৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে ইয়ারমুক যুদ্ধে ইলিয়া তথা বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয়ের পর নগরের চাবি গ্রহণ করতে দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.) সেখানে আসেন। শুক্রবার তিনি খুতবা পড়ে জুমার নামাজ আদায় করেন। ১৫ দিন অবস্থান করে স্থানীয় খ্রিস্টান অধিবাসীর সঙ্গে নিরাপত্তাবিষয়ক চুক্তি করেন। বাইতুল মুকাদ্দাসের খ্রিস্টানদের প্রধান ও বাইজেন্টাইন সরকারের প্রতিনিধি সোফরোনিয়াসের সঙ্গে চুক্তিটি সম্পন্ন হয়। বাইতুল মুকাদ্দাসে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে সম্প্রীতিপূর্ণ জীবন গঠনে ঐতিহাসিক চুক্তিনামাটি ব্যাপক ভূমিকা রাখে। নিম্নে ঐতিহাসিক চুক্তিনামাটি উল্লেখ করা হলো :
‘এটি আমিরুল মুমিনিন ওমর (রা.)-এর পক্ষ থেকে ইলিয়া (বাইতুল মুকাদ্দাস) নগরবাসীকে প্রদত্ত নিরাপত্তা চুক্তি। তাঁদের প্রাণ, সম্পদ, গির্জা, ক্রুশ, সুস্থ-অসুস্থ ও সব অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রদান করেন তিনি। মুসলিমরা তাদের কোনো গির্জা দখল করবে না এবং ধ্বংস করবে না। তাঁদের জীবন, বসবাসের ভূমি, সম্পদ ও ক্রুশ কোনো কিছু বিনষ্ট করা হবে না। জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হবে না। তাঁদের কাউকে আঘাত করা হবে না। তাঁদের সঙ্গে কোনো ইহুদি জেরুজালেমে বসবাস করবে না।
মাদায়েন ও অন্য শহরবাসীর মতো ইলিয়াবাসীও জিজিয়া প্রদান করবে। তাঁরা বাইজেন্টাইন ও ডাকাতদের পরিত্যাগ করবে। জেরুজালেমের কেউ বাইজেন্টাইনের সঙ্গে চলে যেতে চাইলে ক্রুশ ও গির্জা ছাড়া নিজের সম্পদ নিয়ে নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত নিরাপদে চলে যেতে পারবে। গ্রামবাসীর কেউ শহরে অবস্থান করতে চাইলে ইলিয়াবাসীর মতো তাদেরও জিজিয়া প্রদান করতে হবে। যে যার মতো বাইজেন্টাইন চলে যেতে পারবে কিংবা পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারবে। ফসল কাটার আগে তাঁদের কাছ থেকে কিছুই গ্রহণ করা হবে না।
এই চুক্তি মতে তাঁরা নিজেদের জিজিয়া প্রদান করলে তাঁরা মহান আল্লাহ, রাসুল (সা.), খলিফা ও মুমিনদের দায়িত্বে থাকবে। এই বিষয়ে সাক্ষী হিসেবে আছেন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.), আমর বিন আস (রা.), আবদুর রহমান আউফ (রা.) ও মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (রা.)। ১৫ হিজরিতে তাঁদের উপস্থিতিতে এটি লেখা হয়।
সূত্র : ফুতুহুশ শাম আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন উমর আল ওয়াকিদি, হিউম্যান রাইটস লাইব্রেরি ইউনিভার্সিটি অব মিনোসোটা, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্ট্রুমেন্টস অন হিউম্যান রাইটস, মাহমুদ শরিফ বাসয়ুনি।
Leave a Reply