1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. hdtariful@gmail.com : Tariful Romun : Tariful Romun
  3. shohagkhan2806@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  4. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
  5. ranaria666666@gmail.com : Sohel Rana : Sohel Rana
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

ভাড়ায় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে প্রতারণা করছে ‘স্বপ্নধরা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০

রাজধানী ঢাকার অদূরে মহাসড়কের পাশে জমি ভাড়া নিয়ে গ্রাহকদের অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে হাউজিং কোম্পানি স্বপ্নধারা। প্রতারণার কৌশল বাস্তবায়নে চোখ ধাঁধানো বিলবোর্ড বসিয়ে আকর্ষণীয় অফারের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে এ কোম্পানি।

জানা গেছে, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশেই গড়ে উঠছে স্বপ্নধারা আবাসন প্রকল্প। আধুনিক শহরের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রকল্পের ম্যাপ আর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে আগামী ১০ বছরে ৫শ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় মাঠে নেমেছে স্বপ্নধারা। নিজস্ব কোন জমি না থাকলেও বার্ষিক চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়ে চোখধাঁধানো সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে আকর্ষণীয় দামে প্লট বিক্রির নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে স্বপ্নধারা।

স্বপ্নধরা আবাসন প্রকল্পে এককালীন মূল্য পরিশোধে বিশাল ছাড়, ফ্রি ডিনার সেট, স্ক্রাচ কার্ড ঘষলেই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় চমেৎকার বিজ্ঞাপন দিয়ে ঢাকা শহরের নামিদামি হোটেলে কয়েকদিন পর পর আবাসন মেলা দিয়ে শুরু করেছে ৫ লাখ গ্রাহকের নিকট সহজ কিস্তিতে প্লট বুকিংয়ের প্রক্রিয়া। এতে প্রলুব্ধ হয়ে ফাঁদে পা দিচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ।

শতাংশ প্রতি ৩ হাজার টাকা নির্ধারন করে ৪ কাঠা বা ৬ কাঠা সাইজের প্রতিটি প্লটের জন্য গ্রাহক প্রতি মাসিক কিস্তি নিচ্ছে ১৮ হাজার থেকে ৩০ হাজার। বছরে ২ লাখ ১৬ হাজার থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ১০ বছরে ২১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ৩৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।

এভাবে তাদের টার্গেটকৃত ৫ লাখ গ্রাহকের নিকট থেকে ৩০ সালের মধ্যে ৫শ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনায় কাজ করছে স্বপ্নধারা হাউজিং কোম্পানি। কিন্তু ১০ বছর পরে গ্রাহকদের কোথায় কিভাবে কোন প্লট বুঝিয়ে দেয়া হবে তা শুধু একমাত্র স্বপ্নধারাই জানে। কারণ গ্রাহকরা যেই ডুকমেন্টের উপরে নির্ভর করে স্বপ্নধারাকে টাকা দিচ্ছে তা এক হাজার বছরেও ফেরত পাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ী কর্মকর্তারা বলছেন এই নিয়মে প্লট পাবেনা শতকরা ৯৮ শতাংশ গ্রাহক।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সবুজ নগরায়ন ও আবাসন ব্যবস্থা সৃষ্টি করছে স্বপ্নধারা। ঢাকা-পদ্মা সেতু মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠছে স্বপ্নধারা আবাসন প্রকল্প। প্রকৃতি ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় স্বপ্ন ধারা আবাসন প্রকল্পে থাকছে আধুনিক জীবন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা। সকল প্রকার নাগরিক সুবিধার পাশাপাশি থাকছে শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ও থিমপার্ক। এছাড়াও থাকছে স্কুল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, এমিউজমেন্ট পার্ক, শপিংসেন্টার, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, আকর্ষনীয় ব্রীজ ও লেক, অফিস-বাণিজ্যিক স্থান, সিনেপ্লেক্স, কনভেনশনসেন্টার, মসজিদ-মন্দির-গীর্জা সহ পরিবেশ বান্ধব জীবন ব্যাবস্থা।

টেলিভিশন ও পত্রিকার পাতায় লোভনীয় এসব বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারন জনগনকে প্রলুব্ধ করে আবাসন মেলার আয়োজন করে স্বপ্নধারা। মেলায় দীর্ঘমেয়াদী ও সহজ কিস্তির মাধ্যমে কোন প্রকার ডাউনপেমেন্ট ছাড়াই প্লট বুকিয়ের সুবিধা প্রদান করেছে।

যারা এই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিয়ে প্লট বুকিং নিয়েছে তারা অদুর ভবিষ্যতে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করছেন সচেতন জনগন। কারণ কোম্পানীর দেয়া টাকা গ্রহণের রশিদ দিয়ে কোন সময়ই টাকা ফেরত পাবেনা। আর কোম্পানীও প্লট বা টাকা ফেরত দিতে পারবে না।

