প্রয়াত পপতারকা মাইকেল জ্যাকসনের তত্ত্বাবধায়কেরা টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এইচবিওর বিরুদ্ধে করা মামলা জিতেছেন।জ্যাকসন তত্ত্বাবধায়কদের দাবি, বহু বছর আগে মীমাংসিত মিথ্যা এক ঘটনাকে পুনরায় সামনে এনে চ্যানেলটি জ্যাকসনের সঙ্গে চুক্তি ভেঙেছে।চুক্তিভঙ্গের দায়ে টেলিভিশন চ্যানেল এইচবিওর বিরুদ্ধে ১০ কোটি মার্কিন ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৪৮ কোটি টাকা) মানহানির মামলা করেছিল মাইকেল জ্যাকসনের তত্ত্বাবধায়কেরা।এইচবিও নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’–এ জ্যাকসনকে শিশু যৌন হেনস্তাকারী হিসেবে দেখানো হয়।গত সোমবার আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন।
১৯৯২ সালে ‘বুখারেস্ট: দ্য ডেঞ্জারাস ট্যুর’ কনসার্টটি প্রচারের আগে এইচবিওর সঙ্গে মাইকেল জ্যাকসনের একটি চুক্তি হয়। চুক্তির একটি ধারা ভেঙে এইচবিও জ্যাকসনকে নিয়ে বিতর্কিত প্রামাণ্যচিত্র ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’ নির্মাণ ও প্রচার করে।২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে তথ্যচিত্রটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়।
এক প্রতিবেদনে ভ্যারাইটি জানিয়েছে, এইচবিও এই মামলার বিরোধিতা করে আপিল করে জানিয়েছিল, যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেটি পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক। শুধু তা–ই নয়, জ্যাকসন তত্ত্বাবধায়কেরা যৌন নিগ্রহের শিকার শিশুদের মুখ বন্ধ করে রেখেছেন। কিন্তু এইচবিওর করা ওই আপিল গতকাল সোমবার আপিল বিভাগের নবম সার্কিট কোর্টের তিন বিচারক খারিজ করে দিয়ে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।
গত বছর নিম্ন আদালত মাইকেল জ্যাকসন তত্ত্বাবধায়কদের অভিযোগটি সালিসের জন্য আমলে নিয়েছিলেন। তাদের ভাষ্যমতে, এই প্রামাণ্যচিত্রে পপস্টার মাইকেল জ্যাকসনকে হেয় করা হয়েছে। এখানে জ্যাকসনের মতো পাবলিক ফিগারকে অবজ্ঞাও করা হয়েছে।
জ্যাকসনের তত্ত্বাবধায়কেরা ৫৩ পৃষ্ঠার ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, তথ্যচিত্রটি অপপ্রচারমূলক ও একপেশে। এক পক্ষের বক্তব্যের ভিত্তিতে নির্মিত এ তথ্যচিত্র শিল্পীর সম্মানহানির উদ্দেশ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি কোনো সত্যতাও নিশ্চিত করা হয়নি। মাইকেল জ্যাকসনের অ্যাটর্নি হাওয়ার্ড উইজম্যান জানিয়েছিলেন, এইচবিওকে প্রমাণ করতে হবে যে সার্বিক বাস্তবতার নিরিখে সত্য ও ভারসাম্য রেখেই তারা তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছে।
অন্যদিকে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, মামলা-মোকদ্দমায় তারা দমছে না, এমনকি তথ্যচিত্র প্রচার বন্ধ করেনি। যথাসময়েই চার ঘণ্টার এ তথ্যচিত্র দুই পর্বে প্রচার করে। কিন্তু শেষে মামলা হেরেই গেল এইচবিও কর্তৃপক্ষ।
মাইকেল জ্যাকসনের কাছে যৌন নির্যাতনের শিকার এক কিশোরের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০০৩ সালে পুলিশ তাঁর ক্যালিফোর্নিয়ার খামারবাড়ি ‘নেভারল্যান্ড’-এ তল্লাশি চালিয়েছিল। সেই খামারবাড়ির নামানুসারে তথ্যচিত্রের নামকরণ করা হয়েছে। জ্যাকসনের তত্ত্বাবধায়কদের দাবি, তথ্যচিত্রে ওয়েড রবসন ও জেমস সেফচাককে এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে জ্যাকসনের ঘনিষ্ঠ অন্য সবাই সেখানে রীতিমতো উপেক্ষিত। জ্যাকসন কখনোই শিশুদের সঙ্গে বাজে আচরণ করতেন না। বরং সব সময় তিনি তাদের আদর করতেন।
কথিত আছে, মাইকেল জ্যাকসন তাঁর জীবদ্দশায় ৭ ও ১০ বছর বয়সী দুই বালককে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। তাঁরা এখন ৩০ বছরের যুবক। তাঁদের ভাষ্যের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে ওই তথ্যচিত্র। এ দুজনের একজন ওয়েড রবসন এখন একজন কোরিওগ্রাফার। ব্রিটনি স্পিয়ার্সসহ নামী সব শিল্পী নিয়ে কাজ করেন তিনি।
Leave a Reply