পৃথিবীর সেরা জীব হলো মানবজাতি। কিন্ত সভ্যতার এই জগতে মানুষ তার সভ্যতা হারিয়েছে। রাজনীতি হলো মানব কল্যাণে নিজেকে উৎস্বর্গ করার একটি মাধ্যম। কিন্তু বর্তমান সময়ে রাজনীতি আমাদের সমাজে কোন নেতিবাচক প্রভাব দেখছি না। যেই দেশে দেশপ্রেমিকের চেয়ে জ্ঞানীগুণী বেশি জন্মায় সেই দেশে শান্তির চেয়ে অশান্তিই বেশি থাকে। ঠিক তেমনি রাজনীতি যদি মানুষকে পশু তৈরি করে তবে সমাজ এর দায়ীত্ব নাগরিকের দায়ীত্ব কেউ নেবে না। প্রতিশোধের আগুন নিয়ে বর্তমান বাংলাদেশের কিছু সংখ্যাক মানুষের রাজনীতিতে নেমেছে। এই প্রতিশোধ এর নেশা না থামলে হয়তো রাজনীতি এক সময় সাধারণ মানুষ ঘৃণা করবে। বাংলাদেশের শক্তিশালী আওয়ামীলীগ সরকারকে মানুষ ১৭ বছর এই জন্য সহ্য করতে পারেনি যে তাদের মাঝে কিছু নেতারা দূর্নীতি করেছে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছে, রক্ত চুষে খেয়েছে অনেকের, তাই তাদের অবস্থা আজ এমন হয়েছে। বাংলার জনগন তাদের ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করিয়েছে। বিএনপি জামাত ক্ষমতা না এসে দেশে যা শুরু করেছে তা করা উচিৎ হচ্ছে না। বিএনপি জামাত এর আওয়ামীলীগ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিৎ ছিলো। রাষ্ট্র দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তাদের মানবতা দেখানো উচিৎ ছিলো, তা না করে এরা আরো হিংস্র হয়ে বাংলাদেশের জনগনের উপরে হামলা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, লুটপাট, হত্যা করে চলাচ্ছে। এক নতুন রাজনীতি প্রতিশোধের নেশায় তৈরি হয়েছেন। আপনারা হয়তো ভুলে যাচ্ছেন যে বাংলাদেশের মানুষ শান্তি প্রিয়, আমার চাই না হত্যা, অরাজকতার, লুটপাট পিতা হারানোর শোক, সন্তান হারানোর শোক।
আমরা ভুলে যাচ্ছি যে বাংলাদেশের এক ধর্মের রাষ্ট্র নয় , সকল ধর্ম রাষ্ট্র সম্প্রীতি বাংলাদেশ। আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ন্যায়পরায়ণ শাসক তথা ক্ষমতার যথার্থ ব্যবহারকারী কিয়ামতের দিন আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় এবং সর্বাাধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত হবেন। আর অত্যাচারী শাসক আল্লাহর কাছে সর্বাধিক ঘৃণিত ও সর্বাধিক শাস্তিপ্রাপ্ত হবে। অধিকন্তু সে আল্লাহর দরবার থেকেও বহু দূরে অবস্থান করবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৭৯) কারো প্রতি অত্যাচার আল্লাহ নিজে পছন্দ করেন না। আর সেখানে ইসলাম নাম করে জামাত শিবির বিএনপি এর লোক যে ভাবে সংখ্যালঘু, আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী উপর অত্যাচার করছে খুন করছে তারা ইসলাম পথে হাঁটছে না কি ইসলামের নাম ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ হাসিল করছে।
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয় ডা. মোহাম্মদ ইউনুস একটা কথা বলেছেন যে “আমার উপর বিশ্বাস রাখেন, দেশ কারও উপর হামলা কোন হবে না “ তাহলে কেনো মরছে প্রতিদিন মানুষ , ভাঙ্গা হচ্ছে মাজার, ভাঙ্গছে মন্দির, নারী আজ নিরাপদ নয় , শিক্ষকরা অপমানিত হচ্ছে, বাংলাদেশে মানুষ নিরাপদ নয়। সংস্কারের ১ মাস পার হলো কিন্ত উপদেষ্টা প্রধান দেশের কোন দিকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। কারণ, যেদেশে আইনের মাধ্যমে নিরপরাধীদের শাস্তি আর অপরাধীদের মুক্তি দেওয়া হয় সেদেশে নিরপরাধীরাও আস্তে আস্তে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিহিংসা রাজনীতির পথে থেকে সরে না আসলে দেশের জনগন এটা বলতে দেখি হবে না যে আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য উপযুক্ত ছিলো। Ahsanul haque usama ছেলেটার হাতে ছুরি নিয়ে পোষ্ট করেছে যে খুন করেছে বলে গর্ববোধ করছে। কুমিল্লার দাউদকান্দিতে দিনদুপুরে মহিউদ্দিন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার পর ডান হাত কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ওলানপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মহিউদ্দিন পেশায় রঙমিস্ত্রি ছিলেন। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার ওলানপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। কেটে নেওয়া মহিউদ্দিনের বিচ্ছিন্ন হাতের অংশ নিয়ে হেঁটে যাওয়া এক যুবকের ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক হাতে চাপাতি আরেক হাতে মহিউদ্দিনের কাটা হাতের অংশ ঘোরাতে ঘোরাতে ওই যুবক হেঁটে যাচ্ছে। আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তিনদিন আগে বাবা হয়েছেন, কাল দুপুরে ফেসবুকে জানালেন। রাতে রাজশাহীর বিনোদপুর বাজার থেকে ওষুধ কিনে ফেরার পথে তাকে মেরে ফেলা হলো। ঠিক একইভাবে ১৪ বছর আগে মাসুদকে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছিল। একটি কৃত্রিম পা নিয়ে চলাফেরা করা মাসুদকে চিরতরে শেষ করে ফেলা হলো।
এই সকল মৃত্যু বা খুনিদের দেখে বোঝা যাচ্ছে ,জাতীয় স্বার্থেই আমাদের দল-মত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি না করে দেশ বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে একদল আরেক দলের উপর যারা জুলুম -নির্যাতন করছে তাদের এই সকল প্রতিহিংসাপরায়ণ বন্ধ করতে হবে । ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সব পর্যায়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। তাদের স্লোগান ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। ফলে তাদের মানবতার জীবনযাপন করতে হলে।এখন সময় এসেছে এসব বৈষম্যের অবসান ঘটানো। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি বন্ধ হোক।
Leave a Reply