মুমিন নিজে যেমন ভালো কাজ করতে ভালোবাসে, তেমনি অন্যকেও ভালো কাজে উৎসাহিত করে। কারণ আল্লাহর রাসুল (সা.) তাদের এই শিক্ষাই দিয়েছেন। পবিত্র হাদিস শরিফে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে, সে তার অনুসারীর সমান সওয়াব পাবে। অথচ অনুসরণকারীর সওয়াব কমানো হবে না। অন্যদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে, সে তার অনুসারীর সমান পাপে জর্জরিত হবে। তার অনুসারীর পাপ মোটেও কমানো হবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬০৯)
এ জন্য প্রকৃত মুমিনরা সর্বদা ভালো কাজে আত্মনিয়োগ করার চেষ্টা করে এবং অন্যকে ভালো কাজের দিকে আহ্বান করে। মুমিন কখনো একা একা জান্নাতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে না, বরং তারা তাদের অপর ভাইকে নিয়েই জান্নাতে যেতে চায়। আল্লাহভোলা মানুষদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সাধ্যমতো প্রতিটি নেক কাজে অন্যের সহযোগিতা করে, উৎসাহ দেয়।
আমাদের প্রিয় নবীজী তাঁর কথা ও কাজের মাধ্যমে অন্যকে ভালো কাজে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা উঁচু ও মহৎ কাজ এবং সৎ মানুষকে পছন্দ করেন এবং নিকৃষ্ট কাজ অপছন্দ করেন।’ (সুনানে তাবরানি, হাদিস : ২৮৯৪)
অন্যকে ভালো কাজের দিকে আহ্বান করা এই উম্মতের দায়িত্ব। কারণ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘বলুন, এটাই আমার পথ, আল্লাহর প্রতি মানুষকে আমি ডাকি জেনে-বুঝে, আমি এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ১০৮)
উল্লিখিত আয়াতে ‘যারা আমার অনুসরণ করেছে’ কাদের বোঝানো হয়েছে, তা নির্ধারণে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এতে সাহাবায়ে কিরামকে বোঝানো হয়েছে, যারা রাসুল (সা.)-এর জ্ঞানের বাহক। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কিরাম এ উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তিবর্গ। তাদের অন্তর পবিত্র এবং জ্ঞান সুগভীর। তাদের মধ্যে লৌকিকতার নাম-গন্ধও নেই। আল্লাহ তাআলা তাদের স্বীয় রাসুলের সংসর্গ ও সেবার জন্য মনোনীত করেছেন। তোমরা তাদের চরিত্র অভ্যাস ও তরিকা আয়ত্ত করো। কেননা তারা সরল পথের পথিক। কলবি ও ইবনে জায়েদ বলেন, এই আয়াত থেকে আরো জানা গেল, যে ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর অনুসরণের দাবি করে, তার অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে তাঁর দাওয়াতকে ঘরে ঘরে পৌঁছানো এবং কোরআনের শিক্ষাকে ব্যাপকতর করা। (বাগভি; কিওয়ামুস সুন্নাহ আল-ইসফাহানী, আল-হুজ্জাহ কী বায়ানিল মাহাজ্জাহ : ৪৯৮)
Leave a Reply