নেত্রকোণার বারহাট্টায় একসঙ্গে দুই ছেলেকে হারানো মালেকার (৫০) কান্না থামছেই না। রবিবার ভোররাতে ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনের নীচে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু হয়। মৃতরা হচ্ছেন- উপজেলার স্বল্প-দশাল গ্রামের কুরবান আলীর ছেলে মোখলেছ (২৮), আব্দুল হেকিমের দুই ছেলে রিপন (২৪) ও স্বপন (২২)। মালেকা মৃত রিপন ও স্বপনের মা।
দুই ছেলের মৃত্যুর শোকে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন মালেকা বেগম। জ্ঞান ফিরে আসতেই শুরু করেন আহাজারী। রিপন ও স্বপনকে তিনি ডাকছেন, হাছান ও হোছেন নামে। তিনি বলছেন, ‘হাছান-হোছেন কই রে, আমারে থুইয়া গেলারে, আমার অসুখ অইলে কইতো মা’ তুমি মরবা না, মইর্যা গেলে কেলা দেখব আমরারে, অহন তোরাই ছাইড়্যা গেলে আমারে, কেলা কই আছ, আমার হাছান-হোছেনরে আইন্যা দেও।’
পুলিশ ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, নিহতরা মাছ ধরার জন্য শনিবার রাতে রেল লাইনের দক্ষিণ পার্শ্ববর্তী একটি পাগার (ছোট পুকুর) থেকে মেশিনে পানি নিষ্কাশনের কাজ করছিল। ক্লান্ত হয়ে বিশ্রামের জন্য তারা রেললাইনের উপর এসে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রেনের বার বার বাজানো হুইসেল তাদের কানে বাজেনি। দুর্ঘটনায় মোখলেছ ও স্বপনের গলা কেটে মুন্ডু বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রিপনের শরিরের বিভিন্ন অংশে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, মালেকার স্বামী অনেক আগেই মৃত্যূবরণ করেছেন। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে লিটন (৩২) বিয়ে করে ঢাকায় থাকে। ছোটখাট চাকরির বেতনের টাকায় তার নিজের সংসারই ঠিকমত চলে না। একমাত্র মেয়ে বিবাহিত। স্বামীর সংসারে থাকে। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া রিপন ও স্বপন অবিবাহিত ছিল। তারা মায়ের দেখাশুনা করতো।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
Leave a Reply