কৃষিকাজের পাশাপাশি একটি মুদি দোকানও চালান জাকির হোসেন। স্ত্রী আর ছোট তিন সন্তান নিয়ে সুখেই কাটছিল সংসার। কিন্তু বিধিবাম, কমিশনের আশায় পুরুষাঙ্গ কেটে বনে গেছেন হিজড়া।
এমন ঘটনায় হতভম্ব জাকির হোসেনের স্ত্রী। স্বামীর এমন কাণ্ডে প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন তিন সন্তানের এ জননী। জাকির হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারোবাড়ি ইউনিয়নের শ্রীফলতলা গ্রামে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিন সন্তানের এ জননী বলেন, আমি লোকলজ্জা ও মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছুই বলতে পারছি না। তিনজনের মা হয়েও আমার স্বামী তার লিঙ্গ কেটে হয়েছেন হিজড়া। কমিশনের প্রলোভনে কথিত হিজড়ারা গত এক সপ্তাহের মধ্যে এ কাণ্ড ঘটিয়েছে। প্রতিবাদ করায় দা উঁচিয়ে চুলের মুঠি ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন স্বামী। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগও করেছি।
জাকিরের স্ত্রী আরো বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে আমার স্বামী হঠাৎ নিখোঁজ হন। পরে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ব্যতিক্রম পোশাক পরে বাড়িতে ফেরেন। এসব পোশাক পরার কারণ জানতে চাইলে একপর্যায়ে তিনি বলেন, আমাকে আর আগের মতো পাবা না। আমি এখন অন্য পথের মানুষ। সপ্তাহে দুদিন এক হাজার টাকা করে কমিশন পাব।
এসব কথা শুনে হতভম্ব হয়ে এর প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে চলে যান জাকির। পরদিন সকালে ফের বাড়িতে এসে শাড়ি পরেন, কান ও নাক ফোঁড়ানো। তখন পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বললে দা নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। কর্মক্ষম ও সুস্থ সবল ব্যক্তিটি প্রলোভনে পড়ে এমন হওয়ায় পরিবারে হতাশা দেখা দিয়েছে বলেও জানান জাকিরের স্ত্রী।
হিজড়া হওয়া জাকিরের ছোট ভাই বলেন, নেত্রকোনার হিজড়া সরদারনি সাগরিকা আমার ভাইকে হিজড়া বানিয়েছেন। এছাড়া কেন্দুয়া ও স্থানীয় আঠারোবাড়ি এলাকার অনেকে হিজড়া হয়েছে। আমি এ ঘটনায় জড়িত হিজড়াদের বিচার চাই।
স্বামীর এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্ত্রী বলেন, আমি ব্লাউজ-পেটিকোট ও শাড়ি পরি, কানে-নাকে অলংকার দেই। আমার স্বামীও তাই করছেন। এ কাণ্ড দেখে আত্মহত্যার ইচ্ছা হয়। কিন্তু সন্তানদের দিকে তাকিয়ে করতে পারছি না।
স্থানীয়রা জানায়, কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ করছেন জাকির। ভাব-সাব অনেকটা মেয়েদের মতো। পরিচিত মানুষের এমন অপরিচিত ও উদ্ভট কর্মকাণ্ড দেখে রীতিমতো হতবাক এলাকাবাসীও। যারা প্রলোভন দেখিয়ে যুবকদের হিজড়ায় পরিণত করার চেষ্টা করছে এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি সচেতন মহলের।
এ ব্যাপারে নান্দাইল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাফি জানান, এভাবে কোনো পুরুষকে নারীতে পরিণত করা যায় না। এতে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।
Leave a Reply