সুত্র জানায়, ২০১২ সালের শেষ দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি এলাকার আশপাশের কিছু কৃষি জমি ভাড়া নিয়ে ঐ জমিতে স্বপ্নধারা আবাসন কোম্পানি বিশাল সাইজের বেশ কিছু সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেন। কোন অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও এই কোম্পানি কিভাবে রংবেরঙের সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় চটকদার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করছে তাই নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন।

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন কিংবা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কারো অনুমতি নেই। নেই আবাসন প্রকল্প করার পর্যাপ্ত জমি। তবুও শুধুই প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য আবাসিক হোটেলে একক আবাসন মেলার আয়োজন করে। আর এই মেলার নামে নানা রকম বিজ্ঞান প্রচার করে।

রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা এক নম্বর গুলশানের ৮ নম্বর রোডের হাউজ নং ১/বি এর গ্রিন স্কয়ারের ষষ্ঠ তলায় একটি ভাড়া অফিসে পরিচালিত হয় স্বপ্নধরার কার্যক্রম। শ্রীনগর উপজেলার স্থানীয় জনসাধারণ প্রতিষ্ঠানটির প্রতারণার বিরুদ্ধে গত ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ বিক্ষোভ করে।

এই সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকা গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ হয়। পরে প্রকল্প নামধারী এই কোম্পানির বিশাল সাইনবোর্ডগুলো শ্রীনগর থানার পুলিশ ভেঙ্গে ফেলে। ঐদিন শ্রীনগর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা সনজয় চক্রবর্তী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দা নুর মহল আশরাফী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাইনবোর্ডটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন।

শ্রীনগরে স্বপ্ন নিয়ে এই কোম্পানির অভিনব প্রতারণা, অনুমোদন ছাড়াই প্লট বিক্রির বাহারি বিজ্ঞাপন নিয়ে মানুষের ক্ষোভের শেষ নেই। শ্রীনগরের ভূমিরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক বাবু নন্দলাল জানান, বাপ-দাদার চৌদ্দ পুরুষের ভিটামাটি রক্ষায় সরকারের কার্যকরী উদ্যোগ প্রয়োজন।

অথচ এ ঘটনার দুই বছর পরে মতিঝিল হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনালে স্বপ্নধারা প্রকাশ্যে আবাসন মেলা করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা শুরু করে। একই বছর রাজধানীর বংশালস্থ নর্থ সউথ রোডের আল-রাজ্জাক হোটেলে আবাসন মেলার আয়োজন করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে স্বপ্নধারা আবাসন প্রকল্প ।

গত সেপ্টেবর ২০১৭ হোটেল ঈশা খায় এবং ডিসেম্বরের শেষ দিকে মতিঝিল হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনালে জমকালো মেলার আয়োজন করে স্বপধারা। আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিহ্যাব অফিসে যোগাযোগ করে জানা গেছে স্বপ্নধারা নামে কোন প্রতিষ্ঠান তাদের সংগঠন নয়। এই প্রতারকদের প্রতারণার বন্ধ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

মুন্সীগঞ্জ পরিবেশ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, ‘স্বপ্নধারা’ পরিবেশ ছাড়াপত্র গ্রহণতো দূরের কথা আবেদন পর্যন্ত করেনি। তবে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না-এ ব্যাপারে সদুত্তর না দিয়ে বলেন, মাটি ভরাট শুরু করলে ব্যবস্থা নেব।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বপ্নধরার আবাসন প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানান, স্বপ্নধরার আবাসনের নিজস্ব জমির পরিমান ৫ শতাংশের কম। যেসব জমির উপর সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে তার শতকরা ৯৫ ভাগই অন্যের নিকট থেকে ভাড়া নেয়া হয়েছে। কারন আবাসন কল্প বানাতে গেলে যে পরিমান জমি প্রয়োজন তা ক্রয় করার মতো মুলধন টাকা স্বপ্নধরা কোম্পানীর নেই।

এই জন্য কোম্পানীর পরিচালক জমি ভাড়া নিয়েছে।
কোম্পানীর নিজস্ব কাগজে টাকা জমার রশিদ দিয়ে সহজ কিস্তিতে জনগনের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। লোকজন প্লট পাবে কিনা বলতে পারবো না। তবে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে কোম্পানীর পরিচালকরা পালাবে এটা শতভাগ নিশ্চিত।

চলরি বছরবে মধ্যেই স্বপ্নধরা ৫ লাখ গ্রাহক সংগ্রহ করবে এমন পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। ৫ লাখ গ্রাহকের নিকট থেকে মাসে কিস্তি আসবে ৯ কোটি টাকা। এখন টেলিভিশনে আর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলে কয় টাকা খরচ হবে। এটাই মুলত স্বপ্নধরার কারিশমা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:৫৮
  • ১২:৪২
  • ৪:২৬
  • ৬:০৬
  • ৭:২৩
  • ৭:১৩