ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার দুই বারের মেয়র এবিএম. অনিসুজ্জামান আনিছ। গত দুইবার আওয়ামী লীগের সমর্থন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রাথী হয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়েই গলায় জড়িয়েছিলেন বিজয়ের মালা। নানা কারণেই এবারও আওয়ামী লীগের সমর্থন পাননি তিনি। সেই ‘তেজ’ এখন দেখাচ্ছেন নির্বাচনী মাঠে। তার প্রতাপে একেবারে নাজাহাল পৈার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিআরডিবির চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ সরকার। ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই ‘রংবাজ’ হয়ে উঠছেন তিনি।
বিভিন্ন সময় আ. লীগ বিদ্রোহী মেয়র এবিএম. অনিসুজ্জামান আনিছের সমর্থকদের হামলার শিকার হতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর অনুসারীদের। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকরা হতাশা প্রকাশ করেছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকরা প্রচারে পদে পদে বাধাগ্রস্থ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সাবেক মেয়র বর্তমান বিদ্রোহী প্রার্থী ত্রিশাল পৌর নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভীতি ছড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন দলের এই বিদ্রোহী প্রার্থী। তার দাপটে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এক রকম অসহায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী। দলীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে নৌকার মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় পদে-পদে বাধা সৃষ্টি করছেন। দেখা যাচ্ছে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের মধ্যে কয়েকজন তাকে মদদ দিচ্ছেন। বিদ্রোহী প্রাথীর এমন কর্মকান্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে এসব পরিস্থিতি কঠোরভাবে মোকাবেলা করা না গেলে সামনে বড় ধরনের বিপদের সম্মুখে পড়তে হতে পারে দল, বলে মনে করছেন ভোটাররা। ত্রিশাল পৌর নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর থেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে আধিপত্য দেখান। বেপরোয়া এই প্রার্থীর আচরনে ভোটাররা চিন্তিত।
সাবেক এই মেয়রের গত পাঁচ বছর এলাকায় বাহিনী নিয়েও ঘোরাফেরা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার সম্পদের উৎস অনুসন্ধানে নির্বাচনের পুর্বেই মাঠে নেমেছে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে দূর্নীতি দমন কমিশনে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো: মামুন অর রশিদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফারুক আহম্মেদ। তিনি জানান, ইতিমধ্যে অভিযোগ তদন্তে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
ওই অভিযোগে জানা যায়, মেয়র আনিস অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে সরকারি খাস জমি দখল করে মার্কেট নির্মান, সুতিয়া নদী দখলের সহায়ক হয়ে রায়মনি আকিজ কোম্পানীর ভূমির জাল দলিলে সহযোগীতা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ময়মনসিংহ নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে দশ তলা বিলাশ বহুল মেয়র টাওয়ার। ত্রিশালের চেলেরঘাটে ৮ একর জমির উপর গড়ে তোলেছেন পেপার মিল। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নামে-বেনামে কিনেছেন শত কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২০একর জমি। নিজ নামে রয়েছে প্রায় ১০টি ট্রাক ও বিলাস বহুল গাড়ী। পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকান্ড নয়ছয় করে ঠিকাদারের যোগসাজসে হাতিয়ে নিয়েছেন আরো প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এছাড়াও অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বর্হিভূত ভাবে অর্জন করেছেন শত শত কোটি টাকার সম্পদ। একজন মেয়র কিভােব এতো সম্পেদর মালিক বনে যান এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্য নানা প্রশ্নের জম্ম দিয়েছে।
Leave a Reply