জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের ভোটাধিকার প্রশ্নে সংবিধানিক দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য পালন না করে ‘সংবিধান লংঘন’ করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্নকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বড় ধরনের কৌতুকে রূপান্তর করেছে।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
রব বলেন, ‘গণতন্ত্র’ ও ‘ভোটাধিকার’ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। এগুলোকে কোনোভাবেই ধ্বংস করা যায় না। এই নির্বাচন কমিশন রক্তরঞ্জিত বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না।
তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশের নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব লংঘন করে গুরুতর অসদাচরণ, অনিয়মসহ আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে তদন্তের মাধমে কমিশনকে অপসারণ করা রাষ্ট্রের নৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যদি সংবিধান লঙ্ঘন করার ‘ধৃষ্টতা’ প্রদর্শন করতে থাকে তাহলে প্রজাতন্ত্র বিলুপ্ত হবার পথে ধাবিত হবে।
রব আরো বলেন, বিদ্যমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ উত্থাপন ও অভিশংসন যোগ্য অপরাধ তদন্তের দাবিতে ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের মহৎ উদ্যোগের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জে এস ডি সভাপতি আসম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার গণমাধ্যমে এ বিবৃতি প্রদান করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রশ্নে দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক মাননীয় রাষ্ট্রপতির নিকট যে চিঠি প্রেরণ করেছেন তা সমগ্র জাতির ‘বিবেকের প্রতিনিধিত্ব’ নিশ্চিত করেছে। বিবেক বিক্রির প্রতিযোগিতার মাঝেও ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবেকের যে বার্তা নিয়ে জাতির সামনে হাজির হয়েছেন তা গণতান্ত্রিক ও শাসনতান্ত্রিক সঙ্কট নিরসনে আলোকবর্তিকা হিসাবে ভূমিকা রাখবে। সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের ‘যৌথ আক্রমণে’ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। এখনো যদি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা না যায় তাহলে বড় ধরনের প্রলয়কারী ঘটনা আমাদের অস্তিত্বকেই সংকটাপন্ন করে তুলবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বহুদিন ধরেই সাংবিধানিক জটিলতার প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট ‘সাংবিধানিক আদালত’ (Constitutional Court) গঠনের দাবি উত্থাপন করে আসছি। এ ‘সাংবিধানিক আদালত’ সাংবিধানিক বিষয়সহ নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশ্নে সর্বোচ্চ স্থায়ী সংস্থা হিসেবে ভূমিক রাখবে। আমরা আশা করছি গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করে অভিশংসনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন, যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য জরুরি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
Leave a Reply