত্বীন এখন আমাদের দেশে চাষ হচ্ছে। এটি আমাদের দেশের মানুষের জন্য মহান আল্লাহ পাকের রহমত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১২
  • ১২:১৯
  • ৪:২৯
  • ৬:১১
  • ৭:২৪
  • ৬:২৩