সকালের আকাশটা ছিল আজ একেবারেই গুমোট। বৃষ্টি হবে, নাকি মেঘ কেটে গিয়ে দেখা দেবে কার্তিকের সূর্য- তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল। কিন্তু অচিরেই দূর হয় সমস্ত অস্পষ্টতা। খবরটি আবহাওয়া অধিদপ্তরই দেয় যে, আজও বৃষ্টি হবে।
খবরের সত্যতা প্রকাশ পায় দুপুরের খানিকটা আগেই। রাজধানী ঢাকায় আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে ঝরোঝর ঝরোঝর। যেন শ্রাবণের ধারা। এর আগেই বৃষ্টির দেখা মেলে খুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। পাবনা, রাজশাহী, ঈশ্বরদীসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকেও খবর আসতে থাকে ভারি বৃষ্টিপাতের।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের খবর অনুযায়ী, গতকাল বুধবার (২১ অক্টোবর) পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়। পরে সেটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নেয়। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, সমুদ্রবন্দর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে আজ। সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে গতকালও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৭১ মিলিমিটার। ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৬ মিলিমিটার। আবহাওয়া অফিসের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি বুধবার সকালে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হবে।
আগামী শুক্র-শনিবারের দিকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে কিনা বা কোন দিকে অগ্রসর হবে- তা এখনই বলা যাবে না।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সেইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিস বলছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। আজ বৃষ্টির প্রবণতা আরো বাড়বে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে আজ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশির ভাগ জেলায় বৃষ্টি ঝরবে। কোথাও কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, গত ১০ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছিল। সেটি পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ভারতের ওড়িশায় স্থলভাগ অতিক্রম করে। তখন অবশ্য কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অবশ্য এই মাসে একটি ঘূর্ণিঝড়ের খবর আগেই দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তখন তার নাম হবে ‘গতি’।
Leave a Reply