ময়মনসিংহের নান্দাইলের পল্লীতে গত প্রায় পাঁচ মাস আগে ভাইকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণ দেয় স্কুলছাত্রী ইতি আক্তার। এ ঘটনায় পরদিন ১১ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা হলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে না পারলেও জামিন চাইতে গিয়ে সকলেই কারাগারে যায়। প্রায় দুই মাস পর প্রধান অভিযুক্ত ছাড়া সকলেই জামিনে এসে মামলা প্রত্যহারের হুমকি দিয়ে আসছিল বাদীকে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার রাতের কোনো একসময় নিহত ইতি আক্তারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে হত্যাকারীরা। এ ঘটনায় আজ শনিবার হত্যায় অভিযুক্ত জামিনে আসা ৯ আসামিকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় ইতির ভাই।
জানা যায়, ইতি আক্তার হচ্ছে উপজেলার রাজগাতি ইউনিয়নের বনাটি বাজু পাড়া গ্রামের মো. সাহেত আলী ভুইয়ার মেয়ে। গত বছরের ৪ জুলাই সকালে প্রতিবেশী একদল সন্ত্রাসী ইতিদের ফসলি জমি দখল করতে গেলে বাধা দেয় ইতির বাবা ও ভাইয়েরা। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় চিৎকারের শুনে ইতি দৌড়ে যায়। দেখতে পায় সন্ত্রাসী রিপন মিয়া একটি বল্লম দিয়ে ইতির ভাই মো. শহীদ মিয়াকে ঘা দিতে উদ্যত। এ সময় ইতি আক্তার ভাইয়ের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়লে ওই বল্লমের ঘা পড়ে ইতির বুকে। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই ইতির মৃত্যু হয়। ইতির এই ত্যাগের ঘটনাটি তখন এলাকায় ব্যাপক প্রচার হয়। এ নিয়ে কালের কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় জীবন দিয়ে ভাইকে বাঁচানো বোন ‘বড় আদরের ছোট বোন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।
ইতির বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে খবর পেয়ে শনিবার গিয়ে দেখা যায় বসতঘরের লাগোয়া একটি ঘরে গত শুক্রবার রাতের কোনো একসময় আগুন দেওয়া হয়। পরে আগুন জ্বলতে থাকলে খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে উঠে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ফলে অল্পের জন্য বড় ঘটনা থেকে বেঁচে যায়।
নান্দাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হাসেম আগুন দেওয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, রবিবার তদন্তের জন্য একজনকে পাঠানো হবে।
Leave a Reply