রাজাপুর(ঝালকাঠি) প্রতিনিধি : ঝালকাঠির রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলমের বিরুদ্ধে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির কাছে অভিযোগ করায় হত দরিদ্র এক পরিবারকে গরু চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজাপুরের চাড়াখালী গ্রামের সুমা বেগম শনিবার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। অভিযোগ তুলে না নিলে সুমার স্বামী কবির হোসেন ও শ্বশুর ছোহরাব হোসেনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের ভয় দেখাচ্ছেন ওই এসআই। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সুমা বেগম ও তাঁর পরিবার।
লিখিত অভিযোগে সুমা বেগম বলেন, তাঁর স্বামী কবির হোসেন গরু কেনাবেচার ব্যবসা করেন। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় বাবুল দাড়িয়াদের পরিবারের জমি নিয়ে পুরনো বিরোধ চলছিল। তাদের পক্ষ হয়ে রাজাপুর থানায় এসআই গত ১৭ এপ্রিল দুপুরে অপরিচিত ৭/৮ জন লোক নিয়ে তাদের বাড়িতে জোর করে তল্লাশীর নামে ঘরের মালপত্র তছনচ করে। গরু চুরির অভিযোগ দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে তারা মালামাল ফেলে দিয়ে নষ্ট করে। ঘরে কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় পুলিশের এ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে সুমা বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই শাহ আলম সুমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। পরিবারের সবাাইকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। সুমা ও তাঁর শাশুড়ির দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ওই এসআই। ১৮ এপ্রিল এস.আই শাহ আলম সুমার দেবর দবির উদ্দিনকে খবর দিয়ে ডাকবাংলার মোড়ে নিয়ে বলেন, আমাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে আমি সবমিটমাট করে দেব, আর টাকা না দিলে তোর ভাইকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে গরু চুরির স্বীকারোক্তি করাবো।
এ ঘটনায় ২০ এপ্রিল এসআই শাহ আলমের বিরুদ্ধে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন সুমা বেগম। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই শাহ আলম স্থানীয় বাবুল দাড়িয়াকে বাদী বানিয়ে গরু চুরির মামলা এজাহার করান রাজাপুর থানায়। মামলায় সুমার স্বামী কবির হোসেন ও শ্বশুর ছোহরাব হোসেনকে আসামি করা হয়। ডিআইজির কাছে দেওয়া অভিযোগ তুলে না নিলে আসামিদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে নির্যাতনের হুমকি দিচ্ছেন ওই এসআই। মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে সুমার স্বামী ও শ্বশুর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সুমা বেগম অভিযোগ করেন, বাবুলের পক্ষ হয়ে আমাদের হয়রানি করার জন্য পুলিশ ১৭ এপ্রিল বাড়িতে যায়। আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ, নানা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায় এসআই শাহ আলম। বিষয়টি আমি ২০ এপ্রিল ডিআইজি স্যারের কাছে অভিযোগ করেছি। পুলিশ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২২ এপ্রিল রাতে আমার স্বামী ও শ্বশুরের নামে গরু চুরির মিথ্যা মামলা দেয়। আসলে আমি কেন ডিআইজি স্যারের কাছে অভিযোগ করলাম, এতে ক্ষিপ্ত হয়েছেন ওই এসআই। তিনি এখন আমাদের বিরুদ্ধে উঠে পরে লেগেছেন। আমি ওই এসআইর বিচার চাই। অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের এসআই মো. শাহ আলম বলেন, বাবুল দাড়িয়া নামে এক ব্যক্তি সুমার স্বামী কবিরের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছি। এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে সুমা বেগমের পক্ষ থেকে। রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গরু চুরির মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ঘটনার প্লিমিনারি তদন্তের জন্য এসআই শাহ-আলমকে কবির হোসেনের বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম । তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে । ডিআইজির কাছে অভিযোগ করায় মামলা হয়েছে এ অভিযোগ হাস্যকর ।
Leave a Reply